34082

07/07/2025 প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জেনেও কেন রাজনৈতিক দল গড়লেন ইলন মাস্ক

প্রেসিডেন্ট হতে পারবেন না জেনেও কেন রাজনৈতিক দল গড়লেন ইলন মাস্ক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

৭ জুলাই ২০২৫ ১২:১৩

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হওয়ার সাংবিধানিক যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন টেসলা ও স্পেসএক্স–এর প্রধান এবং আলোচিত প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। নতুন দলটির নাম দিয়েছেন 'আমেরিকা পার্টি'। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে স্থানীয় সময় শনিবার (৫ জুলাই) তিনি এ ঘোষণা দেন।

মাস্ক তার পোস্টে লিখেছেন, ‘'আমেরিকা পার্টি' প্রতিষ্ঠিত হলো, যাতে আপনাদের স্বাধীনতা আবার ফিরিয়ে দিতে পারি।’ তিনি দাবি করেন, বর্তমান যুক্তরাষ্ট্র একটি একদলীয় ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে, যেখানে অপচয় ও দুর্নীতির মধ্য দিয়ে দেশকে দেউলিয়া করে ফেলা হচ্ছে। তার ভাষায়, ‘এটা গণতন্ত্র নয়।’

এদিকে মাস্কের সাবেক রাজনৈতিক মিত্র সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নতুন রাজনৈতিক দল গঠনকে ‘হাস্যকর’ বলে মন্তব্য করেছেন। রোববার নিউ জার্সির গলফ ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘মাস্ক এখন ট্রেন দুর্ঘটনার মতো একটা পরিস্থিতিতে আছেন। তিনি পথ হারিয়ে ফেলেছেন।’

মাস্ক এক সময় ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ছিলেন। ট্রাম্প ক্ষমতায় থাকাকালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রের সরকারি দক্ষতা বিভাগের দায়িত্ব দিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্পের আর্থিক পরিকল্পনা এবং ‘বিগ বিউটিফুল বিল’–এর বিরোধিতা করে মাস্ক ওই পদ থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি বিলটির কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘এই বিল যুক্তরাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে দেবে।’


দক্ষিণ আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া মাস্ক ২০০২ সালে মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণ করলেও 'জন্মসূত্রে আমেরিকান না হওয়ায়' তিনি কখনোই প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে পারবেন না। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের আর্টিকেল ২, সেকশন ১ অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট হওয়ার জন্য এই শর্ত পূরণ আবশ্যক।

মাস্ক অবশ্য শুধু প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নয়, বরং কংগ্রেসের সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে চান। তিনি জানান, যেসব আসনে বড় দুই দলের (রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট) একচেটিয়া নিয়ন্ত্রণ নেই, সেখানে তার 'আমেরিকা পার্টি' প্রার্থী দেবে। এর মাধ্যমে কংগ্রেসে কোনো আইন পাসের সময় গুরুত্বপূর্ণ বা ‘ডিসাইসিভ ভোট’ প্রদানের ক্ষমতা অর্জন করাই তার লক্ষ্য।

নতুন দল গঠনের আগে মাস্ক নিজের এক্স প্ল্যাটফর্মে একটি জনমত জরিপ চালান। সেখানে তিনি দেখেছেন, দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ নতুন একটি রাজনৈতিক দল চায়। এরপরই তিনি দলের ঘোষণা দেন। যদিও এখনো দলটি ফেডারেল ইলেকশন কমিশনে (FEC) নিবন্ধিত হয়নি, যা যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি পেতে হলে বাধ্যতামূলক।

বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী না হয়েও ইলন মাস্ক যুক্তরাষ্ট্রের দুই-দলীয় ব্যবস্থায় বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারেন। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অনেক আসনে ভোটের ব্যবধান খুব কম। সে ক্ষেত্রে তৃতীয় শক্তি হিসেবে মাস্কের দল হতে পারে ‘কিং-মেকার’। বিশেষ করে কংগ্রেসের বিভিন্ন আসনে নিরপেক্ষ প্রার্থীদের সমর্থন দিয়ে তিনি আইন প্রণয়নে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।

এছাড়াও মাস্কের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম–ভিত্তিক জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে জাতীয় রাজনৈতিক বিতর্কের গতিপথ প্রভাবিত করতে পারেন বলেও মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা। এর ফলে প্রেসিডেন্ট না হয়েও তিনি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় হিসেবে আবির্ভূত হতে পারেন।

তথ্যসূত্র: এএফপি, রয়টার্স, বিবিসি

ডিএম /সীমা

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]