গণভোট ইস্যুতে খুব দ্রুতই ফয়সালা আসবে : আসিফ নজরুল
প্রকাশিত:
৩০ অক্টোবর ২০২৫ ২০:৪৬
আপডেট:
৩০ অক্টোবর ২০২৫ ২৩:৩১
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, গণভোট নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র বিরোধ দেখা যাচ্ছে। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবে। তবে খুব দ্রুতই ফয়সালা আসবে।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ কথা বলেন তিনি।
আইন উপদেষ্টা বলেন, ২৭০ দিন আলাপ আলোচনার করার পর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই অনৈক্য হতাশাজনক। আগে বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন গণভোট নিয়ে দ্বিমত তৈরি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দলগুলোও উত্তেজিত ভূমিকা পালন করছে। এ সময় অনৈক্যের বিষয়ে উপদেষ্টা পরিষদে আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল এককভাবে তাদের সিদ্ধান্ত সরকারের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে জুলাইয়ের চেতনা কোথায় থাকে? যে যা বলুক, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হবে। তবে ভোটের পরিবেশ ঠিক রাখার দায়িত্ব শুধু সরকারের নয়, দলগুলোরও দায়িত্ব রয়েছে।
আসিফ নজরুল বলেন, উনাদের (রাজনৈতিক দল) তো আসলে ঐকমত্য হয় নাই। কিছু ভাইটাল (গুরুত্বপূর্ণ) প্রশ্নে এর আগে আমরা জেনেছিলাম কন্টেন্ট নিয়ে বিরোধ ছিল, যে সংস্কার হবে সেই বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন আবার দেখলাম আরও দুই ধরনের বিরোধ তৈরি হয়েছে; একটা হচ্ছে আপনার এটা (জুলাই সনদ) কী পদ্ধতিতে পাস করা হবে, আরেকটা হচ্ছে এই জন্য গণভোট হলে– তা কবে হবে।
তিনি বলেন, (রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধ) এত দৃঢ় এবং পরস্পর বিরোধী। কী বলব? যে উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো, যারা জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল, আপনারা যদি এরকম একটা ভূমিকা নেন, তাহলে সরকার কী করবে? আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না।
আইন উপদেষ্টা বলেন, এতদিন আলোচনার পর যদি আপনাদের ঐকমত্য না আসে, এখন আমরা আসলে কীভাবে কী করব এটা নিয়ে সত্যি আমাদের একটু চিন্তা করতে হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (আজ) উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনৈক্যের বিষয়গুলো একটা হচ্ছে- আপনারা জানেন ঐকমত্য কমিশন দুটি বিকল্প দিয়েছে। একটা হচ্ছে আপনার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ তারপর গণভোট; তারপরে ২৭০ দিনের মধ্যে না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে। তো এরকম কোনো নজীর আছে কিনা বা এটা আদৌ সম্ভব কিনা– এটা আমরা দেখবো। আরেকটা হচ্ছে এই দায়দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া। এই দুইটা বিকল্পের মধ্যে কোনটা আসলে বেশি গ্রহণযোগ্য, সেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে। আর গণভোট কবে হবে ওটা নিয়ে তো বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এসব ব্যাপারে একটা সময় আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা নেতৃত্বে আমরা থাকব। আমরা উনাকে সহায়তা করার জন্য থাকব। সিদ্ধান্ত, এটা কোনো পার্টিকুলার কেউ নেবে না। এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন। এই সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টা নেবেন। আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন হলে উনি পরামর্শ করবেন এবং আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব, সেখানে আমরা দৃঢ় থাকব। সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর আল্টিমেটাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি এককভাবে তাদের অবস্থান নেওয়ার জন্য আমাদেরকে আল্টিমেটাম বেঁধে দেয় বা জোর করে। তার মানে হচ্ছে উনাদের মধ্যে ঐকমত্য নাই এবং উনারা চাচ্ছেন উনাদের দলীয় পজিশনটা যেন এই সরকার আপহোল্ড (সমুন্নত) করে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। উনাদেরকে তো যথেষ্ট আলোচনার সময় দেওয়া হয়েছে। উনারা যে অনৈক্য দেখাচ্ছেন, জুলাই স্পিরিটকে উনারা কোথায় নিয়ে গেছেন– এটা উনাদের বিবেচনা করা উচিত।
অন্য এক প্রশ্নের জবাবে আসিফ নজরুল বলেন, আমরা তো কমিশনের সুপারিশ নিয়েছি, সুপারিশটা আমরা কীভাবে বাস্তবায়ন করব সেখানে সরকারের স্বাধীনতা রয়েছে। এটা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: