শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন, ভারতকে নাহিদ
প্রকাশিত:
২৭ জুলাই ২০২৫ ২১:০৬
আপডেট:
২৮ জুলাই ২০২৫ ০০:৪৭

ভারতকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুশইন করতে হলে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের পুশইন করুন, শেখ হাসিনাকে পুশইন করুন। আমরা বিচারের মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাব।
তিনি বলেন, ‘কোটা আন্দোলন থেকে গণঅভ্যুত্থান যার মাধ্যমে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা দেশ থেকে দিল্লিতে পালিয়েছে। সেই দিল্লিতে বসে রয়েছে শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগের হাজারো সন্ত্রাসীকে দিল্লি আশ্রয় দিয়েছে। আর এই সীমান্ত দিয়ে প্রতিনিয়ত পুশইন হচ্ছে, জনগণকে ধোঁকা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা এই পুশইনের বিরোধিতা করেছি। আমরা ভারত সরকারকে বলেছি, সীমান্তে কোনো হত্যাকাণ্ড মেনে নেব না, সীমান্তে আমরা কোনো পুশইন মেনে নেব না।’
রোববার (২৭ জুলাই) বিকেলে দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা কর্মসূচির অংশ হিসেবে শেরপুর শহরের থানার মোড়ে এনসিপির আয়োজিত পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছরের মধ্যেও আমরা দৃশ্যমান কোনো বিচার দেখিনি। আওয়ামী লীগের দোসররা বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গিয়েছে। প্রশাসনে ঘাপটি মেরে রয়েছে। আমরা গোপালগঞ্জে দেখেছি কীভাবে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আক্রমণ করেছিল। আমরা পরিষ্কারভাবে বলেছি, গোপালগঞ্জসহ সারা বাংলাদেশে মুজিববাদকে আমরা দাঁড়াতে দেব না। যারা এখনো প্রশাসনসহ পুলিশে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে কাজ করছেন, আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের প্রশয় দিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আমাদের দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেরপুরে হাসপাতাল থাকলেও চিকিৎসাসেবা নাই, শিক্ষা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত নাই, কর্মসংস্থান নাই। শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে বিগত আমলে শাসন করলেও শেরপুরে উন্নয়ন নাই। উন্নয়ন পেয়েছে শুধু আওয়ামী লীগের দোসররা, সন্ত্রাসীরা। যারা দেশের টাকা লুট বিদেশে পলাতক অবস্থায় আছে।’
পথসভায় উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘বিগত সময়ে বাংলাদেশের প্রতিটা সিস্টেম কিছু ধান্দাবাজ, বাটপার, ব্যক্তি স্বার্থকে প্রধান্য দেওয়া হয়েছিল। যার কারণে কুলসিত হয়েছিল। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময় গিয়েছে সেই লোকদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অতঃপর কালপিটরা আবারো সেই সিস্টেমগুলোকে নতুন করে জেঁকে বসেছে।’
দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিতে আমরা শ্লোগান দেইনা ‘নেতা তোমার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’। একটা বিপদ আসলে বুঝা যায় কয়জন রাজপথে থাকে। ভালো সময় থাকলে কর্মীর অভাব হয়না। কিন্তু সংকটের সময় যারা রাজপথে থাকে তারা প্রকৃত কর্মী। আমার হাজার হাজার লাখো লাখো কর্মীর দরকার নাই। যারা সংকটকে মোকাবিলা করবে এই কর্মীগুলো আমার প্রয়োজন। আর এই কর্মীগুলোকে নিয়েই আমরা রাজনৈতি করতে এসেছি। আপনারা নেতার সাথে কেউ সেলফি তুলে ফেসবুকে দিয়ে নেতা হওয়ার দরকার নেই। নেতার পিছনে না ঘুরে যোগ্যতা অনুযায়ী নিজে নেতা হোন। আমরা খবর পেয়েছি, গতকাল আমাদেরই এক সহকর্মী চাঁদাবাজি করতে গিয়ে ধরা পড়েছে। আমি বলতে চাই, যে দলেরই চাঁদাবাজ হোক না কেনো তাকে থানায় দিবেন। আর আমার দলের কেউ চাঁদাবাজি করলে আগে আপ্যায়ন করবেন পরে থানায় দিবেন।’
সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমীন বলেন, ‘গত কয়েকদিন আগে ঢাকার মাইলস্টোন কলেজে যেই শিশুরা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে এবং মৃত্যুবরণ করেছে তাদের চেয়েও দগ্ধ মন নিয়ে আপনাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। আমরা লক্ষ্য করছি, এই ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি হচ্ছে না। আমরা পরিস্কার করে জানতে চাই, এই মাইলস্টোনের ঘটনার পেছনে কার কার হাত আছে।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনিম জারা, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক সামান্তা শারমীনসহ জেলা-উপজেলার নেতাকর্মীরা।
পথসভার আগে, শহরের শহীদ মাহবুব চত্বর থেকে জুলাই পদযাত্রা শুরু হয়। এতে যোগ দেন এনসিপির নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: