শুক্রবার, ৯ই মে ২০২৫, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩২


চট্টগ্রামে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শিশু খুন


প্রকাশিত:
৪ মে ২০২৩ ২১:৫০

আপডেট:
৯ মে ২০২৫ ১০:২৩

 ফাইল ছবি

চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে মো. শফিউল ইসলাম রহিম (১১) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (৩ মে) দিবাগত রাতে থানার পশ্চিম মোহরা গোলাপের দোকান তৌসিফের সেমিপাকা নির্মাণাধীন কলোনীর পূর্ব পাশের রুম থেকে বালি ও ইট দিয়ে চাপা অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানিয়েছে, মাত্র ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদেরকে হত্যা মামলা দায়ের করে আদালতে প্রেরণ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চান্দগাঁও থানার কাপ্তাই সড়কর চাঁন মিয়া ফকিরের বাড়ী মৃত আবুল কালামের ছেলে মো. আজম খান (৩২) ও পাঁচলাইশ থানার বিবিরহাট এলাকার মো. ইউসুফের ছেলে মুজিবুর দৌলা হৃদয় (২৮)।

পুলিশ জানায়, গত ২৯ এপ্রিল থানার পশ্চিম মোহরা চাঁন মিয়া ফকিরের বাড়ী এলাকা থেকে শফিউল ইসলাম নামে ওই শিশু নিখোঁজ হয়। শফিউল ওই এলাকার মো. সেলিম উদ্দিনের ছেলে। সে একটি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত। নিখোঁজের পর ইন্টারনেট ব্যবহার করে ওইদিন ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অজ্ঞাতনামারা। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা চান্দগাঁও থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন।

সূত্র ধরে নিখোঁজের এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্ত আজমকে শনাক্ত করা হয়। ওই দিনই নিখোঁজ শিশু ও আজমকে একসঙ্গে দেখা যায়। একপর্যায়ে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বুধবার আজমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে তিনি শিশু শফিউলকে হত্যার কথা স্বীকার করে। তার দেখানো মতে বুধবার দিবাগত রাতে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একই সঙ্গে অপহরণ এবং হত্যাকাণ্ডে সহযোগিতার অভিযোগে আজমের বন্ধু মুজিবুর নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, উদ্ধার শিশুর মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার দুজনের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুজনকে আজ (বৃহস্পতিবার) আদালতে প্রেরণ করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা যায় ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ না পেয়ে নিখোঁজের দিনই শিশু শফিউলকে হত্যা করা হয়।

গত বছরের ২৪ অক্টোবর চিপস কিনতে বের হয়ে নগরের কোতোয়ালি থানার জামালখান এলাকায় নিখোঁজ হয় ৭ বছর বয়সী শিশু মারজনা হক বর্ষা। এর তিন দিন পর একই এলাকার একটি নালা থেকে বর্ষার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জানায় ধর্ষণের পর বর্ষাকে হত্যা করা হয়।

একই বছরের ১৪ নভেম্বর নগরের ইপিজেড এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন আলিনা ইসলাম আয়াত (৫) নামে এক শিশু। মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যে তাকে অপহরণ করে প্রতিবেশী তরুণ আবীর আলী (১৯)। গ্রেপ্তারের পর আবীর জানায়, আয়াতকে খুনের পর লাশ ছয় টুকরো করে সাগরের পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছে।

সবশেষ গত ২১ মার্চ নগরের পাহাড়তলী থানা এলাকার আবিদা সুলতানা আয়নী (১০) নামে এক শিশু নিখোঁজ হয়। বিড়াল ছানা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মো. রুবেল (৩৫) নামে বাসার পাশের এক সবজি বিক্রেতা তাকে নিয়ে যায়। এরপর তাকে ওইদিন একটি বাসায় নিয়ে ধর্ষণের পর গলাটিপে হত্যা করে রুবেল। পরে বস্তা ভরে শিশুর মরদেহ ফেলে দেওয়া হয় পার্শ্ববর্তী একটি ডোবায়। পরে ২৯ মার্চ ভোর রাতে পিবিআইয়ের একটি টিম আয়নীর গলিত মরদেহ উদ্ধার করে। তিনটি ঘটনা চট্টগ্রামজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top