ভারী বৃষ্টিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, কক্সবাজারে লাখো মানুষ পানিবন্দি
 প্রকাশিত: 
 ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৬:৩৬
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৭:২৯
                                পাহাড়ি ঢল আর ভারী বৃষ্টিতে কক্সবাজারের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। জেলা সদরসহ নয় উপজেলার অধিকাংশ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় বন্যার আশঙ্কা করছে আবহাওয়া অধিদফতর। পাশাপাশি দেখা দিয়েছে পাহাড়ধসের শঙ্কাও। কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ ও নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
ভারী বৃষ্টিতে পর্যটন এলাকা কলাতলী, পৌর এলাকার অধিকাংশ ওয়ার্ড, চকরিয়া, পেকুয়া, কুতুবদিয়া, রামু, উখিয়া, টেকনাফ, ঈদগাঁও, কক্সবাজার সদরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এরই মধ্যে জেলা শহর ও উপজেলাগুলোর লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সড়ক-উপসড়কে পানি উঠে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। শহরের হাজারও বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ঢুকে নষ্ট হয়ে গেছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। কলাতলীতে অবস্থিত পাঁচ শতাধিক হোটেল মোটেলে অবস্থান নেওয়া পর্যটক আটকা পড়েছেন।
এছাড়া জেলার অন্যান্য উপজেলায় বন্যায় ক্ষতির মুখে পড়েছে বীজতলা, পানের বরজ এবং সবজি ক্ষেত। এসব এলাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন লাখো মানুষ।
কয়েকদিন ধরেই ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত আছে কক্সবাজারে। বিশেষ করে গত বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা থেকে শুক্রবার দুপুর ৩টা পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় মোট ৫০১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টিপাত।
এর আগে ২০১৫ সালে ৪৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল সর্বদক্ষিণের জেলাটিতে। ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতের রেকর্ডটি ১৯৮১ সালের। ওই বছরের ১৮ জুলাই নোয়াখালীতে ৫২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের হিসাব জানাচ্ছে আবহাওয়া অধিদফতর।
১৯৭৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন মৌলভীবাজার মহকুমার শ্রীমঙ্গলে ৫১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছিল। আর ১৯৮৩ সালের ৪ আগস্ট চট্টগ্রামে ৫১১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টিতে জেলার কয়েকটি উপজেলার নিম্নাঞ্চল ছাপিয়ে প্লাবিত হয়েছে কক্সবাজার শহরও। অনেক জায়গাতে রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। জেলা শহরের সড়কগুলোর কোথাও কোথাও হাঁটুপানিতে তলিয়ে আছে।
জেলা শহরের বাসিন্দা ফয়সাল বলেন, ভারী বৃষ্টিতে শহরের নালা-নর্দমা ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। নালা দিয়ে পানি নেমে যেতে না পারায় শহরজুড়ে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। সড়কের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ মানুষের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ভারী বৃষ্টিতে জনজীবনে যেমন দুর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছে তেমনি বিপাকে পড়েছেন পর্যটকরাও।
প্রসেনজিৎ রায় নামে এক পর্যটক জানান, তিনদিনের ভ্রমণের দুইদিনই হোটেলে বন্দি আছি। হোটেলের সামনের সড়কেও পানি উঠে গেছে, বৃষ্টির ঝাপটায় দরজা-জানালাও খোলা যাচ্ছে না।
আবাসিক হোটেল-মোটেলের জন্য পরিচিত কলাতলী এলাকার পথঘাট ডুবে থাকায় সব পর্যটকই এক রকম আটকা পড়েছেন।
এদিকে লঘুচাপের প্রভাবে ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের জেলাগুলোর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে বলে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। বৈরি আবহাওয়ার কারণে পর্যটকরা যেন সাগরে না নামেন সেজন্য সৈকতে লাল পতাকা দিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: