টোকিও থেকে এএফপি জানায়, এর আগে চালের দাম মে মাসে ১০১, এপ্রিলে ৯৮ দশমিক ৪ ও মার্চে ৯২ দশমিক ৫ শতাংশের বেশি বেড়েছিল।
এ ছাড়া দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সামগ্রিকভাবে জাপানের মূল মূদ্রাস্ফীতি জুন মাসে কমে দাঁড়িয়েছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশে, যা মে মাসে ছিল ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
এই মুদ্রাস্ফীতি হিসাব থেকে পচনশীল খাবারের দাম বাদ দেওয়া হয়। এটি বাজারের প্রত্যাশিত ৩ দশমিক ৪ শতাংশের থেকে সামান্য কম। জ্বালানি এবং পচনশীল খাবার বাদ দিয়ে ভোক্তা মূল্যসূচক বেড়েছে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ, যা মে মাসের ৩ দশমিক ৩ শতাংশের চেয়ে কিছুটা বেশি।
ইশিবা দায়িত্ব গ্রহণ করে অক্টোবরে। এরপর থেকে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় জনগণের অসন্তোষ ও ক্ষোভের ফলে তার জনপ্রিয়তা তলানিতে ঠেকেছে।
মূলত দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, বিশেষ করে চালের দাম বৃদ্ধি এবং ক্ষমতাসীন দলের নানা কেলেঙ্কারিই এই ক্ষোভের উৎস।
গত অক্টোবরে নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় প্রধানমন্ত্রী ইশিবার নেতৃত্বাধীন জোট। যা গত ১৫ বছরে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)’র সবচেয়ে বাজে ফলাফল।
রোববারের নির্বাচনের আগে করা জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে, শাসক জোট হয়তো উচ্চকক্ষেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে পারে। যা ইশিবাকে এক বছরের কম সময়েই পদত্যাগে বাধ্য করতে পারে।
এ ছাড়া আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন ২৫ শতাংশ মার্কিন শুল্ক শুরু হওয়ার আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বাণিজ্য চুক্তির বিষয়ে ইশিবার ওপর চাপ বাড়ছে। জাপানের গাড়ি, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম রপ্তানির ওপর যুক্তরাষ্ট্র আগেই উচ্চ শুল্ক আরোপ করেছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, জাপানি কোম্পানিগুলো যেন যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশি পণ্য উৎপাদন করে এবং টোকিও যেন যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও বেশি পণ্য কিনে, বিশেষ করে গ্যাস, তেল, গাড়ি ও চাল। এভাবে তিনি এশিয়ার অর্থনৈতিক পরাশক্তি জাপানের সঙ্গে ৭০ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চান।
ইশিবা ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে তার দূত রিওসেই আকাজাওয়াকে সাতবার ওয়াশিংটন পাঠিয়েছেন।
জাপানের কেন্দ্রীয় ব্যাংক গত বছর থেকে মুদ্রানীতিতে কড়াকড়ি আরোপ করলেও, মার্কিন শুল্কের প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ থাকায় এখন অনেকটাই ধীরগতিতে চলছে এই প্রক্রিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে চালের দাম বাড়ার পেছনে অন্যতম কারণ হলো দুই বছর আগে দেশজুড়ে অতিরিক্ত গরম ও খরায় ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়া, যার ফলে চালের ঘাটতি দেখা দেয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এরপর থেকে কিছু ব্যবসায়ী ইচ্ছাকৃতভাবে চাল মজুত করে রাখছে, যাতে ভবিষ্যতে বেশি দামে বিক্রি করে লাভ বাড়ানো যায়।
এদিকে গত বছর দেশটিতে ‘ভয়াবহ ভূমিকম্প’-এর পূবাভাসে জনমনে আতঙ্ক তৈরি হয়। ফলে মানুষ চাল মজুত করতে শুরু করে। যদিও সেই ভূমিকম্প শেষ পর্যন্ত হয়নি।
ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার গত ফেব্রুয়ারি থেকে তার জরুরি মজুদ বাজারে ছাড়তে শুরু করেছে, যা সাধারণত কেবল প্রাকৃতিক দুর্যোগে করা হয়।