টিকটকের পরিচয়ে প্রেম, মাদারীপুরে এসে বিয়ে করলেন চীনা যুবক
প্রকাশিত:
২৯ জুলাই ২০২৫ ১৮:৩৬
আপডেট:
৩০ জুলাই ২০২৫ ০৬:৪২

মাদারীপুরের এক কলেজছাত্রীর প্রেমে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন চীনের নাগরিক সিতিয়ান জিং। প্রেমের টানে ছুটে এসে বিয়েও করেছেন কলেজছাত্রী সুমাইয়া আক্তারকে। বর্তমানে নবদম্পতি মাদারীপুরে অবস্থান করছেন।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুর সদর উপজেলার পাচখোলা ইউনিয়নের উত্তর মহিষেরচর এলাকার সাইদুর মুন্সি ও ইয়াসমিন বেগম দম্পতির মেয়ে সুমাইয়া (১৯)। সে মাদারীপুর শহরের সরকারী সুফিয়া মহিলা কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী। এদিকে চীনের সাংহাই শহরের সি জিং নিং ও মা ওয়াং ইং দম্পতির ছেলে সিতিয়ান জিং (২৬)। সাংহাই শহরে সিতিয়ানের রেস্টুরেন্টের ব্যবসা আছে।
প্রেমের গল্প শুনতে গিয়ে জানা গেছে, সিতিয়ানকে প্রথম টিকটকে দেখে ভালো লেগে যায় সুমাইয়ার। এরপর ইউটার্চের মাধ্যমে তাদের মধ্যে কথা চালাচালি হয়। দুজনই সফটওয়ারের মাধ্যমে লেখা অনুবাদ করে মনের কথা একে অন্যকে জানাতো। সুমাইয়ার সঙ্গে মাত্র চার মাস প্রেম করে বাংলাদেশে চলে এসেছেন সিতিয়ান। গত ২৪ জুলাই চীন থেকে ঢাকায় আসেন তিনি। এরপর গত ২৬ জুলাই মাদারীপুর মহিষেচরের সুমাইয়ার বাড়িতে আসেন তিনি। সুমাইয়া, সুমাইয়ার বাবা সাইদুল মুন্সি ও আরও দুই আত্মীয় মিলে ঢাকা থেকে তাকে মাদারীপুরে নিয়ে আসেন। এরপর ২৭ জুলাই সিতিয়ান ও সুমাইয়া বিয়ে করেন।
সুমাইয়া আক্তার বলেন, টিকটক দেখে আমি ওর ভক্ত হই। এরপর ইউটার্চের মাধ্যমে আমাদের কথা বলা শুরু হয়। কথা বলতে বলতে আমরা একে অন্যের প্রেমে পড়ে যাই। কিন্তু মাত্র চার মাসের প্রেমের সূত্র ধরে চীন থেকে সিতিয়ান বাংলাদেশ আমার কাছে চলে আসবে, তা কখনও ভাবিনি। ও প্লেনে উঠার সময় বলেছে, আমি বাংলাদেশে আসতেছি। কিন্তু আমি বিশ্বাস করেনি। যখন ইন্ডিয়া এসে আমাকে জানায়, তখন বিশ্বাস করেছি। ও তার মা-বাবাকে আমার কথা বলেছে। ওরাও মুসলিম। ওর মা বলেছেন, আমাকে বিয়ে করে চীনে নিয়ে যেতে। তাই সিতিয়ান বাংলাদেশে এসে আমাকে বিয়ে করেছে। এরই মধ্যে পাসপোর্ট করতে দিয়েছি। ও এক মাস বাংলাদেশে থাকবে। এরই মধ্যে আমার সব কাগজপত্র রেডি করা হবে। তারপর ও আমাকে চীনে নিয়ে যাবে। আমিও চীনে যাবার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি।
বাংলা ভাষায় কথা বলতে না পারায় মোবাইল ফোনে অনুবাদ করে কথা আদানপ্রদান করেন সিতিয়ান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আমার ভালো লেগেছে। তবে অনেক গরম। আর অনেক মানুষ আমাকে দেখতে আসে, তাই আমার ভয় লাগে। আমি ভালোবেসে চীন থেকে এখানে এসেছি। সুমাইয়াকে বিয়ে করেছি। এখন ওর কাগজপত্র রেডি করে চীনে নিয়ে যাবো। আমার পরিবার সব জানে। তারাই সুমাইয়াকে চীনে নিয়ে যেতে বলেছেন।
সুমাইয়ার বাবা সাইদুল মুন্সি বলেন, আমার মেয়ের সাথে চীনের নাগরিক সিতিয়ান জিং এর মোবাইলে প্রেম হয়। এরপর সে বাংলাদেশে এসে আমার মেয়েকে বিয়ে করেন। এখন সে আমাদের এখানেই আছে। ও খুব ভালো। খুবই অমায়িক। কোনো অহংকার নেই। এক মাস থাকবে এবং আমার মেয়েকে নিয়ে যাবে। এতে আমরা খুব খুশি।
পাচখোলা ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. রুবেল হাওলাদার বলেন, কয়েকদিন আগে চীন থেকে এক ছেলে এখানে এসেছেন। তার সাথে আমাদের এলাকার সুমাইয়ার বিয়ে হয়। প্রথমে কোর্টের মাধ্যমে বিয়ে হয়েছে। পরে সামাজিকভাবে গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে বিয়ে হয়। শুনেছি চীনে ওই ছেলের ব্যবসা আছে। কিছুদিনের মধ্যে সুমাইয়াকেও চীনে নিয়ে যাবে।
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: