ভিজিএফের কার্ড নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি কর্মী খুন, নেতা আটক
প্রকাশিত:
৩ জুলাই ২০২৫ ১৩:১৬
আপডেট:
৩ জুলাই ২০২৫ ১৮:৪৬

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সরকারি সহায়তার (ভিজিএফ) কার্ডের অনলাইন আবেদন ও চাঁদা আদায় নিয়ে বিরোধের জের ধরে বিএনপির কর্মী আব্দুল আজিজ (৩৫) হত্যার ঘটনায় দলের আরেক কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার (২ জুলাই) রাতে হত্যাকাণ্ডের কয়েক ঘণ্টার পর তাকে আটক করা হয়।
আটক ব্যক্তির নাম মাহাবুল মাস্টার (৫২)। র্যাব ও পুলিশ তাকে আটক করে। মাহাবুল মাস্টার মথুরাপুর কলেজপাড়া এলাকার মৃত মৌলা বক্সের ছেলে। তিনি বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত। গত ১১ জুন অনুষ্ঠিত মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি নির্বাচনে সাধারণ সম্পাদক পদে ‘মোরগ’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি হেরে যান।
এর আগে বুধবার (২ জুলাই) রাত ১০টার দিকে উপজেলার মথুরাপুর স্কুল বাজারে ভিজিএফের কার্ড নিয়ে বিএনপির দুই কর্মীর দ্বন্দ্বের জেরে আব্দুল আজিজ নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন।
নিহত আব্দুল আজিজ (৩০) দৌলতপুর উপজেলার মথুরাপুর গ্রামের ইলু আলীর ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করতেন।কলেজপাড়া এলাকার রফিকুল আকরামের ছেলে। তিনি বিএনপির কর্মী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মথুরাপুর কলেজপাড়া এলাকার রফিকুল ইসলামের ছেলে পলাশের সঙ্গে আব্দুল আজিজের দীর্ঘদিন ধরে ভিজিএফ কার্ডের অনলাইন আবেদন ও চাঁদা আদায়কে ঘিরে বিরোধ চলছিল। ঘটনার রাতে আজিজ স্কুল বাজার এলাকায় অবস্থান করছিলেন। এ সময় পলাশের ছুরিকাঘাতে আজিজ গুরুতর আহত হন। স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করলে পথেই তার মৃত্যু হয়। অভিযুক্ত পলাশ আটক মাহাবুল মাস্টারের ভাতিজা।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পরপরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন এবং মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
মথুরাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি সুরাত আলী সেন্টু বলেন, মাহাবুল মাস্টার আমাদের রাজনৈতিক দলের সক্রিয় সদস্য এবং সাম্প্রতিক নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি কমিটির কোনো পদে নেই। তবে তাকে আটক করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে নিশ্চিত নই।
দৌলতপুর উপজেলা বিএনপির নেতা ও স্থানীয় বাসিন্দা ফরজুল্লাহ বলেন, রাত আনুমানিক ১০টার দিকে মথুরাপুর স্কুল বাজারে আজিজকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেছে পলাশ। ভিজিএফের কার্ড দেওয়ার কথা বলে আজিজের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছিলেন পলাশ। কিন্তু অনলাইনে চেক করে দেখা যায় আজিজের কার্ড হয়নি। এনিয়ে আজিজের সঙ্গে পলাশের দ্বন্দ্ব ও বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে পলাশ ছুরি দিয়ে আজিজের পেটে আঘাত করে। এতে আজিজের মৃত্যু হয়। নিহত আজিজ ও অভিযুক্ত পলাশ স্থানীয় বিএনপি কর্মী। বিএনপি নেতা মাহাবুল মাস্টারের গ্রুপের রাজনীতি করে পলাশ। বিএনপি নেতা মাহাবুল মাস্টারের সমর্থক পলাশ।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা বলেন, ‘ভিজিএফের কার্ডের অনলাইন আবেদন নিয়ে বিরোধ থেকেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। ঘটনার পরপরই র্যাব-পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে মাহাবুল মাস্টারকে আটক করে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছে। আটক ব্যক্তিকে আজ আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে।
কুষ্টিয়া র্যাব-১২-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার বিজ্ঞপ্তিতে জানান, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডটি ঘটে। আটক মাহাবুল মাস্টারকে দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: