সমুদ্রের পাড়ে হাঁটতে হাঁটতে কে ভেবেছিল ইতিহাস ধরা দেবে হাতে? পোল্যান্ডের গদান্স্ক শহরের স্টোগি সৈকতের ধারে হাঁটতে গিয়ে ঠিক এমনই এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হলো ১০ বছর বয়সী দুই কিশোর- এরিক ও কুবা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন পুরোনো দুর্গ দেখতে গিয়েছিল তারা। সৈকতের ধারে হঠাৎ চোখে পড়ে একটি বিবর্ণ কাচের বোতল। শিশুমন কৌতূহলী, বোতল খুলতেই চোখের সামনে ধরা পড়ে একটি জীর্ণ কাগজ। তা আর কিছু নয়, একটি প্রেমপত্র। সময় বলছে, চিঠিটি লেখা হয়েছে ১৯৫৯ সালে—ছয় দশকেরও বেশি আগে।
চিঠির লেখিকা ‘রিশিয়া’। পত্রের ঠিকানায় যাকে লেখা, তার নাম ‘বান্নি’। ছোট্ট কাগজের পাতায় রিশিয়া লিখেছেন তার নিঃসঙ্গ স্কুলজীবনের কথা, ভালোবাসার গভীর অনুভূতি আর নিজের শান্ত ও সংযত চরিত্রের কথা।
তিনি লিখেছিলেন, ‘আমি তোমাকে আশ্বস্ত করছি যে আমি শান্ত ও বিনয়ী। আমি কারও সঙ্গে বন্ধুত্ব করি না। পুরুষদের এড়িয়ে চলি।’
কিন্তু সেই ‘এড়িয়ে চলা’র মধ্যেও গড়ে উঠেছিল এক আবেগী টান, এক অনুচ্চারিত ভালোবাসা, যা কালের অতল গহ্বরে হারিয়ে যায়নি।
বোতলের ভেতরে চাপা পড়ে থাকা সেই ভালোবাসার চিহ্ন যেন ফিরে এলো ৬৬ বছর পর।
এরিক ও কুবা এখন রিশিয়াকে খুঁজে বের করতে চায়। তারা ইতোমধ্যে তরনুভ শহরের একটি জাদুঘরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। লক্ষ্য একটাই—রিশিয়ার পরিচয় জানার চেষ্টা এবং সম্ভব হলে তার সঙ্গে দেখা করা।
সমুদ্রের ঢেউ হয়তো অনেক গল্প গিলে নেয়, কিন্তু কিছু গল্প রয়ে যায় কাচের বোতলে, ভালোবাসার হাতের লেখায়। সময় বদলায়, প্রজন্ম বদলায়, কিন্তু প্রেম? সে কি কখনো পুরোনো হয়?
তথ্যসূত্র: ইউপিআই