7009

03/29/2024 বিয়ের কিছু আজব রীতি

বিয়ের কিছু আজব রীতি

রকমারি ডেস্ক

২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০০:২১

বিয়ে! সেই কবে থেকে পৃথিবীতে চালু হওয়া একটি প্রথা। এক কথাতেই বিয়ে হয়ে যায় না, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাতে থাকে বহু নিয়মকানুন, আচার অনুষ্ঠান। বাঙালি বিয়েতে যেমন আশীর্বাদ, পাকা দেখা, গায়ে হলুদ থেকে ফুলশয্যা-কত কী নিয়ম! তেমনি পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে বিয়ে কেন্দ্রিক কত নিয়ম, প্রথা। যার বেশিরভাগের সঙ্গেই কিন্তু জুড়ে থাকে নিখাদ আনন্দ। কিন্তু পৃথিবীর নানা দেশে এমন সব বিয়ের আচার-অনুষ্ঠান, প্রথা রয়েছে, যেগুলির কথা শুনলে চোখ কপালে উঠে যাবে।

একেক জাতি বা দেশ একেক রকমের নিয়ম-নীতি অনুসরণ করে থাকে বিয়ের ক্ষেত্রে। সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিছু কিছু দেশে কিছু-কিছু এমন নিয়ম চালু রয়েছে, যা বিস্মিত করে দেওয়ার জন্যে যথেষ্ট। কোথাও বিয়ের এক মাস আগে থেকে কান্না শুরু করেন কনে ও তার বাড়ির নারীরা, কোথাও আবার বরকে বেঁধে মারধর করা হয়। কোথাও আবার ময়লা ফেলা হয় নবদম্পতির গায়ে।

চলুন আজ জেনে নেয়া যাক, পৃথিবীর অদ্ভূত কিছু বৈবাহিক রীতির বিষয়ে।

বরকে বেঁধে মারার রীতিঃ- বিয়ে হচ্ছে বাড়িতে, আর সেই বিয়েতে কিনা স্বয়ং বরকেই বেঁধে রাখা হচ্ছে। শুধু বেঁধে রাখাই নয়, রীতিমতো বেধড়ক মারধর করা হয় বরকে। অবাক হবেন না, কারণ পৃথিবীর বুকেই চালু রয়েছে এমন আজব রীতি। বিয়ে বাড়িতে এসে বরকে ধরে পেটানো দক্ষিণ কোরিয়ার একটি অংশে প্রাচীন প্রথা। এই প্রথা মেনে দক্ষিণ কোরিয়ার বিয়েতে বরকে মারার দায়িত্বটা মূলত বরের বন্ধুরাই নিয়ে থাকেন। বরের জুতো খুলে তার পায়ে দড়ি দিয়ে সজোরে মারতে থাকেন বন্ধুরা।

নব দম্পতির গায়ে ময়লা ফেলাঃ- বিয়ের সাজ নিয়ে মানুষের কত রকম পরিকল্পনা থাকে। বিয়ের বর কনের সাজ মানুষের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। অথচ এ এক অদ্ভূত রীতি। বিয়ের দিনই সম্ভবত বর ও কনে তাদের জীবনের শ্রেষ্ঠ সাজটা সাজতে চায়। কিন্তু পৃথিবীর বুকেই রয়েছে এমন বিয়ের রীতি, যেখানে বিয়েতে বর এবং বিশেষত কনের সাজ নষ্ট করা হয়ে থাকে। তার জন্য নেওয়া হয় অভিনব পদ্ধতিও। এই প্রথার আবার গালভরা নামও আছে- 'ব্ল্যাকেনিং'।

জানা যায়, স্কটল্যান্ডের একটা অংশে এই প্রথা মেনে চলা হয়। বহু বছর ধরেই নাকি চলে আসছে এই প্রথা। এই প্রথা অনুযায়ী, ফলের খোসা, শ্যাওলা এবং আরও নানারকম ময়লা দিয়ে একটা মিশ্রণ তৈরি করা হয়। এরপর সেই ময়লামিশ্রিত মিশ্রন বর-কনের সারা শরীরে ঢালা হয়। তারপর নব দম্পতিকে একটি গাছের সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ বেঁধে রাখা হয়। এতে নাকি দম্পতির জীবন সুখী হয়।

যত কান্না, ততই সুখের ঘরকন্যাঃ- বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার আগে নববধূ ও তার বাড়ির লোকজনের কান্নার দৃশ্য নতুন কিছু নয়। নিজের ঘর, মানুষজন ছেড়ে অন্য জায়গায় চলে যাওয়ার সময় কষ্ট থেকেই আসে সেই কান্না। বিয়ের আগে যেমন মেহেদি, গায়ে হলুদের মতো অনুষ্ঠানের রীতি থাকে, তেমনই চিনের তুজিয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে চালু রয়েছে আজব রীতি।

সেই রীতি অনুসারে তুজিয়া সম্প্রদায়ের কনেরা বিয়ের আগে থেকে কান্নার অনুষ্ঠান পালন করে। তাও আবার বিয়ের এক মাস আগে থেকে। প্রতিদিন এক ঘণ্টা করে কান্নাকাটি করতে হয় তাদের। কনে কান্না শুরু করার ঠিক ১০ দিন পর কনের মা তার সঙ্গে কান্নায় যোগ দেন। এর কিছুদিন পর থেকে যত মহিলা আত্মীয়রা আছেন, সকলেই একসঙ্গে কাঁদতে শুরু করেন। এতে নাকি কনের পরবর্তী জীবনে কান্না নয়, কেবলই থাকে হাসি।বাথরুমে গেলেই, বর-কনেকে বন্ধুরা চুমু খানঃ- এই রীতি যতটা না ঐতিহ্যের, তার থেকে বেশি বোধহয় মজার। তবে, এই মজা করতে গিয়ে কখনো কখনো মারাত্মক আকারও ধারন করতে পারে। সুইডেনে কিন্তু বহু বছর ধরে চালু রয়েছে এই রীতি।

এই প্রথা অনুযায়ী, সুইডেনে বিয়ের আসর ছেড়ে বর যদি একটু বাইরে বা বাথরুমে যান, তাহলে সঙ্গে সঙ্গে বরের বন্ধুরা কনেকে চুমু খেতে শুরু করেন। উলটোটাও অবশ্য রয়েছে, অর্থাৎ কনের বন্ধুদের ভাগ্যও খারাপ নয়। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, একইভাবে কনে যদি বিয়ের আসর থেকে একটু অন্য কোথাও যান, তাহলেই মুহূর্তের মধ্যে কনের বান্ধবীরা এসে বরকে চুম্বন করতে শুরু করেন।

অতিথিদের রাখা অবশিষ্ট খাবার খান নব দম্পতিরাঃ- ঘৃণ্য রীতিই বলা যেতে পারে। মূলত ফ্রান্সের বেশ কিছু জায়গায় এখনো চালু রয়েছে এই নিয়ম। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে অতিথিদের ফেলে দেওয়া সব খাবার সদ্য বিবাহিত বর-কনকে খেতে দেওয়া হয়। এই প্রথারও আবার গালভরা নাম রয়েছে। প্রথাটির নাম 'ট্র্যাশ পার্টি'। শুধু উচ্ছ্বিষ্ট খাবার নব দম্পতিকে খেতে দেওয়াই নয়, সমস্ত খাবার পরিবেশন করা হয় টয়লেট সিটের আকারের পাত্রে। আর বর-কনেকে সবার সামনে ওই পাত্র থেকেই খেতে হয় খাবার। শুধু তাই নয়, নব দম্পতি যখন ওই খাবার খান, তখন তাদের তা খেতে হয় সকলের সামনে। তবে, এখন এই নিয়মের সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। এখন প্রথা অনুযায়ী চকোলেট সস দেয়া হয় টয়লেট আকারের পাত্রে।

 

সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী
যোগাযোগ: রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল: [email protected], [email protected]