বেরোবিতে চলছে লাগাতার আমরণ অনশন: মেডিকেলে ভর্তি ৩ শিক্ষার্থী
প্রকাশিত:
১৯ আগস্ট ২০২৫ ১৩:৩৩
আপডেট:
১৯ আগস্ট ২০২৫ ১৩:৫৪

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন সংযুক্ত করে দ্রুত রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে তৃতীয় দিনেও চলছে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন। তিনদিনে অসুস্থ হয়ে পড়েছে ৫ শিক্ষার্থী। এরমধ্যে তিনজনকে ভর্তি করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বেলা ১১টা পর্যন্ত তৃতীয় দিনের মতো চলছে শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। অনশনে থাকা কয়েকজন শিক্ষার্থীদের শরীরে স্যালাইন চলছে। কয়েকজন ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনে বসা শিক্ষার্থীদের সার্বক্ষণিক খোঁজ খবর রাখছেন উপাচার্য প্রফেসর ড. শওকাত আলী। অনশন ভাঙার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে কয়েকদফা চেষ্টাও করা হয়। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি আদায়ে অনঢ়।
অনশন চলাকালে সোমবার (১৮ আগস্ট) গণিত বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আরমান হোসেন ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নয়ন মিয়া অসুস্থ হয়ে পড়েন। এসময় তাদের হাসপাতালে নেওয়ার চেষ্টা করা হলে তারা হাসপাতালে যেতে রাজি হননি। অনশন স্থলেই তাদের স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়। অনশনে থাকা জাহিদ হাসান জয় ও মাহিদুল ইসলাম মাহিদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সোমবার রাতে কায়সার আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থীর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকেও মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
এদিকে উপাচার্যের আশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে আমরণ অনশনে থাকা দুই শিক্ষার্থী অনশন ভেঙেছেন। অনশন ভাঙা শিক্ষার্থীরা হলেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী শিবলি সাদিক ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান।
অনশন প্রত্যাহারকারী শিক্ষার্থী শিবলী সাদিক বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মানতে ভিসি স্যারের পক্ষ থেকে ১০ দিনের সময় চাওয়া হয়েছে এবং তিনি লিখিত দিয়েছেন। সেই আশ্বাসের কারণে অনশন ভাঙছি। তবে ১০ দিনের মধ্যে আমাদের দাবি মানা না হলে আবারও আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
অনশন ভাঙা অপর শিক্ষার্থী মুশফিকুর রহমান বলেন, অনশনে অংশ নিয়েও ক্লাস পরীক্ষায়ও অংশ নিয়েছি। ৩০ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ছাত্রদের অধিকার আদায়ের জন্য অনশন করেছি, যেহেতু উপাচার্য স্যারের পক্ষ থেকে ১০ দিনের যে সময় চাওয়া হয়েছে, তা আমাদের কাছে তা আশাব্যঞ্জক মনে হয়েছে। এজন্য আপাতত অনশন থেকে সরে দাঁড়াচ্ছি।
অন্যদিকে অনশন চালিয়ে যাওয়া অন্য শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন, এতে যদি তারা মারা যায়, যাবে। তারপরও দাবি আদায়ে অনঢ় তারা। তাদের দাবি, ১০ দিনের সময়সীমা তাদের কাছে কেবল আশ্বাস মনে হচ্ছে। এর আগেও এমন আশ্বাসের বাণী অনেকবার শুনেছে তারা। আইনে সংশোধনের গেজেট প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত তারা অনশন চালিয়ে যাবেন।
এর আগে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে ছাত্র সংসদের গঠনতন্ত্র ও সংবিধি প্রণয়নের কাজ আগামী ১০ দিনের মধ্যে করার আশ্বাস দিয়েছে। তাই অনশনে থাকা শিক্ষার্থীদের কাছে আগামী ১০ দিনের সময় চেয়ে অনশন ভাঙার অনুরোধ করেন তিনি।
ডিএম/রিয়া
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: