বিএনপির মামলায় আসামি তালিকায় নেই ইসি রাশেদা, যা বললেন বাদী
প্রকাশিত:
২৪ জুন ২০২৫ ১৬:৫৯
আপডেট:
২৫ জুন ২০২৫ ০৩:২২

আওয়ামী লীগ আমলে অনুষ্ঠিত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অনিয়ম-কারচুপির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক তিন প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ সকল নির্বাচন কমিশনের নামে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু আসামির তালিকা থেকে বাদ পড়েছে ২০২৪সালের নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদ সুলতানার নাম। বিষয়টি নিয়ে শোরগোল শুরু হলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয় ‘টাইপিং মিসটেকের’ কারণে এই ইসির নাম বাদ পড়েছে। তার নাম উল্লেখ করে তথ্য পাঠানো হচ্ছে সংশ্লিষ্ট থানায়।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা ও বিএনপির মামলার সমন্বয়কারী সালাহউদ্দিন খান এমনটা জানিয়েছেন।
গত রোববার (২২ জুন) রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মো. সালাহ উদ্দিন খান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলার নথিতে যাদের নাম পাওয়া যায়, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দিন আহমেদ, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার মো. আব্দুল মোবারক, আবু হানিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) জাবেদ আলী, শাহ নেওয়াজ, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে. এম. নুরুল হুদা, তৎকালীন নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম, নির্বাচন কমিশনার কবিতা খানম, ব্রিগেডিয়ার শাহাদাত হোসেন চৌধুরী, তৎকালীন পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী, তৎকালীন ঢাকা মহানগরের পুলিশ কমিশনার, সাবেক ডিজি র্যাব ও সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ, সাবেক আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক, সাবেক এসবি প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, সাবেক ডিজিএফআই প্রধান (নাম অজ্ঞাত), সাবেক এনএসআই প্রধান ও সাবেক ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি সৈয়দ নুরুল আলম, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল, নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আহসান হাবীব, আলমগীর হোসেন, আনিছুর রহমান ও তৎকালীন নির্বাচন সচিব (নাম অজ্ঞাত)।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইমাউল হক বলেছেন, আগে নির্বাচন কমিশনে যেসব কর্মকর্তা ছিলেন, অভিযোগকারীর দৃষ্টিতে তারা সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান থাকার পরও ভয়-ভীতি দেখিয়ে ভোট সম্পন্ন করেন এবং জনগণের ভোট ছাড়াই প্রার্থীদের বিজয়ী করেন। এই কাজগুলো দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য করে ২৪ জনকে আসামি করে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
রাশেদা সুলতানার নাম না থাকার বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য, পুলিশের সাবেক কর্মকর্তা ও বিএনপির মামলার সমন্বয়কারী সালাহউদ্দিন খান বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে দায়ের করা মামলায় ২০১৪,২০১৮ ও ২০২৪ সালের নির্বাচনের সময় দায়িত্ব পালন করা সিইসি ও অন্যান্য কমিশনারদের আসামি করা হয়েছে। তবে ২০২৪সালে দায়িত্বে থাকা নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানার নাম টাইপিং মিসটেকের কারণে মামলার আবেদনে লেখা হয়নি।আমরা তার নাম যোগ করে আবেদন দ্রুতই সংশ্লিষ্ট থানায় পৌঁছে দিবো। তার নাম বাদ পড়ার অন্য কোনো কারণ নেই।
মামলার বাদী সালাহউদ্দিন খান বলেন, ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোট পরিচালনাকারী প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্য, বিভিন্ন সংস্থার এন এস আই, ডিজিএফআই, এসবি প্রধানসহ তারা সম্মিলিতভাবে প্রশাসনিক নির্বাচন করেছেন। দিনের ভোট রাতে করে নিজেকে প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন শেখ হাসিনা। তাই তিনিসহ ২৪ জনকে আসামি ও অজ্ঞাত আরো কয়েকজনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনারদের সংবিধান লঙ্ঘনের দায় এবং অপরাধ করার দায়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি পত্রের মাধ্যমে ২০১৮ সালেও নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ দিয়েছিলাম। সে অভিযোগের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। ছায়া লিপি ও আলামতসহ আজ অভিযোগ জমা দিয়েছি শেরেবাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছে।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: