ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদীর নামাজের জানাজা ছিল অভূতপূর্ব—এমনটাই বলছেন উপস্থিত মুসল্লীরা। জনসমুদ্রের মতো ভিড়, শোকস্তব্ধ পরিবেশ আর এক হৃদয়স্পর্শী নীরবতা মিলিয়ে এই জানাজা যেন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক বিরল অধ্যায় হয়ে উঠেছে। অনেকেই বলছেন, “জীবনে এত বড় জানাজা আর কখনো দেখিনি।”
শনিবার (২০ ডিসেম্বর) দুপুর দুইটা ২৫ মিনিটে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজায় ইমামতি করেন শহীদ হাদির বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। এতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ধর্ম উপদেষ্টা, জামায়াতের আমির শফিকুর রহমান, বিএনপি নেতা সালাহ উদ্দিন আহমেদসহ উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সহযোদ্ধা ও সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।
জানাজা শুরু হওয়ার অনেক আগেই আশপাশের সড়ক, মাঠ ও খোলা জায়গা কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন শেষ বিদায় জানাতে। বয়স্ক, তরুণ, শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী—সব শ্রেণির মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। অনেকে দাঁড়িয়ে, অনেকে বসে, আবার অনেকে রাস্তার ওপর সারিবদ্ধ হয়ে জানাজায় শরিক হন।
মুসল্লীদের মতে, এই বিশাল উপস্থিতি শুধু একটি জানাজা নয়—এটি ছিল ভালোবাসা, শ্রদ্ধা ও বিশ্বাসের এক সম্মিলিত প্রকাশ। কারও চোখে অশ্রু, কারও কণ্ঠে দোয়া—সমবেত মানুষের হৃদয়ে একই অনুভূতি, একই প্রার্থনা।
স্থানীয়রা জানান, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষায় স্বেচ্ছাসেবকরা নিরলসভাবে কাজ করেছেন। প্রচণ্ড ভিড়ের মধ্যেও জানাজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়। শেষ দোয়ায় গোটা প্রাঙ্গণ যেন একসাথে নিঃশ্বাস ধরে রাখে।
এই জানাজা নিয়ে মানুষের মুখে মুখে একটাই কথা—এটি শুধু সংখ্যার দিক থেকে বড় ছিল না, ছিল আবেগ, সম্মান আর স্মৃতির দিক থেকেও ঐতিহাসিক। অনেকের বিশ্বাস, এমন দৃশ্য বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘদিন মনে গেঁথে থাকবে।