আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ১ হাজার ৪০০ জন ছাড়িয়ে গেছে। পাশাপাশি আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৩ হাজার ২৫১ জন এবং ৮ হাজারেরও বেশি বাড়িঘর সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে।
আহতদের মধ্যে বেশ কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ বুধবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন এ তথ্য।
গত রোববার রাতে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলীয় কুনার প্রদেশের জালালাবাদ শহরের কাছে ভূপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ কিলোমিটার গভীরে ৬ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। প্রথম ভূমিকম্পের কয়েক মিনিটের মধ্যে ৫ দশমিক ২ এবং ৪ দশমিক ৫ মাত্রার দু’টি ‘আফটার শক’ হয়।
কুনার প্রদেশের দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের প্রধান এহসানউল্লাহ এহসান বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেন, “এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে, তবে এই সংখ্যা আরও বাড়বে। কারণ ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও কত মরদেহ আটকে আছে— আমরা এখনও জানি না।”
দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের উদ্ধারকর্মীরা সাধ্যমত সর্বোচ্চ গতিতে তৎপরতা চালাচ্ছেন উল্লেখ করে এহসান বলেন, “আমাদের লক্ষ্য যত শিগগির সম্ভব উদ্ধার তৎপরতা শেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর মধ্যে খাদ্য ও ত্রাণের বিতারণ শুরু করা।”
হিন্দুকুশ পার্বত্য অঞ্চলে অবস্থান হওয়ায় কুনার প্রদেশ পুরোপুরি পার্বত্য অঞ্চল এবং প্রদেশটিতে দুর্গম এলাকার অভাব নেই। পাকিস্তানের উত্তরপশ্চিামাঞ্চলীয় প্রদেশ খাইবার পাখতুনখোয়ার সঙ্গে কুনারের সীমান্ত আছে।
কুনারের গ্রামীন ও দুর্গম পার্বত্য এলাকার অধিকাংশ বাড়িঘরগুলো রোদে শুকানো ইটের তৈরি। দুর্বল স্থাপনাগঠনের কারণে ভূমিকম্পে হাজার হাজার বাড়িঘর ধসে বিপুল পরিমাণ ধ্বংসস্তূপ তৈরি হয়েছে কুনারের বিভিন্ন গ্রামে। এই পাহাড়সম জঞ্জাল সরিয়ে মরদেহ ও আহতদের উদ্ধার করা দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের কর্মীদের জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠেছে।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ধারকর্মীদের সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছে আফগান সেনাবাহিনী। উদ্ধারকৃত আহতদের একাংশকে কুনারের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, বাকিদের পাঠানো হয়েছে পার্শ্ববর্তী প্রদেশ নানগারহার এবং রাজধানী কাবুলে।
এহসান জানিয়েছেন, ভূমিকম্প উপদ্রুত এলাকাগুলোতে উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা চালাতে ইতোমধ্যে দেশি-বিদেশে বিভিন্ন মানবিক সহায়তা সংস্থার প্রতিনিধি ও কর্মীরা উপস্থিত হয়েছেন। দুর্গতদের জন্য ত্রাণও রয়েছে পর্যাপ্ত।
“দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার লোকজন তাদের সহায়তা নিয়ে আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। আপাতত আমাদের খাদ্য ও ত্রাণের কোনো অভাব নেই। আল্লাহর ইচ্ছায় শিগগিরই সুশৃঙ্খলভাবে আমরা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করব”, এএফপিকে বলেন এহসান।
সূত্র : এএফপি