বৃদ্ধ বাবাকে পিটিয়ে ৩১ লাখ টাকা আত্মসাৎ ছেলেদের
প্রকাশিত:
১৪ আগস্ট ২০২২ ২২:৩১
আপডেট:
৯ আগস্ট ২০২৫ ০০:৩৯

রাজধানীর মানিকদী এলাকায় ছিনতাইকারী সেজে বাবা জয়নাল আবেদীন (৭০) কে পিটিয়ে ৩১ লাখ টাকা ছিনতাই করেছেন তার তিন ছেলে। ছেলেদের মারধরে ওই বৃদ্ধ এখন ঠিকমতো হাঁটতে চলতেও পারেন না। পরে জয়নালের করা মামলায় তিন ছেলের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
জানা যায়, ছেলেদের অত্যাচার সইতে না পেরে ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পশ্চিম মানিকদীর একটি ভবনে মেয়ের পরিবারের সঙ্গে ভাড়া থাকেন জয়নাল-হনুফা দম্পতি। নিজের সম্পত্তির অধিকাংশই দিয়েছেন তিন ছেলের নামে। নিজের স্ত্রী আর মেয়ের কথা ভেবে মানিকদী এলাকার আড়াই কাঠা জমি ছেলেদের দেননি। তাই তাদের ওপর মানসিক ও শারিরীক নির্যাতন করতেন তিন ছেলে।
পরে ওই জমি বিক্রি করে টাকা জমিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেন জয়নাল। জমি বিক্রি করে রেজিস্ট্রি অফিস থেকে বাসায় ফেরার সময় ছিনতাইকারীর বেশে জয়নালের ওপর হামলা চালায় তিন ছেলে। লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে নির্মমভাবে জখম করেন বাবাকে।
জয়নাল আবেদীন জানান, জমি বিক্রি করে ৩১ লাখ টাকা নিয়ে বাসায় ঢোকার সময়ই তার উপর হামলা করা হয়। তার তিন ছেলে আর তাদের এক সহকর্মীকে নিয়ে চারজন মিলে মেরে উনার পা আর মাথা জখম করে দেয়। প্রায় এক বিঘার মতো জমি ছিল। সন্তানদের লালন-পালন করতে করতে পরে যা ছিল তার প্রায় সবই ছেলেদের দিয়েছেন। তা সত্বেও তাদের এমন আচরণে খুবই মর্মাহত তিনি। আক্ষেপ করে জানান, এমন সন্তান থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।
ঘটনার পর কয়েকদিন হাসপাতালে থেকে থানায় গিয়ে মামলা করেন জয়নাল দম্পতি। এরপর থেকেই গা ঢাকা দেন ছেলেরা। ঢাকার ডিবি পুলিশের কাছে এমন তথ্য আসার পর টাঙ্গাইল ও গাজীপুরে পালিয়ে থাকা দুই ছেলে হান্নান ও মান্নানকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দারা। এখনো পলাতক প্রধান আসামি বড় ছেলে হানিফ। দুই ছেলেকে আটকের পর বাবার কাছ থেকে ছিনতাই করা ৩১ লাখের মধ্যে ২৯ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ। বাবা-মার প্রতি সন্তানদের এমন আচরণ দেখে হতবাক কর্মকর্তারা।
ডিএমপির ডিবি উপ-কমিশনার মশিউর রহমান জানান, ছেলেগুলো বখাটে। তার পাশাপাশি তাদের স্ত্রী ও স্ত্রী পক্ষীয় আত্মীয়-স্বজনরাও লোভী। তাই মা-বাবাকে ভালোবাসা বা ভরণপোষণের পরিবর্তে তারা স্বামীদের উসকে দিতো তাদের নির্যাতন করার জন্য। দেশের আইন অনুযায়ী, মা-বাবা বৃদ্ধ হলে তার ভরণপোষণসহ তাদের নিয়মিত সময় দিতে বাধ্য থাকবেন সন্তানরা। কেউ এ রকম অন্যায়ের শিকার হলে দ্রুত অভিযোগ দেওয়ার পরামর্শ পুলিশের।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: