6350

05/02/2024 বেশি দাম নিলেই মামলাঃ বাণিজ্যমন্ত্রী

বেশি দাম নিলেই মামলাঃ বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩১ আগস্ট ২০২২ ২১:০৭

ভোজ্যতেলের পাশাপাশি এবার চাল, ডাল, আটা, ময়দা, চিনি ও পেঁয়াজের মতো ভোগ্যপণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়া হবে। একই সঙ্গে অবকাঠামো খাতের অস্থিরতা কমাতে এমএস পণ্য বা রড এবং সিমেন্টের মতো পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। অর্থাৎ সরকারী এ ঘোষণা বাস্তবায়ন হলে আগামীতে ৯টি পণ্য নির্ধারিত দামে বিক্রি করতে হবে ব্যবসায়ীদের।

শুধু তাই নয়, নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত মূল্যে এসব পণ্য বিক্রি করা হলে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা করবে সরকার। এই পণ্যগুলোর দাম কী হওয়া উচিত তা নির্ধারণ করতে বাংলাদেশ ট্রেড এ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আমদানি মূল্য, দেশীয় উৎপাদন ও ব্যবসায়ীদের মুনাফা এসব বিষয় বিবেচনায় নিয়ে আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এসব দাম নির্ধারণ করে দেয়া হবে।

মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সচিবালয়ে বাজারে পণ্যের সরবরাহ, মজুদ ও আমদানি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জরুরী বৈঠকে বসেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বৈঠকে উল্লিখিত ৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সরকারী এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজি বন্ধ হবে। জিনিসপত্রের দাম ক্রেতাদের নাগালের মধ্যে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে।

তবে ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে কয়েক মাস ধরে ভোজ্যতেলের দাম নির্ধারণ করে দিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেই নির্ধারিত দামে বাজারে তেল পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ রয়েছে ভোক্তাদের। এ কারণে ৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করার পর সেটি যেন বাজারে বাস্তবায়ন হয় সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নেয়া বেশি জরুরী বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে যেসব অসাধু সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়িয়ে বাজার অস্থিরতায় জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার ওপরও জোর দেয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি ডিজেলসহ অন্যান্য জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর দ্রুত বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। ৪০ টাকা হালির ডিম একদিনের ব্যবধানে বিক্রি হয় ৬৫-৭০ টাকা। চালের কেজিতে দাম বাড়ে ১০ টাকার ওপরে। কাঁচামরিচ ৩০০ টাকা কেজি ছাড়িয়ে যায়। এছাড়া ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল ও সাবান-সোডার মতো পণ্যের দাম বাড়ে হু হু করে। দ্রব্যমূল্য নাগালের বাইরে গিয়ে নাভিশ্বাস ওঠে সাধারণ ভোক্তাদের।

মূলত ব্যবসায়ীদের অতি মুনাফা করার কারণে বাজারে এই সঙ্কট তৈরি হয় বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বৈঠক শেষে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, এতদিন ট্যারিফ কমিশন শুধু ভোজ্যতেল ও চিনির মূল্য নির্ধারণ করে দিত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে এই পণ্যগুলোর দাম অতিমাত্রায় বাড়ানো হয়েছে, যা হওয়া উচিত ছিল না।

বিষয়গুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধারাবাহিকভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে বাজারে স্থিতিশীলতা তৈরি করা যায়নি। এমন প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এই বৈঠকের আয়োজন করে।

নির্ধারিত দাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সরকার নির্ধারিত এই দাম কোন স্তরের ব্যবসায়ী পর্যায়ে লঙ্ঘিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানার পাশাপাশি আইনী ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। বর্তমানে মজুদ, কারসাজি কিংবা কৃত্রিম সঙ্কটের মাধ্যমে বাড়তি দাম রাখার ক্ষেত্রে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন বছর সশ্রম কারাদ-ের বিধান রয়েছে। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ মাঠপর্যায়ের দায়িত্বে থাকা সব সংস্থাকে স্পষ্ট বলে দেয়া হয়ছে, কোন ব্যবসায়ী কোন পণ্যে কারসাজি করলে কিংবা অযৌক্তিক দাম রাখলে, মামলা দিতে হবে।

সভাটি পরিচালনা করেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- বাংলাদেশ ট্রেড এ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপার্সন মোঃ মফিজুল ইসলাম, টিসিবির চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোঃ আরিফুল হাসান, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক এএইচএম সফিকুজ্জামান, এফবিসিসিআইয়ের প্রথম সহসভাপতি মোস্তফা আজাম চৌধুরী বাবু প্রমুখ।

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]