নৌবাহিনীর কর্মকর্তাকে মারধরের মামলায় ঢাকা-৭ আসনের সাংসদ হাজী সেলিমের ছেলে ইরফানের ব্যক্তিগত সহকারী এবি সিদ্দিক দিপুকে (৪৫) গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গতকাল সোমবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এবি সিদ্দিক দিপু মামলার এজাহারভুক্ত ২ নম্বর আসামি। তিনি হাজী সেলিমের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মদিনা গ্রুপের প্রটোকল অফিসার।
আজ মঙ্গলবার সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) রমনা বিভাগের উপকমিশনার এইচ এম আজিমুল হক তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এ বি সিদ্দিক ওরফে দিপুকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তার আগে গতকাল এই মামলায় গ্রেপ্তার হন-ইরফান সেলিম, তার দেহরক্ষী মো. জাহিদ ও গাড়িচালক মিজানুর রহমান। ইরফান ও তার তিন সহযোগীর বিরুদ্ধে গতকাল সকালে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় মামলাটি করেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান।
গত ২৫ অক্টোবর রাতে স্ত্রীকে নিয়ে মোটরসাইকেলে বাসায় ফিরছিলেন নৌবাহিনীর কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহম্মেদ খান। সংসদ সদস্যের স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ওই গাড়িতে ছিলেন হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান এবং তার লোকজন। ওয়াসিফ নিজের পরিচয় দিয়ে গাড়িটিকে থামতে ইশারা করেন ও কথা বলতে চান। তখন তাকে মারধর করে রক্তাক্ত করেন ইরফান ও তার লোকজন।
পরে সোমবার সকালে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন ওয়াসিফ। এরপর শুরু হয় পুলিশ ও র্যাবের তৎপরতা। গতকাল সকালে ধানমন্ডি থানা-পুলিশ জানায়, ইরফানের গাড়িচালক মিজানুর গ্রেপ্তার হয়েছেন। গতকালই আদালত তাকে একদিন রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দিয়েছেন।
এরপর দুপুর সাড়ে ১২টায় র্যাব পুরান ঢাকার বড় কাটরায় হাজী সেলিমের বাড়িতে অভিযান শুরু করে। সেখান থেকে উদ্ধার করা হয় অস্ত্র, মাদক, দুরবিন, ওয়াকিটকি, ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সি সেটসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র। পরে একই এলাকায় আশিক টাওয়ারে পৃথক আরেকটি ভবনে অভিযান চালায় র্যাব।
দিনব্যাপী অভিযানকালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত মাদক রাখার দায়ে ইরফান সেলিমকে এক বছর কারাদণ্ড দেন। আর অবৈধ ওয়াকিটকি রাখার দায়ে দেন ছয় মাসের কারাদণ্ড। দুই মামলায় মোট দেড় বছর সাজা হয়েছে তার।
ইরফানের দেহরক্ষী মো. জাহিদকে ওয়াকিটকি বহন করার দায়ে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ ছাড়া বাসা থেকে অস্ত্র ও মাদক উদ্ধারের ঘটনায় আজ পৃথক মামলা করবে র্যাব।