শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


বিশ্ব বাজারে কমছে নিত্যপণ্যের দাম


প্রকাশিত:
৪ অক্টোবর ২০২২ ২২:৪২

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:১৫

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমতে শুরু করেছে গমসহ চারটি নিত্যপণ্যের। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধকালে খাদ্যশস্য রফতানির জন্য কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো খুলে দিতে জাতিসংঘ-সমর্থিত একটি চুক্তি সইয়ের সুফল পেতে শুরু করেছে সমগ্র বিশ্ব। বাংলাদেশও এর বাইরে নয়। এই চুক্তির প্রভাবেই দেশের বাজারে সরবরাহ বাড়ছে। দাম কমতে শুরু করেছে গম, চিনি, ভোজ্যতেল ও মসুর ডালের।

ইতোমধ্যেই সরকারের গণমুখী উদ্যোগের কারণে দাম কমছে সব ধরনের চাল,ভোজ্যতেল বিশেষ করে সয়াবিন ও পামঅয়েলের। স্থিতিশীল রয়েছে মসুর ডালের দাম। ব্যবসায়ীদের আপত্তি থাকলেও সরকারের পক্ষ থেকে কমানো হয়েছে চিনির দাম। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার যুদ্ধের প্রভাবে সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা ও দুর্ভিক্ষের পদধ্বনির মাঝেই খাদ্যশস্য রফতানির জন্য কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলো খুলে দিতে সম্মত হয়েছে ওই দুই দেশ। গত ২২ জুলাই জাতিসংঘ-সমর্থিত চুক্তিটি সই করেছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে। এর ফলে খাদ্যশস্য পরিবহন নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কেটে যাচ্ছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজার পর্যবেক্ষণকারী সংস্থাগুলোর তথ্য মতে, ইতোমধ্যে বিশ্ববাজারে গমের দাম কমেছে ৩ থেকে ৪ শতাংশ। দেশেও পাইকারি পর্যায়ে দাম কমার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। দুই-একটি ব্র্যান্ডের আটা-ময়দার দামও কমেছে। ৫০ কেজির প্রতি বস্তা আটার দাম ২ হাজার ১শ’ টাকা থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭শ’ টাকা। দেশের খুচরা বাজারে এর পুরোপুরি সুফল পেতে আরও কিছু দিন সময় লাগবে। দেশে গম আমদানির অন্যতম উৎস রাশিয়া ও ইউক্রেন। সবশেষ ভারত থেকে গম আমদানি বন্ধের পর স্থানীয় বাজারে লাফিয়ে বাড়তে থাকে আটা-ময়দা এবং এ দিয়ে তৈরি পণ্যের দাম।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন রাষ্ট্রীয় বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি’র হিসাব বলছে, এক বছরে আটা-ময়দার দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৫৬ ভাগ। গত সপ্তাহেও বেড়েছে এই দুটি পণ্যের দাম।

খাদ্য বিভাগের গত আগস্টের তথ্য বলছে, বর্তমানে ১ লাখ ৫৪ হাজার ৭৬০ টন গম মজুত রয়েছে দেশের সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে। তবে গত বছরের একই সময়ে গমের মজুত ছিল ২ লাখ ৪০ হাজার ৪১০ মেট্রিক টন। চলতি অর্থবছরের ৩ আগস্ট পর্যন্ত সরকারিভাবে কোনও গম আমদানি না হলেও বেসরকারিভাবে আমদানি হয়েছে ৪২ হাজার ৯৯০ টন গম। গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২১-২০২২ অর্থবছরে সরকারিভাবে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ১২০ টন গম আমদানি হয়। একই সময়ে বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি হয়েছে ৩৪ লাখ ৬৫ হাজার ৯৯০ টন গম।

এদিকে চলতি বছরে ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সরকারিভাবে ১ লাখ ৫০ হাজার টন গম সংগ্রহের কথা বলা হলেও মাত্র ২০ টন গম সংগ্রহ করতে পেরেছে খাদ্য অধিদফতর। কিন্তু গত বছর একই সময়ে ১ লাখ ৩ হাজার ২১২ টন গম সংগ্রহ করেছিল খাদ্য বিভাগ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের জুলাই মাসে ৬৩ হাজার ৪০০ টন গম আমদানির ঋণপত্র খোলা হয়।

খাদ্য বিভাগ বলছে, বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারদর অনুযায়ী, জাহাজীকরণের আগে রাশিয়া ও ইউক্রেনের গম টনপ্রতি ৩৬২ দশমিক ৫০ ডলার, আমেরিকান গম ৩৪১ ডলার। যাবতীয় আমদানি খরচ মিলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রতি কেজি রাশিয়ান গম ৪০ টাকা ৭৩ পয়সা, ইউক্রেনের গম ৪০ টাকা ৫৪ পয়সা এবং আমেরিকান গমের দাম পড়ে ৪০ টাকা ৪০ পয়সা।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করে রাশিয়া। বিশ্ব অর্থনীতিতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করে। হু হু করে বাড়তে থাকে বিভিন্ন পণ্যের দাম। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্য সংকট দেখা দেয়।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে মসুর ডালের দামও কমতে শুরু করেছে। দেশে মসুর ডালের চাহিদা ৫ লাখ মেট্রিক টন। স্থানীয় পর্যায়ে মসুর ডালের উৎপাদনের পরিমাণ ২ লাখ ৫৮ হাজার মেট্রিক টন। বছরে ৩ লাখ টনের বেশি মসুর ডাল আমদানি করতে হয়।

সূত্র জানায়, দেশে ভোজ্যতেলের চাহিদা ২০ লাখ মেট্রিক টন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদনের পরিমাণ ২ লাখ ৩ হাজার মেট্রিক টন। আমদানি করতে হয় ১৮ লাখ মেট্রিক টন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যেরই দাম কমতে শুরু করেছে। এটি শুভ লক্ষণ। আশা করছি, দেশের বাজারেও সব পণ্যের দাম কমবে। আমরা এর সুফল পাবো।’



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top