নজর নোবেল শান্তি পুরস্কারে
জাতিসংঘে ‘শান্তিদূতের’ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে চান ট্রাম্প
প্রকাশিত:
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৯:৫০
আপডেট:
২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২১:৩১

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে ‘বিশ্বায়নবাদী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে’ আক্রমণ করে ভাষণ দিতে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে হোয়াইট হাউস। একই সঙ্গে বর্তমান বিশ্বের জন্য তার দৃষ্টিভঙ্গিও তুলে ধরবেন বলে মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভাষণে বিশ্বব্যাপী মার্কিন শক্তির ‘পুনর্জাগরণ’ এবং মাত্র আট মাসে সাতটি বৈশ্বিক যুদ্ধ ও সংঘাতের সমাপ্তিসহ তার ‘ঐতিহাসিক সব সাফল্য’ তুলে ধরবেন।
ট্রাম্পের বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্রের পূর্বাঞ্চলীয় সময় সকাল ৯ টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ৭ টা ৫০ মিনিট) শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। জাতিসংঘের দীর্ঘদিনের প্রচলিত রীতির অংশ হিসেবে সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রথমে ভাষণ দেবেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা।
এরপর দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বের অন্যান্য নেতারা সপ্তাহজুড়ে বক্তব্য রাখবেন এবং বৈঠক করবেন।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিতে বর্তমানে নিউইয়র্কে শতাধিক দেশের প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রপ্রধানরা উপস্থিত হয়েছেন। বিশ্ব নেতাদের উপস্থিতিতে সাধারণ পরিষদের বিতর্কে ২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো অংশ নিচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি বলেছেন, ট্রাম্প বিশ্বজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তির পুনর্জাগরণের কথা তুলে ধরে ভাষণ দেবেন। ক্যারোলিন লেভিট বলেন, “প্রেসিডেন্ট তার ভাষণে কীভাবে বিশ্বায়নবাদী প্রতিষ্ঠানগুলো বিশ্বব্যবস্থাকে উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সেই বিষয়ে কথা বলবেন। পাশাপাশি তিনি বিশ্বের জন্য নিজের গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গিও উপস্থাপন করবেন।
এদিকে, ফিলিস্তিনকে কেন্দ্র করে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের বিষয়ে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে সোমবার এক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সম্মেলনের পর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ইস্যু এবারে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যদিও ফ্রান্স-সৌদি আরবের আয়োজিত ওই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নেয়নি। এছাড়া প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আজকের ভাষণে ফিলিস্তিন ইস্যুতে কোনও মন্তব্য করবেন কি না, সে বিষয়ে লেভিট কিছু জানাননি।
• নোবেল পুরস্কারকে সামনে রেখে ‘শান্তিদূতের’ ভাবমূর্তি তুলে ধরতে পারেন
ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে দেওয়া আসন্ন ভাষণ নিয়ে মন্তব্য করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ইস্ট লন্ডনের মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতির অধ্যাপক জন স্ট্রসন। তিনি মনে করেন, ট্রাম্প তার বক্তব্যে নিজেকে একজন ‘শান্তিদূত’ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারেন। বিশেষ করে তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, ভারত-পাকিস্তান এবং আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় তার দাবি করা ভূমিকার কথা তুলে ধরবেন।
স্ট্রসন বলেন, ট্রাম্প সম্ভবত নিজেকে মহান শান্তি-স্থাপনকারী হিসেবে তুলে ধরবেন। তবে বাস্তবতা হলো, তিনি ইউক্রেন ও গাজার মতো বড় সংঘাতগুলো এড়িয়ে যেতে চাইবেন। কারণ এসব জায়গায় ট্রাম্প প্রশাসনের কোনও সাফল্য নেই।
তিনি বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কারের প্রচারণার আবহে আছেন ট্রাম্প। তাই আমার ধারণা, তার ভাষণের মূল বক্তব্য সেই পুরস্কার জেতার লক্ষ্যকে ঘিরেই আবর্তিত হবে।
যদিও এর আগে, চলতি মাসের শুরুর দিকে ট্রাম্প নোবেল শান্তি পুরস্কার জয়ের ইচ্ছা প্রকাশকে গুরুত্বহীন বলে দাবি করেছিলেন। আগামী ১০ অক্টোবর নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি এ বছরের নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করবে।
সূত্র: বিবিসি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: