37275

08/28/2025 ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করার পদ্ধতি

ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করার পদ্ধতি

ধর্ম ডেস্ক

২৭ আগস্ট ২০২৫ ১৮:২৭

দোয়া হলো আল্লাহর সঙ্গে বান্দার যোগাযোগের সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম। দোয়া কবুলের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ফলপ্রসূ একটি পদ্ধতি হলো ইসমে আজম বা আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ নামের মাধ্যমে দোয়া করা। হাদিস শরিফে রাসুল (স.) কিছু শব্দ ও বাক্যের সমষ্টিকে ইসমে আজম হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এই বাক্যগুলো পাঠ করে এরপর নিজের মনের কথাগুলো আল্লাহর কাছে তুলে ধরলে দোয়া কবুলের সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায়। কেননা এই দোয়াগুলোতে রয়েছে ইসমে আজম।

এখানে ইসমে আজমের মাধ্যমে দোয়া করার কিছু কার্যকর পদ্ধতি তুলে ধরা হলো।

১. তাওহিদের সাক্ষ্য দিয়ে দোয়া
আল্লাহর কাছে কিছু চাওয়ার আগে তাওহিদের সাক্ষ্যমূলক এই বাক্যটি পাঠ করুন। এটি আল্লাহর একত্ববাদ ও মহত্ত্বের ঘোষণা।

আরবি: اَللّٰهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنِّي أَشْهَدُ أَنَّكَ أَنْتَ اللهُ، لَا إِلَهَ إِلّا أَنْتَ الأَحَدُ الصَّمَدُ، الَّذِي لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُوْلَدْ، وَلَمْ يَكُنْ لَّهٗ كُفُوًا أَحَدٌ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্নী আশহাদু আন্নাকা আনতাল্লাহু, লা ইলাহা ইল্লা আনতাল আহাদুস সামাদু, আল্লাজী লাম ইয়ালিদ, ওয়ালাম ইউলাদ ওয়ালাম ইয়াকুললাহু কুফুআন আহাদ।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে (আমার কাঙ্ক্ষিত বিষয়) কামনা করছি। যেহেতু আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনিই আল্লাহ। আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আপনি এক ও অদ্বিতীয়। আপনি চির অমুখাপেক্ষী। (আপনি এমন সত্তা,) যিনি কাউকে জন্ম দেন না, কারো থেকে জন্ম নেন না। যার সমকক্ষ বা সমতুল্য কেউ নেই।’ (জামে তিরমিজি: ৩৪৭৫)

২. আল্লাহর প্রশংসা ও অনুগ্রহের মাধ্যমে দোয়া
এই দোয়াটি আল্লাহর প্রশংসা ও তাঁর অনুগ্রহের স্বীকৃতি দিয়ে শুরু হয়।

আরবি: اَللّٰهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لَا إِلهَ إِلَّا أَنْتَ، وَحْدَكَ لَا شَرِيْكَ لَكَ، الْمَنَّانُ، بَدِيْعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ، ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদা, লা ইলাহা ইল্লা আনতা, ওয়াহদাকা লা শারীকা লাকাল মান্নানু বাদীআস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি জুল জালালি ওয়াল ইকরাম।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে (আমার কাঙ্ক্ষিত বিষয়) কামনা করছি। যেহেতু সকল প্রশংসা আপনার। আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আপনি এক। আপনার কোনো শরিক নেই। আপনি মহা অনুগ্রহশীল। জমিন ও আসমানসমূহের অতুলনীয় স্রষ্টা। আপনি মহিমময়, মহানুভব।’ (সুনানে ইবনে মাজাহ: ৩৮৫৮)

৩. চিরঞ্জীব ও মহানিয়ন্ত্রকের কাছে চাওয়া
এই দোয়াটি আল্লাহর চিরঞ্জীব ও সার্বভৌম ক্ষমতার উল্লেখ করে শুরু হয়, যা দোয়াকারীর আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে তোলে।

আরবি: اَللّٰهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ بِأَنَّ لَكَ الْحَمْدَ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، الْمَنَّانُ، يَا بَدِيعَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ، يَا ذَا الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ، يَا حَيُّ يَا قَيُّوْمُ، إِنِّيْ أَسْأَلُكَ

উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নী আসআলুকা বিআন্না লাকাল হামদা, লা ইলাহা ইল্লা আনতা, আল মান্নানু, ইয়া বাদীআস সামাওয়াতি ওয়াল আরদি, ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম, ইয়া হাইয়্যু ইয়া কাইয়্যুমু, ইন্নী আসআলুকা।

অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে (আমার কাঙ্ক্ষিত বিষয়) কামনা করছি। যেহেতু সকল প্রশংসা আপনার জন্য। আপনি ছাড়া কোনো মাবুদ নেই। আপনি মহা অনুগ্রহশীল। হে জমিন ও আসমানসমূহের অতুলনীয় স্রষ্টা! হে মহিমময়, মহানুভব! হে চিরঞ্জীব, হে মহানিয়ন্ত্রক! আমি আপনার কাছে (আমার কাঙ্ক্ষিত বিষয়) প্রার্থনা করছি।’ (মুসনাদে আহমদ: ১৩৫৭০)

রাসুল (স.) হাদিস শরিফে এই বাক্যগুলোকে ইসমে আজম হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। এই বাক্যগুলোতে আল্লাহর এমন কিছু গুণবাচক নাম ও সিফাত (বৈশিষ্ট্য) উল্লেখ করা হয়েছে, যা আল্লাহর মহত্ত্ব ও একত্ববাদকে অনন্যভাবে প্রকাশ করে। যখন কোনো বান্দা এই গুণগুলোর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে চায়, তখন আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দেন।

কিভাবে এই পদ্ধতি অনুসরণ করবেন?
উপরের তিনটি দোয়া থেকে যেকোনো একটি বেছে নিন। এটি দোয়ার শুরুর অংশ হিসেবে পাঠ করুন। এরপর আপনার যা প্রয়োজন, তা স্পষ্ট করে আল্লাহর কাছে তুলে ধরুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি কোনো পরীক্ষার সফলতা চান, তাহলে প্রথম দোয়াটি পাঠ করার পর বলতে পারেন, ‘হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এই পরীক্ষায় সফলতা কামনা করছি।’ এভাবে নিজের মনের সব ভালো ইচ্ছে আল্লাহর কাছে ব্যক্ত করুন।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ইসমে আজমের মাধ্যমে তাঁর কাছে দোয়া করার তাওফিক দান করুন। তিনি আমাদের মনের সব ভালো ইচ্ছে পূরণ করুন। আমিন।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]