পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ডাক বাংলো কাম সাইক্লোন শেল্টার ভবনের ছাদ ও দেয়াল থেকে প্রতিনিয়ত খসে পড়ছে পলেস্তারা। পিলার ও ছাদের রডগুলো বের হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জরাজীর্ণ এই ভবনটি। ফাটল ধরেছে ভবনের দেওয়ালগুলোতে।
ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনের পাশে চলে লতাচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও খেলাধুলা। তাই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিটি মুহূর্ত কাটাতে হয় আতঙ্ক এবং ঝুঁকিতে। যেকোনো সময় ছোটখাটো প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ঘটে যেতে পারে বড় কোনো দুর্ঘটনা।
ভবনটি বেশ পুরোনো মেরামত অযোগ্য এবং ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ইতোপূর্বে এটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনটির দুই দিকেই রয়েছে বিদ্যালয়ের ভবন এবং খেলার মাঠ। অপর দিকে রয়েছে কুয়াকাটার ব্যস্ততম দুটি রাস্তা। এর মধ্যে রয়েছে কুয়াকাটা-পটুয়াখালী মহাসড়ক। ঠিক রাস্তার অপর দিকেই রয়েছে আবাসিক হোটেল, রেস্টুরেন্ট এবং বিভিন্ন ছোট বড় দোকান। তারা সবাই রয়েছেন আতঙ্ক ও ঝুঁকিতে।
৬০নং লতাচাপলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. জাকির হোসেন বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ের পাশে থাকা এলজিইডি ডাক বাংলো ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমার বিদ্যালয়ের ৪৩৭ জন শিক্ষার্থীরা যেকোনো সময় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনার শিকার হতে পারে। তাই দুর্ঘটনা ঘটার আগেই যেন এই ভবনটি সরানো হয় আমরা সেই দাবি করছি।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী মেহুরেন্নেসা মাইশা বলেন, আমাদের খেলার মাঠের কোলঘেষে এই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে। আমরা খেলাধুলা করতে এমনকি বিদ্যালয়ে আসতেও ভয় পাই। কারণ পাশে থাকা ভবনটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাই কর্তৃপক্ষের কাছে আমাদের আবেদন খুব তাড়াতাড়ি যেন ভবনটি সরানো হয়।
বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি এম এ মান্নান চৌধুরী বলেন, এই ভবনটি আরও আগেই অপসারণ করা উচিত ছিল। ভবনটি এতটাই ঝুঁকিপূর্ণ যে এর দিকে তাকাতেও ভয় হয়। আমাদের জোর দাবি খুব দ্রুত এই ভবনটি অপসারণ করা হোক। না হয় বড় ধরনের কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হাওলাদার বলেন, কুয়াকাটার প্রথম দিকের স্থাপনাগুলোর মধ্যে এটি একটি। এই ভবনটি অনেক পুরোনো এবং বর্তমানে খুব ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ভবনটি এমন একটি জায়গায় রয়েছে যেখানে আশপাশের স্কুল, রাস্তা, হোটেল ও দোকান রয়েছে। তাই বড় ধরনের কোনো বিপর্যয় ঘটার আগেই যেন ভবনটি এলজিইডি কর্তৃপক্ষ অপসারণ করে সেই অনুরোধ করছি।
কলাপাড়া উপজেলা এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী কাজী ফয়সাল বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যবস্থাপনা কমিটি কর্তৃক প্রাপ্ত পুরাতন ভবনের রেজুলেশনের ভিত্তিতে জেলা ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে পরিত্যক্ত ভবন অপসারণের প্রস্তাব ইতোপূর্বে পাঠানো হয়েছে। এখন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার অনুমতি পাওয়া গেলে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সঙ্গে সঙ্গে তা অপসারণ করা হবে।