33961

07/05/2025 উত্তরের জনপদের যুগান্তকারী হরিপুর-চিলমারী সেতু চলতি মাসেই উদ্বোধন

উত্তরের জনপদের যুগান্তকারী হরিপুর-চিলমারী সেতু চলতি মাসেই উদ্বোধন

জেলা সংবাদদাতা, গাইবান্ধা

৫ জুলাই ২০২৫ ১১:২৬

উত্তরাঞ্চলের মানুষের বহুল প্রতীক্ষিত স্বপ্নের প্রকল্প—গাইবান্ধার হরিপুর-চিলমারী তিস্তা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ সেতুটি উত্তরবঙ্গের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সেতু পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, চলতি জুলাই মাসেই সেতুটি উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে।

তিনি বলেন, এই মাসটিকে স্মরণীয় করে রাখতে চাই। সেতুর বাকি ছোটখাটো কাজ দ্রুত শেষ হচ্ছে। কাজ শেষ হলেই উদ্বোধনের তারিখ জানিয়ে দেওয়া হবে।

পরিদর্শনকালে সচিব সেতুর বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশীদ মিয়া, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোয়াজ্জেম আহম্মদ, উত্তরাঞ্চলের আট জেলার এলজিইডির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকৌশলীরা এবং সুন্দরগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।

দেশে এলজিইডির ইতিহাসে এটিই সর্ববৃহৎ প্রকল্প। সেতুটি চালু হলে যেমন দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হবে দুই জেলার লাখো মানুষের, তেমনি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের জন্য এটি হবে ব্যতিক্রমী এক অর্জন।

এলজিইডি সূত্র জানায়, সৌদি সরকারের অর্থায়নে এবং চায়না স্টেট কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেডের তত্ত্বাবধানে নির্মিত হয়েছে সেতুটি। প্রায় ৮৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পিসি গার্ডার সেতুটির দৈর্ঘ্য ১,৪৯০ মিটার এবং প্রস্থ ৯.৬ মিটার। পুরো প্রকল্পের তদারকি করছে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)।

সেতুকে ঘিরে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সেস সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে, যেখানে রয়েছে ৫৮টি বক্স কালভার্ট এবং ৯টি আরসিসি সেতু। নতুন এই সড়ক সংযোগের মাধ্যমে বেলকা বাজার, পাঁচপীর, ধর্মপুর, হাট লক্ষ্মীপুর, সাদুল্যাপুর ও ধাপেরহাটসহ অন্তত ১০টি বাজার যুক্ত হচ্ছে মহাসড়কের সঙ্গে। এতে সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারী অঞ্চলসহ উত্তরাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন আরও গতিশীল হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এলাকার মানুষ জানিয়েছে, দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটতে চলেছে। সেতুটি চালু হলে শুধু সুন্দরগঞ্জ ও চিলমারী নয়, পুরো গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম অঞ্চলের মানুষ যোগাযোগ সুবিধায় নতুন সম্ভাবনার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছাবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে সেতুটির ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়। এরপর নানা জটিলতায় কাজের সময়সীমা কয়েকবার বাড়ানো হয়। সর্বশেষ ২০২৪ সালে সেতু ও সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ সম্পন্নের কথা ছিল। গেল বছরের ৩০ নভেম্বর সেতুটি পরিদর্শনে এসে এলজিইডির তৎকালীন প্রধান প্রকৌশলী গোপাল কৃষ্ণ দেবনাথ চলতি বছরের মার্চে উদ্বোধনের সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিলেন।

অবশেষে সব জটিলতা ও প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে তিস্তার বুকজুড়ে দৃঢ় সংযোগের সাক্ষী হতে চলেছে উত্তরাঞ্চলের এই জনগণ।

ডিএম /সীমা

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]