উত্তরা ইপিজেড
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে শ্রমিকদের সংঘর্ষে নিহত ১
প্রকাশিত:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৫:২৩
আপডেট:
২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২৩:৪১

নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকালের এ ঘটনায় আরও ৮ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নীলফামারী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ফরহান তানভিরুল ইসলাম।
নিহত শ্রমিকের নাম হাবিব ইসলাম (২০)। তিনি ইপিজেডের ইকো কোম্পানিতে কাজ করতেন। হাবিব নীলফামারী সদর উপজেলার সংগলশী ইউনিয়নের কাজিরহাট গ্রামের দুলাল হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, নীলফামারীর উত্তরা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) চার দিন ধরে উত্তপ্ত। এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরি (বিডি) লিমিটেডের শ্রমিকদের টানা আন্দোলনের পর সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিশ জারি করে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে। তবে কারখানা বন্ধের পরও আন্দোলন থামেনি।
এ নিয়ে মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে শ্রমিকদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বর্তমানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ইপিজেডজুড়ে বিজিবি, সেনাবাহিনী, পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন এভারগ্রিন প্রোডাক্টস ফ্যাক্টরির শ্রমিক হাবিব ইসলাম। এ সময় আরও ৮ জন শ্রমিক আহত হয়েছেন।
তাদের মধ্যে কয়েকজনকে নীলফামারীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
আরও জানা যায়, সকালে শ্রমিকরা ইপিজেড এলাকার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে ধাওয়া-পালটা ধাওয়া, টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও ইটপাটকেল ছোঁড়ার ঘটনা ঘটে। আতঙ্কে আশপাশের দোকানপাট বন্ধ হয়ে যায়, সাধারণ মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
কারখানা কর্তৃপক্ষ নোটিশে জানিয়েছে, টানা আন্দোলনে উৎপাদন ব্যাহত হওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাই বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন ২০১৯-এর ধারা ১২(১) অনুযায়ী ২ সেপ্টেম্বর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পরবর্তী নোটিশে পুনরায় চালুর কথা জানানো হবে।
শ্রমিকরা ২০ দফা দাবি তুলেছেন। দাবি গুলো হলো— উৎপাদন টার্গেট কমানো, ওভারটাইম নিশ্চিত করা, ছুটি যথাযথভাবে দেওয়া, বেতন ও ভাতা সময়মতো পরিশোধ, আবাসন ও প্রমোশনের জটিলতা নিরসন, সকাল ৭টার আগে ডিউটি না রাখা, অন্তঃসত্ত্বা নারী শ্রমিকদের জন্য বিশেষ সুবিধা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন বন্ধ করা এবং ক্ষুদ্র সমস্যাকে কেন্দ্র করে চাকরিচ্যুত না করা।
শ্রমিক সোহাগ হোসেন বলেন, আমরা টানা চার দিন শান্তিপূর্ণভাবে দাবি তুলেছি। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো আলোচনা করেনি। উলটো কারখানা বন্ধ করে আমাদের রাস্তায় নামতে বাধ্য করেছে।
এ ব্যাপারে নীলফামারী সদর থানা পুলিশের ওসি এম আর সাইদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেও কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: