1353

05/10/2024 এখনও এনজিওনির্ভর কৃষিঋণ

এখনও এনজিওনির্ভর কৃষিঋণ

বিশেষ সংবাদদাতা

২৬ এপ্রিল ২০২১ ১৭:০০

করোনা মহামারিতে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাত যখন গতি হারিয়েছে, তখনও সচল কৃষি খাত। খাদ্য ও বিভিন্ন কৃষিপণ্যের উৎপাদনের ধারাবাহিকতা থাকায় নিশ্চিত করা যাচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা। কিন্তু সেই কৃষি খাতেই সরকার ঘোষিত ৪ শতাংশ সুদে প্রণোদনার ঋণ বিতরণ ছিল ধীরগতির। আর চলতি অর্থবছরে কৃষি ও পল্লীঋণ নীতিমালায় ঘোষিত ২৬ হাজার ২৯২ কোটি টাকার বিতরণ কতটা কৃষকবান্ধব উপায়ে হচ্ছে সে প্রশ্ন আছে মাঠের বাস্তবতায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কৃষি ও পল্লী ঋণ এখনো অনেকাংশে এনজিও নির্ভর, যেখানে ২৭ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিতে হয় গ্রাহকদের। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ঋণ বিতরণ ব্যবস্থার জটিলতা দূর করে সরাসরি ব্যাংকের অংশগ্রহণ না বাড়ালে কৃষকরা কম সুদে ঋণের সুফল পাবেন না। বাংলাদেশ ব্যাংকও বলছে, এজেন্ট ও উপশাখার মাধ্যমে কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে তাদের।

ব্যাংক থেকে ঋণগ্রহণের ভোগান্তি ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের অভাবেও অনেক কৃষক লোন নিতে ব্যাংকমুখী হন না। এ বিষয়ে বাহার উদ্দিন নামে এক কৃষক বলেন, কৃষি ব্যাংকে যদি লোন করতে যাই তবে কাগজপত্র তো দেওয়া লাগেই, দিনের পর দিন ঘোরা লাগে। ঘুষ-টুষও দেওয়া লাগে। যদিও ওখানে সুদের হার কম, কিন্তু খুব ভোগান্তি পোহাতে হয়।

চলতি অর্থবছর বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলোকে কৃষি ও পল্লীঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। বরাবরের মত যার ৭০ শতাংশই বিতরণের সুযোগ দেয়া হয়েছে এনজিওগুলোকে। যেখানে সুদের হার ব্যাংকের ৮ শতাংশের তুলনায় কয়েক গুণ।

এনজিও লোন নেওয়াতে কেন আগ্রহে, সে বিষয়ে এক কৃষক বলেন, ব্যাংক তো আমাদের লোন দেয় না। তাই এনজিও সুদের ওপর লোন নিতে হয়।

অপর এক কৃষক বলেন, এনজিও থেকে আমরা ১০ লাখ টাকা নিতে চাইলে ১০ লাখই পাই। আমাদের কোনো কাগজপত্র লাগে না। তবে ১০ লাখ টাকায় ২ লাখ টাকা সুদ দিতে হয় বলে জানালেন ওই কৃষক।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ব্যাংকিং চ্যানেলে গেলে সুদ কম। কিন্তু যে এলাকায় ব্যাংক নেই, সেসব এলাকায় তো এই সুযোগ দেওয়াও যাচ্ছে না। সেখানে এজেন্ট ব্যাংকিং এর সমাধান হতে পারে। এটা আমাদের বিবেচনায় আছে।

অর্থনীতিবিদ ড. আহসান হাবিব বলেন, এনজিও ঋণের সুদ ২৪ থেকে ২৭ শতাংশের মধ্যে ওঠানামা করে। যখন আপনি এজেন্ট ব্যাংক দিয়ে কমসুদে ঋণ দেবেন, তখন কিন্তু মার্কেটে প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে। তখন এনজিওকে সুদের ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হবে, এমনিতেই সুদের হার কমিয়ে আনতে হবে।

প্রসঙ্গত, গত অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় প্রায় ৬ শতাংশ কম বিতরণ হয় কৃষি ও পল্লী ঋণ। যেখানে সুবিধাভোগী ছিল মাত্র ৩০ লাখ ৬৭ হাজার কৃষক

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]