কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মেয়ে মীরা আক্তার আছমাকে (১২) হত্যার দায়ে বাবা-চাচাসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৬ আগস্ট) দুপুরে আসামিদের অনুপস্থিতিতে কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মুহাম্মদ নুরুল আমিন বিপ্লব এ রায় দেন।
আসামিরা হলেন- করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া গ্রামের জহিরকোনা এলাকার নিহত মীরা আক্তার আছমার বাবা আনোয়ারুল ইসলাম ওরফে আঙ্গুর মিয়া, চাচা খুর্শিদ মিয়া ও চাচাতো ভাই সাদেক মিয়া।
এ ঘটনায় অপর আসামি নিহত মীরা আক্তার আছমার মা মোছা. নাজমুন্নাহারকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
কিশোরগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জালাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, প্রতিবেশী আবু বকর সিদ্দিকের পরিবারের সঙ্গে আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুরের জমি নিয়ে বিরোধ ছিল। ফলে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ২০১৬ সালের ১০ আগস্ট রাতে আঙ্গুর, তার ভাই খুরশিদ মিয়া ও ভাতিজা সাদেক মিয়া মিলে মেয়ে মীরা আক্তারকে (১২) ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করে বাড়ির পাশে বাঁশঝাড়ের ভেতর ফেলে রাখেন। পরদিন সকালে বাঁশঝাড় থেকে পুলিশ মেয়েটির মরদেহ উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে ১১ আগস্ট করিমগঞ্জ থানায় প্রতিপক্ষ আবু বকর সিদ্দিকসহ ১৬ জনের নামে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তে বেরিয়ে আসে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আঙ্গুর অন্যদের নিয়ে মেয়েকে হত্যা করেন। ফলে ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মামলা থেকে আবু বকরদের নাম বাদ দিয়ে করিমগঞ্জ থানার এসআই অলক কুমার দত্ত বাদী হয়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিনজনসহ নিহতের মা নাজমুন্নাহারের নামে থানায় নতুন করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ ৬ আগস্ট এ মামলার রায় দেন আদালত।
আসামিপক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট অনামিকা রেজা রৌজি ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এপিপি মাজহারুল ইসলাম।
কিশোরগঞ্জ জেলা দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর মো. জালাল উদ্দিন বলেন, করিমগঞ্জ উপজেলার ভাটিয়া জহিরকোণা গ্রামে মেয়েকে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বাবা আনোয়ারুল ইসলাম আঙ্গুর, চাচা খুরশিদ মিয়া ও চাচাতো ভাই সাদেক মিয়াকে আদালত মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন। তবে রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে অনুপস্থিতি ছিলেন।