কাতারে ইসরায়েলি হামলা নিয়ে ট্রাম্প–নেতানিয়াহুর উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়
প্রকাশিত:
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১০:১৭
আপডেট:
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:১১

কাতারে হামাস নেতাদের ওপর সম্প্রতি ইসরায়েলের চালানো হামলা নিয়ে ফোনালাপে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে জড়িয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
অন্যদিকে হামলার এ ঘটনায় কাতার আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলে আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। মার্কিন গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর মধ্যে কাতারে ইসরায়েলি হামলা নিয়ে উত্তপ্ত ফোনালাপ হয়েছে। প্রভাবশালী মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ট্রাম্প এই হামলার ঘটনায় নেতানিয়াহুর প্রতি নিজের “তীব্র হতাশা” প্রকাশ করেন।
মার্কিন প্রশাসনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে বলেন— দোহায় হামাসের রাজনৈতিক নেতাদের লক্ষ্যবস্তু করা ছিল “অবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ”। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে আরও জানান, মার্কিন সামরিক বাহিনী থেকে তিনি এই হামলার খবর পান, অথচ ইসরায়েল আগে থেকে কিছু জানায়নি। এর মাধ্যমে হামলা চালানো হলো এমন এক মিত্র দেশের ভূখণ্ডে, যারা গাজায় যুদ্ধ শেষ করতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করছে।
নেতানিয়াহু এর জবাবে বলেন, হামলার সুযোগের সময়সীমা খুবই কম ছিল, তাই তিনি সেটিই কাজে লাগান।
পরে উভয়ের মধ্যে আরেক দফা ফোনালাপ হয়, যা তুলনামূলকভাবে সৌহার্দ্যপূর্ণ ছিল। এতে ট্রাম্প জানতে চান হামলা সফল হয়েছে কিনা, তবে নেতানিয়াহু নিশ্চিত উত্তর দিতে পারেননি। পরে হামাস জানায়, তাদের নেতৃত্ব ওই হামলা থেকে বেঁচে গেছে। তবে সংগঠনের পাঁচ সদস্য ও এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন।
ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল আরও জানিয়েছে, ইসরায়েলের ঘনিষ্ঠ সমর্থক হিসেবে পরিচিত ট্রাম্প ক্রমেই নেতানিয়াহুর ওপর বিরক্ত হয়ে উঠছেন। কারণ, নেতানিয়াহু বারবার যুক্তরাষ্ট্রকে না জানিয়ে একতরফা আগ্রাসী পদক্ষেপ নিচ্ছেন, যা ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য–সংক্রান্ত লক্ষ্যগুলোর সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
এর আগে কাতারে হামলা নিয়ে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, তারা “হামাসের শীর্ষ নেতৃত্বকে লক্ষ্য করে সুনির্দিষ্ট হামলা” চালিয়েছে।
অন্যদিকে কাতার এ হামলাকে “কাপুরুষোচিত কাজ” এবং আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন আখ্যা দিয়ে নিন্দা জানিয়েছে। তারা সতর্ক করে বলেছে, ইসরায়েলের “বেপরোয়া আচরণ” আর সহ্য করা হবে না।
উপসাগরীয় রাষ্ট্র কাতার, যুক্তরাষ্ট্র ও মিসর একসঙ্গে গাজা যুদ্ধ শেষ করতে মধ্যস্থতার ভূমিকা পালন করে আসছে। ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ২০২৩ সারের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল–থানি বুধবার সিএনএনকে বলেন, দোহায় ইসরায়েলি হামলার জবাবে আঞ্চলিক প্রতিক্রিয়া প্রস্তুত হচ্ছে। তিনি জানান, এ নিয়ে আরব ও ইসলামী দেশগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে।
তিনি বলেন, “এই অঞ্চল থেকে অবশ্যই প্রতিক্রিয়া আসবে। এটি বর্তমানে আমাদের মিত্র দেশগুলোর সঙ্গে পরামর্শ ও আলোচনার পর্যায়ে আছে।”
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: