সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়া: কোনো ব্যক্তি সাধারণ গোসলের জন্য মসজিদ থেকে বের হওয়ার কারণে তার সুন্নত ইতেকাফ নষ্ট হয়ে গেছে। যেদিন গোসলের জন্য বের হয়েছে, ওই দিনের ইতেকাফ কাজা করে নেওয়া জরুরি। আর এই ইতেকাফটি নফল ইতেকাফ হিসেবে গণ্য হবে।
বাড়তি রোজার নিয়ত: সুন্নত ইতেকাফে (রমজানের শেষ দশ দিনে) রোজা থাকে, তাই এ সময় বাড়তি রোজার নিয়তের প্রয়োজন নেই। তবে ওয়াজিব ইতেকাফে রোজা রাখা শর্ত।
মুস্তাহাব ইতেকাফে সচেতনতামূলক রোজা: মুস্তাহাব ইতেকাফে সচেতনতামূলক রোজা ভালো। তবে নির্ভরযোগ্য মত হলো, শর্ত নয়। না রাখলে সমস্যা নেই।
ইতেকাফের সময়সীমা: ওয়াজিব ইতেকাফে কমপক্ষে একদিনের নিয়ত করতে হবে। বেশিও হতে পারে। আর সুন্নতে মুয়াক্কাদা ইতেকাফ রমজানের শেষ দশ দিনে হয়। আর মুস্তাহাব ইতেকাফের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। হতে পারে এক মিনিট বা তার কমবেশি। সুতরাং যতক্ষণ মসজিদে অবস্থান করবে, ততক্ষণের নিয়ত করতে পারে।
ইতেকাফের কাজা: ইতেকাফে বসে দু’প্রকার (কাজকর্ম) হারাম । অর্থাৎ যেগুলো করলে ওয়াজিব আর সুন্নত ইতিকাফ নষ্ট হয়ে যায়। যদি নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে কাজা করা লাগবে। আর কাজার উদ্দেশ্য হলো, যেসব দিন ইতেকাফ নষ্ট হয়ে গেছে, তার কাজা করে দেবে। ওয়াজিব ইতেকাফের কাজা ওয়াজিব, আর সুন্নতের কাজা সুন্নত। রমজানের ইতেকাফের কাজার জন্য রমজান হওয়া র্শত নয়। তবে যেহেতু রোজার সময়ের কাজা, তাই রোজা রাখা র্শত। যদি মুস্তাহাব ইতেকাফ হয়, তাহলে কোনো সমস্যা নেই। আর মুস্তাহাব ইতেকাফের জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই বলে কোনো কাজাও নেই।
অপ্রয়োজনে মসজিদের বাইরে যাওয়া: ভুলেও নিজের ইতেকাফের মসজিদকে এক মিনিট কিংবা আরও কম সময়ের জন্য ছেড়ে দেওয়া জায়েজ নয়।
অপ্রয়োজনীয় বেচাকেনায় লিপ্ত হওয়া: ইতেকাফ অবস্থায় অপ্রয়োজনীয় দুনিয়াবি কোনো কাজে ব্যস্ত হওয়া মাকরুহে তাহরিমি। যেমন—অপ্রয়োজনীয় বেচাকেনায় লিপ্ত হওয়া। তবে হ্যাঁ, যা না করলেই নয়, এমন হলে ভিন্ন কথা। যেমন—ঘরে খাবার নেই, আর ইতেকাফকারী ছাড়া উপযুক্ত অন্য কেউ নেই। তাহলে ইতেকাফকারী বেচাকেনা করতে পারেন। তবে মসজিদে কোনো জিনিস বা মালামাল উপস্থিত করা যাবে না।
ইতেকাফের বিনিময় দেওয়া-নেওয়া: বিনিময় নিয়ে ইতেকাফ করা বা করানো সম্পূর্ণ নাজায়েজ। কারণ, ইতেকাফ একটি ইবাদত। আর ইবাদতের বিনিময় দেওয়া-নেওয়া নাজায়েজ। বিনিময়ের মাধ্যমে ইতেকাফ করলে সুন্নতে মুয়াক্কাদা (কেফায়া) আদায় হবে না। ফলে এলাকাবাসী সবাই সুন্নতে মুয়াক্কাদায়ে কেফায়া আদায় না করার কারণে গোনাহগার হবে।
ইতেকাফরত ব্যক্তির অসুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা: ইতেকাফরত ব্যক্তির অসুস্থ হয়ে পড়ায় বাড়ি চলে আসতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাকে একদিনের ইতেকাফ কাজা করতে হবে। আর তা পরের রমজানেও কাজা করা যাবে। এজন্য যে কোনো একদিন সূর্যাস্তের পর থেকে পরের দিন সূর্যাস্ত পর্যন্ত মসজিদে ইতেকাফ করবে। অবশ্য রমজানের বাইরে ইতেকাফ কাজা করতে চাইলে দিনের বেলা নফল রোজাও রাখতে হবে।
ইতেকাফ অবস্থায় মাসিক শুরু হলে: ইতেকাফ অবস্থায় কোনো নারীর মাসিক শুরু হলে তার ইতেকাফ ভেঙে যাবে। যেদিন মাসিক শুরু হলো, শুধু সেই একদিনের ইতেকাফ কাজা করে নেওয়া জরুরি।