বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. এম শামসুল আরফিনের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় চিকিৎসকের শাস্তির দাবি জানিয়েছে শেখ মেহবিশ জাহান নামে এক রোগীর স্বজনরা।
সোমবার (২৯ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে রোগীর স্বামী আহনাফ খান লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করে জানান, ‘অগ্নাশয়ের সিস্ট অপারেশন করতে গিয়ে রোগীর রক্তনালী কেটে ফেলেছেন বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. শামসুল আরেফিন। পরবর্তী সময়ে রোগীর রক্তপাত বন্ধের কোনও ব্যবস্থা না করেই তাকে আইসিইউতে পাঠিয়ে লাপাত্তা হন তিনি। পরে আরেক চিকিৎসকের অপারেশনে কোনো রকমে প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে রোগীর। তবে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তার পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।'
অভিযোগ করে তিনি আরও জানান, ‘সে শারীরিক এবং মানসিকভাবে গুরুতরভাবে আঘাত পেয়েছে। আমরা প্রাথমিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কয়েকটি উত্তর চেয়েছিলাম। যা আমরা পেতে ব্যর্থ হই। এছাড়াও হাসপাতাল থেকে কেউ আমাদের এই দুর্ঘটনার পরিপেক্ষিতে কথা বলতে আসেনি। আমরা যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাদের থেকে কোনও উত্তর পাইনি।’
সঠিক চিকিৎসা না পেয়েও সম্পূর্ণ বিল পরিশোধ করতে হয়েছে রোগীর পরিবারকে। অন্যথায় তারা রোগীকে ছাড়বে না বলে সাফ জানিয়ে দেন। এন্ডোস্কপির জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রথমে ৭০ হাজার টাকা মতো বিলের ধারণা দিলেও, সেই চিকিৎসা বাস্তবায়তনে ডা. আরফিন ব্যর্থ হন। তার ব্যর্থতার মাসুল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগী কাছ থেকে আদায় করে। যার পরিমাণ ৪ লাখ ৫৭ হাজার টাকা।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রোগীকে ৪০ হাজার টাকা ছাড় দিয়ে ৪ লাখ ১৭ হাজার টাকার চূড়ান্ত বিল ধরিয়ে দেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রোগী যেই রোগ নিরাময়ের জন্য ডা. এম শামসুল আরফিনের শরণাপন্ন হয়েছিলেন, সেই চিকিৎসা সে পায়নি। উল্টো ভুল চিকিৎসায় রোগীর মূল চিকিৎসা আরও ৬ মাস বিলম্বিত হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী রোগী শেখ মেহবিশ জাহানের আত্মীয় স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ স্পেশালাইজড হাসপাতালের পক্ষ থেকে রোগীর অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের পরিচালক ও সিইও আল ইমরান চৌধুরী জানান, অভিযোগ পাওয়ার পর তারা একটি কমিটি করেছেন তদন্ত করার জন্য। বুধবার (২৪ আগস্ট) রাত ৮টা পর্যন্ত কমিটি তদন্ত শেষ করে জানিয়েছে, ‘এখানে কোনও গাফেলতি ছিল না। এটি একটি কমপ্লিকেশন, যা সার্জারির কারণে হয়েছে।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত চিকিৎসক অধ্যাপক আরফিন জানান, ‘এমন একটা ঘটনার পর এটা স্বাভাবিক যে, পরিবার তাকেই অভিযুক্ত করবে, কেন এমন হলো। দুর্ভাগ্যবশত এমন কিছু হয়নি, রোগীর পরিবারও আর তার কাছে আসেনি। ১৫ আগস্ট তারা ডিসচার্জ হয়ে বাসায় যান। এর একদিন পর ফলোআপে আসেন ডা. ইমরুল সাহেবের কাছে। তবে যেভাবে তাদের বিষয়ে প্রচার করা হচ্ছে, সেটির সঙ্গে হাসপাতাল কতৃপক্ষের দ্বিমত আছে।’