শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১


শবে বরাতের রোজা কয়টি?


প্রকাশিত:
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৯:৪৪

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:০৩

ফাইল ছবি

শবে বরাত একটি মর্যাদাপূর্ণ রাত। হিজরি শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে শবে বরাত বলা হয়। একাধিক সহিহ হাদিসে এ রাতের মর্যাদা প্রমাণিত। তাছাড়া এ রাতের মাহাত্ম্য সম্পর্কে রয়েছে বিশিষ্ট ইমামগণের নির্ভরযোগ্য বহু বক্তব্য। সহিহ বর্ণনা অনুযায়ী এ রাতে আল্লাহর অপার অনুগ্রহ নাজিল হয়। একইসঙ্গে অসংখ্য বান্দাকে তিনি ক্ষমা করে দেন। হাদিসে এসেছে, ‘আল্লাহ তাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন; অতঃপর তিনি তার সকল সৃষ্টিকে ক্ষমা করে দেন, কেবল শিরককারী ও বিদ্বেষ-পোষণকারী ছাড়া। (সহিহ ইবনে হিব্বান: ৫৬৬৫; শুআবুল ঈমান, বায়হাকি: ৩/৩৮২, হাদিস ৩৮৩৩)

শবে বরাত উপলক্ষে অনেকে অন্যান্য আমলের পাশাপাশি ১৫ শাবান রোজা রাখেন। বিষয়টি শরিয়তসম্মত কি না জানার কৌতূহল রয়েছে অনেকের। এ সম্পর্কে হাদিসের নির্যাস হলো- শবে বরাতের তারিখ আইয়ামে বিজের (প্রতি চান্দ্রমাসের ১৩, ১৪, ও ১৫ তারিখ) অন্তর্ভুক্ত। সেই হিসেবে ১৫ শাবান (শবে বরাতের দিন) রোজা রাখা নিঃসন্দেহে সুন্নত। তবে, ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ তিনটি রোজা রাখাই সর্বোত্তম।

আইয়ামে বিজের রোজা সম্পর্কে হাদিসে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা রাখা সারাবছর রোজা রাখার সমান।’ (বুখারি: ১১৫৯, ১৯৭৫) আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু রাসুলুল্লাহ (স.) আমাকে তিনটি অসিয়ত করেছেন—এক. প্রতি মাসে তিন দিন রোজা রাখা, দুই. দুই রাকাত চাশতের নামাজ পড়া, তিন. ঘুমের আগে বিতরের নামাজ পড়া।’ (সহিহ বুখারি: ১১৭৮)

অতএব, ১৫ শাবান তারিখে আইয়ামে বিজের একটি দিন হিসেবে রোজা রাখলে তা সুন্নত মনে করা যাবে। কিন্তু পৃথকভাবে শাবান মাসের ১৫ তারিখ বিশেষ দিন হিসেবে পৃথকভাবে এ দিনে রোজা রাখা সুন্নত―এমন ধারণা রাখা যাবে না।

মূলত শবে বরাতকে কেন্দ্র করে রোজার কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা হাদিসে পাওয়া যায় না। শুধুমাত্র একটি দুর্বল হাদিসে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘শবে বরাতের পরবর্তী দিনটিতে রোজা রাখ’। এই একটি মাত্র দুর্বল হাদিসের ওপর ভিত্তি করে শবে বরাতে একটি রোজা রাখাকে সুন্নত বা মোস্তাহাব বলা যায় না।

এ প্রসঙ্গে শাইখুল ইসলাম মুফতি মুহাম্মাদ তাকি উসমানি (দা.বা) বলেন, ‘... শুধু ১৫ শাবানের কারণে এ রোজাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে সুন্নত বলে দেওয়া অনেক আলেমের মতেই সঠিক নয়। আর সে কারণেই অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরাম মোস্তাহাব রোজার তালিকায় মহররমের ১০ তারিখ ও ইয়াওমে আরাফা (জিলহজের ৯ তারিখ) এর কথা উল্লেখ করেছেন। অথচ শাবানের ১৫ তারিখের কথা পৃথকভাবে কেউই উল্লেখ করেননি। বরং তারা বলেছেন, শাবানের যেকোনো দিনই রোজা রাখা উত্তম। সুতরাং এ সকল বিষয়ের দিকে দৃষ্টি রেখে যদি কেউ রোজা রাখে, ইনশাআল্লাহ সে সওয়াব পাবে। তবে মনে রাখতে হবে যে, রোজা রাখার ব্যাপারে এ মাসের নির্দিষ্ট কোনো দিনের পৃথক কোনো বৈশিষ্ট্য নেই।’ (ইসলাহি খুতুবাত: ৪/২৬৭-২৬৮)



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top