মঙ্গলবার, ১৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১লা আশ্বিন ১৪৩২


বিদেশে ফিলিস্তিনি নেতাদের ওপর আরও হামলার ইঙ্গিত নেতানিয়াহুর


প্রকাশিত:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১২:০৪

আপডেট:
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৪:০৫

ছবি : সংগৃহীত

বিদেশে অবস্থানরত হামাস নেতাদের টার্গেট করে আরও হামলা চালানো হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই ইঙ্গিত দেন।

গত সপ্তাহে কাতারে চালানো হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, হামাস নেতারা “যেখানেই থাকুক না কেন, তাদের জন্য কোনো নিরাপত্তা বা দায়মুক্তি থাকবে না”। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

সোমবার জেরুজালেমে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে নেতানিয়াহু দাবি করেন, “প্রতিটি দেশেরই নিজেদের সীমানার বাইরে গিয়ে আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।”

এদিকে কাতারের মাটিতে হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েলের হামলা চালানোকে ঘিরে আন্তর্জাতিক মহলে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই হামলার তীব্র সমালোচনা করেছেন। হামাস জানিয়েছে, এ ঘটনায় ছয়জন নিহত হলেও তাদের শীর্ষ নেতারা বেঁচে গেছেন।

হোয়াইট হাউস সম্প্রতি জানিয়েছিল, ট্রাম্প কাতারকে আশ্বস্ত করেছেন যে তাদের মাটিতে এমন হামলার ঘটনা আর ঘটবে না। তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নে নেতানিয়াহু সাফ বলেন, “আমরাই (এই হামলা) করেছি। একেবারেই একা।”

এদিকে এই হামলার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের আঞ্চলিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কি না জানতে চাইলে রুবিও বলেন, ওয়াশিংটন উপসাগরীয় মিত্রদের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক বজায় রেখেছে। যদিও উত্তেজনার আবহে তিনি ইসরায়েলকে “সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য মিত্র” বলে অভিহিত করেন।

অন্যদিকে আরব নেতারা কাতারের প্রতি সংহতি জানাতে শীর্ষ সম্মেলন করছেন। কাতারের প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে “দ্বৈত মানসিকতা” পরিহার করে ইসরায়েলকে শাস্তি দেওয়ার আহ্বান জানান।

তবে ট্রাম্প পরে সাংবাদিকদের বলেন, নেতানিয়াহু “কাতারে আর হামলা চালাবেন না”। কাতারে একটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন ঘাঁটি রয়েছে এবং দেশটি দীর্ঘদিন ধরে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতা করছে। ২০১২ সাল থেকে হামাসের রাজনৈতিক দপ্তরও সেখানেই অবস্থিত।

মার্কো রুবিও ইসরায়েল সফর শেষে কাতারেও যাবেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের এক কর্মকর্তা।

রোববার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নেতানিয়াহু বলেন, যুক্তরাষ্ট্র-ইসরায়েল সম্পর্ক “পশ্চিমা প্রাচীরের পাথরের মতো অটল”। রুবিওর সঙ্গে তিনি জেরুজালেমের পুরোনো শহরে অবস্থিত ঐতিহাসিক সেই স্থাপনা পরিদর্শনও করেন।

তবে নেতানিয়াহু ও রুবিওর বৈঠকে গাজার সামরিক পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। স্থানীয় গণমাধ্যম জানায়, ইসরায়েলি সেনারা গাজা সিটির আবাসিক ভবন ধ্বংস অব্যাহত রেখেছে এবং পশ্চিমাঞ্চলে স্থল অভিযানের প্রস্তুতিও নিচ্ছে। সেনারা ইতোমধ্যে বাসিন্দাদের দক্ষিণে চলে যেতে নির্দেশ দিয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাদের হিসাব মতে, প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার মানুষ সরে গেছে, যদিও আরও বহু মানুষ শহরে রয়ে গেছেন।

গাজার ফিলিস্তিনিদের অনেকেই অভিযোগ করছেন, দক্ষিণও নিরাপদ নয় কারণ সেখানেও হামলা হচ্ছে। অন্যরা বলছেন, আশ্রয়ের জায়গা বা যাতায়াতের টাকা না থাকায় তারা আটকে আছেন। হাফেজ হাবুস নামে একজন বাসিন্দা বলেন, “দক্ষিণে যেতে চালকেরা ৩০০ শেকেল ভাড়া চান। কিন্তু আমাদের হাতে তো খাবারের টাকাই নেই, যাব কীভাবে?”

এমন অবস্থায় জাতিসংঘ সতর্ক করে বলেছে, দুর্ভিক্ষপীড়িত এলাকায় আরও বড় হামলা চালানো হলে পরিস্থিতি “অধিকতর ভয়াবহ বিপর্যয়ে” পরিণত হবে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top