মাত্র ১৪ বছর বয়সেই আন্তর্জাতিক যুব ক্রিকেটে ঝলক দেখালেন ভারতের নতুন বিস্ময়বালক বৈভব সূর্যবংশী। হোভে অনুষ্ঠিত পাঁচ ম্যাচের প্রথম যুব ওয়ানডেতে ইংল্যান্ডকে ২৬ ওভার হাতে রেখেই ৬ উইকেটে হারিয়েছে ভারত অনূর্ধ্ব-১৯ দল।
এ ম্যাচে মাত্র ১৯ বলে ৪৮ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন সূর্যবংশী, যিনি চলতি বছর আইপিএলে রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে মাত্র ৩৮ বলে শতক করে ইতিহাস গড়েছিলেন, পুরুষদের টি-টোয়েন্টি ইতিহাসে সর্বকনিষ্ঠ সেঞ্চুরিয়ান হিসেবে।
ইংল্যান্ড সফরে এটাই ছিল ভারতের প্রথম অফিসিয়াল ম্যাচ ছিল না। তিন দিন আগেই ইয়ং লায়ন্স ইনভাইটেশনাল একাদশকে ২৩১ রানে হারিয়েছিল তারা। তবে সূর্যবংশীর আগমনে এই ম্যাচে আকর্ষণ ছিল আরও অনেক বেশি।
ইনিংসের শুরুতেই ক্যাপ্টেন আয়ুষ মাথারের সঙ্গে মাত্র ৭.৩ ওভারে ৭১ রানের ঝড়ো জুটি গড়েন সূর্যবংশী। বাঁহাতি এই ব্যাটার জ্যাক হোমের এক ওভারেই নেন ২১ রান, একটি টপ এজ ছয়, মিড-অন ও কাউ কর্নারের ওপর দিয়ে আরও দুটি ছয়। তবে রালফি আলবার্ট বোলিংয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গেই সূর্যবংশীর ইনিংসের ইতি টানেন, পয়েন্টে তুলে দেন ক্যাচ। তবে এর মাঝেই পাঁচটি ছয় ও তিনটি চার মেরে ম্যাচের রঙ বদলে দেন।
ওই ধাক্কা সামলে ম্যাচ জেতার কাজটা শেষ করেন কিপার অভিজ্ঞান কুণ্ডু, ৪৫ রানে অপরাজিত থেকে। ইংল্যান্ডের দেয়া ১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে কিছু উইকেট হারালেও, ভারত ম্যাচ জিতে নেয় অনায়াসেই। এর আগে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড অলআউট হয় ৪২.২ ওভারে মাত্র ১৭৪ রানে। রকি ফ্লিনটফ (৫৬) ও আইজ্যাক মোহাম্মদ (৪২) ছাড়া কেউই ২০ রানের গণ্ডি ছুঁতে পারেননি।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে অবশ্য ভালো সূচনা করেছিল ইংল্যান্ড, বেন ডাকিন্স ও আইজ্যাকের উদ্বোধনী জুটিতে আসে ৩৯ রান। বাঁহাতি আইজ্যাক প্রথম ওয়ানডেতেই ঝড় তোলেন, হেনিল প্যাটেলকে স্কয়ার লেগের ওপরে তুলে মারেন ছক্কা, এরপর ২৮ বলে ৪২ রানের ইনিংসে ৪টি ছক্কা ও ৩টি চার। প্রসঙ্গত, আইজ্যাক ইংল্যান্ডের মঈন আলি ও ওরচেস্টারশায়ারের সহকারী কোচ কাদির আলির আত্মীয়। সম্প্রতি তিনি ওয়ারউইকশায়ার একাডেমি থেকে ওরচেস্টারশায়ারে তিন বছরের চুক্তি করেছেন।
ডাকিন্স ফিরলেও আইজ্যাক ছক্কা মেরে দলকে ৫০ রান এনে দেন, কিন্তু এনাানের বলে আরও বড় শট খেলতে গিয়ে ধরা পড়েন ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগে। এরপর থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। ফ্লিনটফ একপাশে লড়লেও অন্যপ্রান্তে উইকেট পড়তেই থাকে। বেন মায়েস ও টম রিউ দ্রুত ফিরে গেলে চাপ আরও বাড়ে। জো মুরস ও রালফি আলবার্টকে ফিরিয়ে দেন কনিশ্ক চৌহান।
এরপর হোম রান আউট হলে স্কোর দাঁড়ায় ১২৯/৭। ফ্লিনটফ কিছুটা প্রতিরোধ গড়েন, তিনটি ছয় ও তিনটি চারে ৯০ বলে করেন ৫৬, তবে শেষ উইকেট হিসেবে তিনিও ফিরলে থেমে যায় ইংল্যান্ডের ইনিংস। এই জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল ভারত। সূর্যবংশী ও স্পিনারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে এই দলের সামর্থ্য যে কতটা, তা স্পষ্ট। পরের ম্যাচগুলোতে ইংল্যান্ড ঘুরে দাঁড়াতে পারে কি না, সেটাই এখন দেখার।