অন্তর ও আমল পরিশুদ্ধ করার একটি গুরুত্বপূর্ণ দোয়া
প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:৫০
আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:৩৯

মানুষের অন্তর বা কলব সমস্ত ভালো ও মন্দ কাজের উৎস। এই অন্তরকে পবিত্র ও কলুষমুক্ত রাখা ঈমানের একটি অপরিহার্য অঙ্গ। রাসুলুল্লাহ (স.) আমাদের এমন একটি সংক্ষিপ্ত ও গভীর অর্থবহ দোয়া শিখিয়েছেন, যার মাধ্যমে আমরা আমাদের অন্তর, আমল, জিহ্বা ও দৃষ্টিকে সকল প্রকার পাপ ও খারাপি থেকে পবিত্র করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করতে পারি। দোয়াটি নিম্নরূপ:
আরবি: اَللَّهُمَّ طَهِّرْ قَلْبِي مِنَ النِّفَاقِ، وَعَمَلِي مِنَ الرِّيَاءِ، وَلِسَانِي مِنَ الْكَذِبِ، وَعَيْنِي مِنَ الْخِيَانَةِ، فَإِنَّكَ تَعْلَمُ خَائِنَةَ الْأَعْيُنِ وَمَا تُخْفِي الصُّدُورُ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা তহহির ক্বালবি মিনান নিফাকি, ওয়া ‘আমালি মিনার রিয়া-ই, ওয়া লিসানি মিনাল কাজিবি, ওয়া ‘আইনি মিনাল খিয়ানতি, ফা-ইন্নাকা তা’লামু খা-ইনাতাল আ’ইয়ুনি ওয়া মা তুখফিস সুদুর।
অর্থ: ‘হে আল্লাহ! আমার অন্তরকে মুনাফিকি থেকে পবিত্র করুন, আমার আমলকে রিয়া (লোক দেখানো কাজ) থেকে পবিত্র করুন, আমার জিহ্বাকে মিথ্যা কথা থেকে পবিত্র করুন এবং আমার চোখকে খেয়ানত (বিশ্বাসঘাতকতা বা অবৈধ দৃষ্টিপাত) থেকে পবিত্র করুন। নিশ্চয়ই আপনি চোখের খেয়ানত (গোপনে যা দেখা হয়) এবং বুক যা গোপন করে, সবই জানেন।’
দোয়াটির ফজিলত ও গুরুত্ব
এই দোয়াটির ফজিলত সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে- উম্মে মাবাদ (রা.) বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ (স.)-কে এই দোয়া করতে শুনেছি।’ (মেশকাতুল মাসাবিহ: ২৫০১)। এই দোয়াটি আমাদের জীবনের চারটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গকে পরিশুদ্ধ করার জন্য প্রার্থনা করতে শেখায়:
১. অন্তর পরিশুদ্ধকরণ: এই দোয়ার মাধ্যমে অন্তরের গোপন কুফরি, সন্দেহ ও মুনাফিকি থেকে মুক্তি চাওয়া হয়। অন্তর পরিশুদ্ধ থাকলে একজন ব্যক্তির আমল ও চরিত্র উভয়ই উন্নত হয়।
২. খাঁটি আমলের নিশ্চয়তা: এটি লোক-দেখানো ইবাদত (রিয়া) থেকে মুক্তি লাভের জন্য একটি শক্তিশালী মাধ্যম। এর মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করতে পারি যে, আমাদের প্রতিটি কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করা হচ্ছে।
৩. জিহ্বার সঠিক ব্যবহার: জিহ্বার মাধ্যমে আমরা মিথ্যা, অপবাদ, গিবত ও অশ্লীল কথাবার্তা থেকে দূরে থাকার জন্য প্রার্থনা করি।
৪. চোখের গুনাহ থেকে পবিত্র থাকা: দোয়াটি সকল প্রকার অবৈধ দৃষ্টি বা হারাম জিনিস দেখা থেকে চোখকে রক্ষা করার জন্য করা হয়।
এই দোয়া পাঠের মাধ্যমে একজন মুমিন আল্লাহর কাছে স্বীকার করে নেয় যে, তিনি আমাদের গোপন ও প্রকাশ্য সবকিছুই জানেন। এর মাধ্যমে বান্দা নিজেকে আল্লাহর সামনে নত করে এবং তাঁর কাছেই পরিশুদ্ধি কামনা করে।
নিয়মিত নামাজের পর, বিশেষত ফজর ও মাগরিবের নামাজের পর অথবা তাহাজ্জুদের সময় এই দোয়াটি পাঠ করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এটি আমাদের আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে এবং আল্লাহর সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করে তোলে। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে উক্ত দোয়াটি নিয়মিত পড়ার তাওফিক দান করুন। আমিন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: