রুদ্ধশ্বাস ফাইনালের দেখা মিলল নারী কোপা আমেরিকায়। শেষ তিন বারের মতো এবারও মুখোমুখি হয়েছিল ব্রাজিল-কলম্বিয়া। তবে এবার যা হলো, এমন কিছুর দেখা শেষ কয়েক বারেও মেলেনি। মূল ম্যাচে গোল হলো ৮টি, তবে ৪-৪ ড্র হওয়ায় জয়ীর দেখা পেতে খেলা গড়াল টাইব্রেকারে। সেখানে ৫-৪ ব্যবধানে জিতে ব্রাজিল পেয়ে গেল তাদের নবম শিরোপা।
ব্রাজিল তাদের সবশেষ ফাইনাল হেরেছিল ২০০৬ সালে, আর্জেন্টিনার কাছে। সেটা না হলে ১০ আসরের প্রতিটিরই শিরোপা জিততে পারত ব্রাজিল। আর কলম্বিয়ানরা দুর্ভাগাই বলতে হবে। কারণ তারা শেষ ৫ আসরের মধ্যে চারবারই ফাইনালে উঠেছে, কিন্তু প্রতিবারই ব্রাজিলের কাছে হেরে গেছে দলটা।
তবে সে গেরোটা অবশেষে খুলছে, কলম্বিয়ানরা এক পর্যায়ে এমনটাই ভেবে বসেছিল। নির্ধারিত সময় শেষ, যোগ করা ৫ মিনিটের শেষ দশ সেকেন্ডেও যখন একটা দল ৩-২ গোলে এগিয়ে থাকে, তখন তা ভাবাই স্বাভাবিক।
তারপরই দেখা মিলল মার্তা ম্যাজিকের। প্রমাণ দিলেন পুরোনো চাল ভাতে বাড়ে। পুরো টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালের আগ পর্যন্ত গোল পাননি, শেষ চারে যে গোলটা পেলেন, সেটাও পেনাল্টি থেকে। সেই মার্তাই ফাইনালে করে বসলেন এমন এক গোল, যা ব্রাজিলের প্রাণ ফেরাল রীতিমতো।
অবসর ভেঙে ফেরা ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি মার্তা দুর্দান্ত এক গোল করে বসেন। ফলে খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও আবার মার্তার জাদু। ৩৯ বছর বয়সি এই ফুটবলার ব্রাজিলকে ৪–৩ ব্যবধানে এগিয়ে দেন এবার, পুরো ম্যাচে প্রথমবারের মতো লিড নেয় দলটা। তবে কলম্বিয়া ম্যাচে আবারও সমতা ফেরায় ১১৫তম মিনিটে। ৪–৪ ড্রয়ে ম্যাচ চলে যায় টাইব্রেকারে।
মার্তা ম্যাচে জোড়া গোল করলেও পেনাল্টি শুটআউটে অবশ্য গোল করতে ব্যর্থ হন। যদিও তা নিয়ে শেষ পর্যন্ত আক্ষেপ করতে হয়নি তাকে। ৫-৪ গোলে ব্রাজিল হাসে শেষ হাসিটা। তবে পেনাল্টি শ্যুটআউটে গোল না পেলেও ম্যাচ আর প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় ঠিকই নির্বাচিত হয়েছেন মার্তা।
অবসর ভেঙে ফেরার পর দারুণ এ অর্জন নিয়ে উচ্ছ্বসিত মার্তা বলেন, ‘আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করছিলাম, যেন উনি আমাকে এতটা কঠোর শাস্তি (হার) না দেন। মাঠে নেমে সমতাসূচক গোলের আশীর্বাদ পেলাম, তার ওপর আরও একটি গোল করলাম। কিন্তু আমরা একটা ভুল করলাম, ওরা গোল করে সমতা ফেরাল।’
তিনি বলেন, ‘টাইব্রেকারে আমার সুযোগ ছিল শিরোপা নিশ্চিত করার, কিন্তু আমি মিস করলাম। তবে আমার আশপাশে ছিল এই অসাধারণ মেয়েরা। টাইব্রেকারে মিস করার পর আমি খুব ভেঙে পড়েছিলাম, কিন্তু ওরা আমাকে ভেঙে পড়তে দেয়নি। সবার বিশ্বাস ছিল যে আমরা পারব। লোরেনা পেনাল্টি বাঁচিয়ে দেবে। সৃষ্টিকর্তা আমাকে এ শিরোপা দিয়েছেন, এটা আমার শেষ কোপা আমেরিকা ট্রফি।’