আল্লাহর দিদার জান্নাতের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার
প্রকাশিত:
১৬ জুলাই ২০২৫ ১৭:০২
আপডেট:
১৭ জুলাই ২০২৫ ০১:৪৪

আল্লাহ তাআলা জান্নাতবাসীদের সব ইচ্ছা পূরণ করবেন। তাঁরা চিরস্থায়ী স্বাচ্ছন্দ্য, সুখ ও সম্মানে বসবাস করবেন—যেখানে থাকবে না কোনো ক্লান্তি, অসুস্থতা, পুরোনো কাপড়, দুঃখ কিংবা বার্ধক্য। তাদের জন্য থাকবে সুশীতল ছায়া, অপূর্ব আপ্যায়ন, স্বচ্ছ পানীয়, সৌন্দর্যবতী হূর, ভদ্র পরিবেশক, উচ্চবিলাসী প্রাসাদ, ফুলে-ফলে ভরা বাগান, ঝরনা ও অন্তহীন শান্তির পরিবেশ।
এতসব নেয়ামতের মাঝেও একটি মুহূর্ত আসবে, যা সব কিছুর ঊর্ধ্বে। তা হলো আল্লাহর দিদার (সাক্ষাৎ)। সেই মহান মুহূর্তে জান্নাতিরা আল্লাহকে স্বচক্ষে দেখবেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘তারা আল্লাহকে দেখার মুহূর্তে আগের সব নেয়ামত ভুলে যাবে’। কারণ, আল্লাহর দিদার এমন এক আত্মিক ও চিরস্থায়ী সুখ, যা অন্যকোনো কিছুতে পাওয়া যায় না। (সহিহ মুসলিম: ৪৬৭)
রাসুলুল্লাহ (স.) বলেন, ‘জান্নাতিরা বলবে, আমাদের প্রভুর দিদার ছাড়া আর কিছু বাকি নেই। তখন আল্লাহ আত্মপ্রকাশ করবেন এবং তারা সেজদায় পড়ে যাবেন। তখন বলা হবে, আজ আমল নয়—আজ প্রতিদান লাভের দিন।’ (জামিউল উলুম ওয়াল হিকাম)
অপরদিকে, অবিশ্বাসীরা এই দিদার থেকে বঞ্চিত থাকবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘অবিশ্বাসীরা সেদিন তাদের রবের সাক্ষাৎ থেকে আড়ালে থাকবে।’ (সুরা মুতাফফিফিন: ১৫)
ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা অবিশ্বাসীদের কাছে নিজেকে প্রকাশ করবেন না, কিন্তু তাদের থেকে গোপনও থাকবেন না।’ (মাজমুআ ফাতাওয়া)
এই মহান পুরস্কার লাভের পূর্বশর্ত হলো, এ দুনিয়ায় তাঁর বিধান অনুসরণে জীবন গঠন করা। কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হে মানুষ! তোমাকে তোমার রবের কাছে পৌঁছাতে পরিশ্রম করতে হবে, অতঃপর তুমি তাঁর সাক্ষাৎ লাভ করবে।’ (সুরা ইনশিকাক: ৬)
এই দেখার প্রকৃতি যেমন কল্পনার বাইরে, তেমনি আল্লাহ তাআলার সত্তাও কিছুর সঙ্গে তুলনীয় নয়। কোরআনের ভাষায়, ‘লাইসা কা মিসলিহি শাই’—তাঁর তুলনা কোনো কিছুর সঙ্গে চলে না। (সুরা শুরা: ১১)
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, আল্লাহর দিদার পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা থাকা। রাসুল (স.) বলেন- ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সাক্ষাৎ কামনা করে, আল্লাহও তার সাক্ষাৎ কামনা করেন।’ (সহিহ বুখারি: ৬৫০৭)
আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে জান্নাতবাসী করে তাঁর দিদার লাভের সৌভাগ্য দান করুন। আমিন।
ডিএম /সীমা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: