পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
 প্রকাশিত: 
 ২৬ অক্টোবর ২০২৪ ২০:০৭
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১২:৩২
                                সিরাজগঞ্জের তাড়াশে পুলিশের কাছ থেকে সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তারের সময় ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মো. ওমর আলী নামে তাড়াশ পৌর বিএনপির এক কর্মীর বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বেলা ১১টায় পৌর শহরের রঘুনীলি-মঙ্গলবাড়িয়া বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি তাড়াশ পৌর শহরের শোলাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মৃত. আব্দুল গণির ছেলে মো. ফিরোজকে (৪০) ধরতে তাড়াশ থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. মন্টু মিয়া সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে বেলা ১১টার দিকে রঘুনীলি-মঙ্গলবাড়িয়া বাজারে অভিযান চালায়। পুলিশ আসামির পরিচয় নিশ্চিত হতে জিজ্ঞাসাবাদ করেন এবং ফিরোজকে আটক করেন।
এ সময় চা দোকানে বসে থাকা পৌর বিএনপির নেতা (ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি প্রার্থী) মো. ওমর আলী ও আরেকজনের নেতৃত্বে ২০-২৫ জন বেআইনিভাবে পুলিশের কাজে বাধা দেন। মানবঢাল তৈরি করে আসামি ফিরোজকে ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন তারা।
অভিযুক্ত বিএনপি কর্মী মো. ওমর আলী বলেন, পুলিশ সিভিল পোশাকে আসামি ধরতে এসেছিল তাই আমি শুধু পুলিশের কাছে তাদের পরিচয় জানতে চেয়েছিলাম। তখন পুলিশ আসামির লুঙ্গি ধরে ছিল। এরমধ্যে লোকজন জমায়েত হলে আসামি ফিরোজ লুঙ্গি খুলে উলঙ্গ হয়ে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ মোবাইলের ক্যামেরা দিয়ে আমাদের ভিডিও করে নিয়ে যায়। আমাদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সত্য নয়। এমনকি আমি বিএনপির কোনো পদেও নেই।
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য তাড়াশ পৌর বিএনপির আহ্বায়ক তপন কুমার গোস্বামীর মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
তাড়াশ পৌর বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুল বারীক খন্দকার বলেন, ওমর আলী বিএনপি করলেও তার কোনো পদ নেই। তবে সে পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের নাকি সভাপতি প্রার্থী। এখন অনেকেই এমন প্রার্থী হচ্ছেন। এ ছাড়াও সে বলছে এমন কিছু নকি করেনি। তারপরও যেহেতু অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। দলীয় পদ থাকলে পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হতো, তার যেহেতু পদ নেই তাই অভিযোগের সত্যতা মিললে দলীয় ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে তাড়াশ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন বলেন, আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনা সত্য এবং এ ঘটনায় জড়িত থাকা ওমর আলী নামে একজনকে শনাক্ত করা গেছে। ছিনিয়ে নেওয়া আসামিকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। এ ছাড়াও আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জানা যায়, তাড়াশ পৌর শহরের শোলাপাড়া মহল্লার বাসিন্দা মৃত. আব্দুল গণির ছেলে মো. ফিরোজ (৪০) নাটোরের এক ব্যবসায়ীর কাছে বাকিতে মালামাল নিয়ে তাকে একটি ব্যাংকের চেক প্রদান করেন। কিন্তু ওই ব্যবসায়ী চেকটি ভাঙানোর জন্য ব্যাংকে জমা দিলে চেকদাতার অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা নেই বলে জানায় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। নিরুপায় হয়ে ওই ব্যবসায়ী নাটোর দেওয়ানী আদালতে তার পাওনা টাকার দাবিতে একটি মামলা দায়ের করেন। আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে আসামিকে আট লাখ ৯৩ হাজার ৮৭০ টাকা অর্থদণ্ড ও এক বছরের বিনাশ্রম সাজা প্রদান করেন। আসামি পলাতক থাকায় আদালত তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। সেই আসামিকেই আজ ধরতে যায় পুলিশ।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: