চার দিনের অবিরাম বর্ষণে নাকাল হয়ে পড়েছে বরিশালবাসী। ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। কর্মজীবী, শিক্ষার্থী আর নিম্নআয়ের মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। বৃষ্টিতে অনেকেই ঘরবন্দি সময় কাটাচ্ছেন। তবে বৃষ্টিতে খুশি হয়েছেন চাষিরা। ক্ষেতে ধানের বীজ বপনে উপযুক্ত সময়ে বৃষ্টিপাত মাটিকে উর্বর করবে বলে জানান তারা।
মৌসুমি বায়ু সক্রিয় থাকায় গত শনিবার থেকে মাঝারি পরিমাণে বৃষ্টি হতে শুরু করে। এখনো বৃষ্টিপাত অব্যহত রয়েছে।
বরিশাল নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, টানা বৃষ্টিতে ড্রেন, নালা ও ডোবা পানিতে পরিপূর্ণ হয়ে গেছে। মৃতপ্রায় খালগুলোতে পানি আটকে ময়লা আবর্জনা পথে উঠে এসেছে। অনেক স্থানে জলাবদ্ধতারও তৈরি হয়েছে।
রূপাতলী হাউজিংয়ের বাসিন্দা আরাফাত হোসেন বলেন, সারাক্ষণ টিপ টিপ বৃষ্টিতে বাইরে বেড় হওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাস্তাঘাটে চলাচল প্রায় অসম্ভব। ড্রেনের ময়লা রাস্তায় উঠে চলাচলে আরও অসুবিধা সৃষ্টি করছে।
তিনি বলেন, রূপাতলী বাজারের মুখে পানি জমেছে। গোল চত্বরের পূর্ব পাশে পানি জমেছে।
সিটি করপোরেশনের ২নং ওয়ার্ড কাউনিয়া এলাকার বাসিন্দা সাইদুল ইসলাম বলেন, টানা বৃষ্টিতে প্রতিটি গলিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। সারা বছর ড্রেন পরিষ্কার করা হয়নি। শুধু বড় বড় কয়েকটি ড্রেন পরিষ্কার করেছে। তাতে পুরো শহরের সমস্যার সমাধান হবে না। ঘিঞ্জি যেসব এলাকা সেদিকে অতি গুরুত্ব না দিলে আমাদের ভোগান্তি কমবে না।
তবে টানা বৃষ্টি চাষাবাদের জন্য উপকারী উল্লেখ করে বাবুগঞ্জ উপজেলার বাহেরচরের বাসিন্দা সোহরাফ হোসেন বলেন, ধানের বীজতলার জন্য এই বৃষ্টি খুবই উপকারী। অনবরত বৃষ্টি হলে ক্ষেত নরম হবে, আমাদের চাষাবাদে সুবিধা হবে। বৃষ্টিতে মাটির উর্বরতাও বাড়ে।
বরিশাল সদর উপজেলার সাপানিয়ার চাষি মিজানুর রহমান বলেন, গরু-ছাগল চড়াতে কিছুটা অসুবিধা হয়। বাইরে খাবার খেতে যেতে পারে না। তবে চাষাবাদের জন্য এই বৃষ্টি খুব ভালো। কৃষকরা এমন বৃষ্টিতে খুশি।
বরিশাল আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের অফিসার্স ইনচার্জ আনিসুর রহমান বলেন, সোমবার বিকেল ৩টা থেকে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা অর্থাৎ ২৪ ঘণ্টায় ৮৩ দশমিক ১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এটি মৌসুমি বৃষ্টিপাত। বর্ষায় সাধারণত এভাবেই বৃষ্টি হয়।
তিনি বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস পর্যালোচনা করে বলা যায় আগামী দুই-তিন দিন এভাবে বৃষ্টি অব্যাহত থেকে কিছুটা কমতে পারে। আবহাওয়ার এই পরিস্থিতিতে সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর ও নদী বন্দরকে এক নম্বর সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ডিএম /সীমা