11709

03/29/2024 অপপ্রচারের জন্যও মামলা হতে পারে : তথ্যমন্ত্রী

অপপ্রচারের জন্যও মামলা হতে পারে : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

২ এপ্রিল ২০২৩ ২০:৩৯

‘ভাত জোটে না’ লেখায় প্রথম আলোর সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে— এমন অভিযোগ করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘এই যে অপপ্রচার, এটিও অপরাধ। এজন্য মামলাও হতে পারে।’

রোববার (২ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে বাংলাদেশ সংবাদপত্র পরিষদের (বিএসপি) সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এ সময়ে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টুও উপস্থিত ছিলেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের দেশ ও দেশের বাইরে থেকে কেউ কেউ বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি দেখতে পায় না। বরং এটিকে নিয়ে কটাক্ষ করে। দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত ঘটনা হলো যে আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে আড়াল করা হয়।

কোনো কোনো সংবাদমাধ্যমে দেখতে পাই, কোনো একটি নেতিবাচক সংবাদ হলে সেটিকে যেভাবে ফলাও করে প্রচার করা হয়, দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির প্রশংসা কিংবা বিভিন্ন সূচকে যখন আমরা এগিয়ে যাই, সেটি সেভাবে প্রচার করা হয় না। যেটি সমীচীন নয়।’

আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেক সময় খারাপ সংবাদ গুরুত্ব দিয়ে ছাপানো হয়। ভালো সংবাদ পরিবেশন করা হয় না। ২৬ মার্চ আমাদের মহান স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস। সেই দিন মহান জাতীয় স্মৃতিসৌধের সামনে একটি শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে যে ঘটনা ঘটানো হয়েছে, তাকে দিয়ে যে বক্তব্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে, সে কিন্তু সেই বক্তব্য দেয়নি।

“তারপর একজন দিনমজুরের বক্তব্য ছাপানো হয়েছে, ‘স্বাধীনতা দিয়ে কী হবে, যদি খাইতে না পারি’। এভাবে স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করা হয়েছে। একই সঙ্গে একটি শিশুর ছবি ব্যবহার করে তাকে নিগ্রহ করা হয়েছে। দিনমজুরের বক্তব্য, ছবি শিশুর। তারা অনলাইনে সেটি প্রকাশ করেছে।”

‘তারা (প্রথম আলো) এখন পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। ভুল স্বীকার করে পত্রিকায় কোনো বিবৃতি প্রকাশ করা হয়নি। বরং সংশ্লিষ্ট মিডিয়া হাউস থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের সাংবাদিকদের টেলিফোন করা হয়েছে, দেনদরবার করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ে লেখার কারণে এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

দ্রব্যমূল্য নিয়ে সব টেলিভিশনে প্রতিবেদন হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর সংবাদমাধ্যমগুলোতে দ্রব্যমূল্য বেড়ে যাওয়া নিয়ে রিপোর্ট হচ্ছে— উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এজন্য তো কোনো মামলা হয়নি। দ্রব্যমূল্য বাড়লে কিংবা কমলে রিপোর্ট হবে, খুবই স্বাভাবিক। জনগণের কষ্ট হলেও খবরে আসবে। সেজন্য কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’

‘ওই খবরে স্বাধীনতার কটাক্ষ করা হয়েছে, শিশুকে নিগ্রহ করা হয়েছে। জাতিসংঘের শিশু সনদ লঙ্ঘন করা হয়েছে।’

এখন প্রশ্ন উঠেছে, গ্রেপ্তার কেন রাতে করা হয়েছে। মামলা হওয়ার পরই গ্রেপ্তার হয়েছে। রাত ৪টায় অনেক সংসদ সদস্যকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দেশের কয়েক দফা মন্ত্রী ছিলেন, বড়ো রাজনীতিবিদ, তাদেরও রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তখন তো কোনো প্রশ্ন আসেনি? সবাইকে রাতে গ্রেপ্তার করা যাবে, আবার সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না— এমন কোনো আইন নেই। দেখতে হবে, কোনো নির্যাতন করা হয়েছে কি না; নির্যাতনের কোনো অভিযোগ তো আসেনি— বলেন হাছান মাহমুদ।

আজ দেশের সব মানুষ এ বিষয়ে মুখ খুলেছে, প্রতিবাদ করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট পত্রিকা ক্ষমা চায়নি। বরং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অপপ্রচার চালাচ্ছে। এ অপপ্রচারও একটি অপরাধ। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ে লেখার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। এটার জন্য কেউ মামলা করে কি না, সেটাও দেখার বিষয়।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]