বুধবার, ১৮ই জুন ২০২৫, ৪ঠা আষাঢ় ১৪৩২


তারেক রহমানের অপেক্ষায় গুলশানের ‘১৯৬’ নম্বর বাড়ি!


প্রকাশিত:
১৮ জুন ২০২৫ ১৪:০৩

আপডেট:
১৮ জুন ২০২৫ ১৯:৫১

ছবি সংগৃহীত

১৭ বছর ধরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সহসাই দেশে ফিরবেন এমন আলোচনা আছে দলের ভেতর-বাইরে। বিশেষ করে নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা হলেই তার দেশে আসার সম্ভাবনার কথা জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে। তবে দেশে ফিরে গুলশানে ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’তে মায়ের সঙ্গে থাকবেন নাকি আলাদা বাসায় থাকবেন তা নিয়েও আলোচনা ছিল। তবে ইতোমধ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে, দেশে ফিরে গুলশান-২ এর অ্যাভিনিউ রোডের ১৯৬ নম্বর বাড়িতে উঠবেন সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বড় ছেলে তারেক রহমান।

জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নামে ১৯৮১ সালে তৎকালীন সরকার রাজধানীর গুলশান এলাকায় দেড় বিঘা জমির ওপর নির্মিত এই ডুপ্লেক্স বাড়ি বরাদ্দ দেয়। এতদিন বাড়িটির নামজারি করা হয়নি। তবে লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফেরার পর রাজউকের পক্ষ থেকে জমির নামজারিসহ সব ধরনের কাগজ প্রস্তুত করে খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাড়িটি আগে ভাড়ায় ব্যবহার করতো মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ।

জানা গেছে, ছয় মাস আগে বাড়িটি ছেড়ে দিয়েছে কোম্পানিটি। এরপর এটি তারেক রহমানের থাকার উপযোগী করে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা হয়েছে। বাড়িটি এখন পুরোপুরি প্রস্তুত বলেই তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো নিশ্চিত করেছে।

বাড়িটি খালেদা জিয়ার বাসা গুলশানের ‘ফিরোজা’র কাছে তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত করা বাড়ি। এর বাইরে ঢাকা সেনানিবাসের ভেতরও আরেকটি বাড়ি খালেদা জিয়াকে বরাদ্দ দেয়া হয়েছিল। তবে বিগত আওয়ামী লীগ সরকার সেনানিবাসের বাড়িটির বরাদ্দ বাতিল করে সেখান থেকে উচ্ছেদ করা হয় বেগম জিয়াকে।

২০১০ সালের ডিসেম্বরে শহীদ মঈনুল হোসেন রোডের বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পর খালেদা জিয়া কিছুদিন ভাই শামীম এস্কান্দারের বাড়িতে ছিলেন। ২০১২ সালে ২১ এপ্রিল ‘ফিরোজা’য় উঠেন তিনি।

জানা গেছে, তারেক রহমানের জন্য প্রস্তুত করার বাড়ির ভেতরটাও অত্যন্ত নান্দনিকভাবে সাজানো হয়েছে। বাড়িতে মূল ভবন, সুইমিং পুল ছাড়াও সামনে অনেক খোলা জায়গা রয়েছে। সাদা রঙের বাড়িটি গত কয়েকমাস ধরে সাজানোর কাজ চলে। ইতোমধ্যে পুরো প্রস্তুত করা হয়েছে বাড়ির সাজসজ্জার কাজ। তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানও লন্ডনে যাওয়ার আগে বাড়িটি পরিদর্শন করে গেছেন।

ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৭ সালের ৭ মার্চ তারেক রহমানকে গ্রেফতার করা হয়। পরের বছর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর জামিনে মুক্তি পেয়ে ১১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসার জন্য সপরিবারে লন্ডন যান তিনি। তখন থেকেই লন্ডনে অবস্থান করছেন তারেক রহমান। লন্ডনে থাকাকালে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া দুদকের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে যাওয়ার পর দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন ‘সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান’ তারেক রহমান। এরপর সেখান থেকেই দল পরিচালনা করছেন তিনি।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে তারেক রহমানের অনুপস্থিতিতে পাঁচ মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়। দায়ের করা হয় প্রায় শতাধিক মামলা।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আইনি প্রক্রিয়ায় আদালতের মাধ্যমে একে একে সাজাপ্রাপ্ত সব মামলায় খালাস পান তিনি। একই প্রক্রিয়ায় অন্য সব মামলা থেকেও মুক্ত হন। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে ফিরতে কোনো অসুবিধা নেই বলে গত কয়েকদিন আগে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘শিগগিরই’ দেশে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

এমন অবস্থায় বিএনপির নেতাকর্মীদের অপেক্ষা কবে দেশে ফিরবেন তারেক রহমান। দলের আগামী দিনের কান্ডারির দেশে ফেরা নিয়ে নেতাকর্মীদের কৌতূহলের শেষ নেই।

গত কয়েকদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা চলছে যে তিনি আগামী ৫ আগস্টের আগেই দেশে ফিরতে পারেন। তবে সুনির্দিষ্ট করে এখনো কেউ কিছু এ ইস্যুতে বলতে পারছেন না।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top