মুন্সীগঞ্জের টংগিবাড়ী উপজেলায় রাতের আঁধারে দুই মাসের শিশুকে কৃষি জমিতে ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে মায়ের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা করা হয়েছে। শিশুটির দাদি লাইলী বেগম বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২ মে) দুপুরে মুন্সীগঞ্জ আদালতে এ মামলা করেন।
মুন্সীগঞ্জ আমলি আদালত-৪ এর বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল ইউসুফ মামলাটি আমলে নিয়ে ৯ কার্যদিবসের মধ্যে ঘটনার বিষয়ে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য টংগিবাড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
ভুক্তভোগী শিশুর নাম রাফসান। মামলায় শিশু রাফসানের মা জুয়েনা বেগমসহ আরও দুইজনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার বাদী টংগিবাড়ী উপজেলার ছাতকচর গ্রামের রতন মোল্লার স্ত্রী।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৯ জানুয়ারি ছাতকচর গ্রামের রতন মোল্লার ছেলে রাসেল মোল্লার সঙ্গে উপজেলার মিতারা গ্রামের জসিম খানের মেয়ে জুয়েনা আক্তারের (১৯) বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে জুয়েনা আক্তারের সঙ্গে স্বামীর বিরোধ চলে আসছিল। গত ৩ ফেব্রুয়ারি ছেলে সন্তান জন্মগ্রহণের পর থেকে জুয়েনা আক্তারের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন দেখা দেয়।
বিষয়টি তার বাবা-মাকে অবহিত করলেও তারা কোনো কর্ণপাত করেননি। গত ২২ এপ্রিল রাত ২টা হতে ভোর ৪টার মধ্যে জুয়েনা আক্তার ঘরের আলমারি থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণালংকার ও তিনটি গরু বিক্রির চার লাখ টাকাসহ শিশু সন্তানকে নিয়ে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান।
পরে শিশু রাফসানকে বাড়ির অদূরে কৃষি জমির মধ্যে ফেলে জুয়েনা আক্তার পালিয়ে যান। এ সময় জুয়েনা আক্তারের বাবা-মা তাকে সহযোগিতা করে বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে শিশুর কান্না শুনে ভোরে ওই এলাকার জীবনী নামে এক নারী শিশুটিকে উদ্ধার করেন। শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন থাকায় চিকিৎসার ব্যস্ততার কারণে আজ মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলা করা হয়।
এ ব্যাপারে শিশুটির বাবা রাসেল মোল্লা বলেন, আমার স্ত্রী জুয়েনা আক্তার বিভিন্ন লোকের সঙ্গে ফোনে কথা বলতো। গত ২২ এপ্রিল গভীর রাতে আমাদের না জানিয়ে আমার ঘরের আলমারি থেকে পাঁচ ভরি স্বর্ণ ও গরু বিক্রির চার লাখ টাকাসহ আমার দুই মাসের ছেলেকে কৃষি জমিতে ফেলে সে চলে যায়। আমার ছেলে এখনো মারাত্মক অসুস্থ। আমি বিচার চাই।
অভিযোগকারী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হালিম হোসেন জানান, ঘটনার বিষয়ে আজ আদালতে মামলা করা হয়েছে। আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে ৯ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য টংগিবাড়ী থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছেন।