শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৫ই বৈশাখ ১৪৩১


সন্তান নিয়ে মাধ্যমিক পরীক্ষা দিল যমজ দুই বোন


প্রকাশিত:
২০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:২২

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৩৩

 ছবি : সংগৃহীত

বাল্যবিয়ে মানেই অকাল মাতৃত্ব। শুধু তাই নয় অপরিণত বিবাহ অত্যাচার তো বটেই। বর্তমানে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক বোর্ড পরীক্ষা। ১৫ জুন থেকে পরীক্ষা আরম্ভ হওয়ার প্রথম দিনেই প্রায়ই ৩৪ হাজার শিক্ষার্থীর অনুপস্থিতি এক প্রকার দুঃসহ চিত্র।

ধারণা করা হচ্ছে, করোনার সময়ে লকডাউনে বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা বাল্যবিয়ের কবলে পড়েছে আর ছেলে শিক্ষার্থীরা শিশুশ্রমে সম্পৃক্ত হতে বাধ্য হয়। তবে ঝরে পড়ার দৃশ্যে মেয়েদের পাল্লাটাই ভারি থাকে সবসময়। এটা নতুন কিছু নয়। সেই সামাজিক অভিশাপ এবং প্রাচীনতম সংস্কারে আটকে থাকে অপেক্ষাকৃত পিছিয়ে পড়া বালিকারা। যারা হরদম বিয়ের পিঁড়িতে বসতে এক প্রকার বাধ্যই হয়। অভাবের তাড়নায় নির্বিত্ত অসহায় পিতা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়েটিকে সংসার ধর্ম পালন করতে পরের বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। আর বালক-পুত্রদের শিশুশ্রমে সম্পৃক্ত করে পারিবারিক আয় রোজগারের কথা ভাবতে বসে।

এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রথম দিনে বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে পরীক্ষা হলে প্রবেশের আগে দুই যমজ বোন তাদের দু’মাসের শিশু সন্তানকে মা ও খালার কাছে রেখে পরীক্ষায় বসে। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি সংশ্লিষ্ট এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগেনি। উম্মে কলসুম এবং উম্মে ফাতেমা দুই যমজ বোন। করোনাকালে তারা নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল। সে সময় প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এক বিপদজ্জনক দুর্ভোগ নেমে আসে সবার জীবনে। বিশেষ করে গ্রামেগঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলে।

তথ্যসূত্রে জানা যায়, যমজ দুবোন উপজেলার বড়ইকান্দি বিমানবন্দর পাড়ার ক্ষুদে ব্যবসায়ী রঞ্জু মিয়ার মেয়ে। অভাব অনটনে তাদের বিয়ে দিতে বাধ্য হন মা-বাবা।

সমস্ত দুর্যোগে সবার আগে বিপত্তির আবর্তে পড়ে অসহায় কন্যা সন্তানরা। এরই ধারাবাহিকতায় দুই যমজ কন্যাকে বিয়ে দিয়ে সংসার ধর্ম পালন করতে স্বামীর ঘরে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে দুই বোন মা হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করলেও অকাল মাতৃত্ব কোনভাবেই কাঙ্ক্ষিত ছিল না। তবে দুই বোন লেখাপড়া বন্ধ করেনি। বিয়ের পর সংসার করে মা হয়েও তারা নির্ধারিত মাধ্যমিক পরীক্ষায় বসতে পারলো সব বাধাকে অতিক্রম করে।

পরীক্ষা শেষ করে দুবোন তাদের শিশু সন্তানদের কোলে নিয়ে অনেকেরই প্রশ্নের মুখোমুখি হয়। তবে তারা নির্দ্বিধায় বলে শ্বশুরবাড়ির সবার সাহায্য সহযোগিতায় তাদের মাধ্যমিক পরীক্ষা দেয়া সম্ভব হয়েছে। শুধু তাই নয়, পরীক্ষা ভালভাবে দিতে পারাটাও তাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। পরের পরীক্ষাগুলোও তারা নিরাপদে নির্বিঘ্নে দিতে চায়। সবার দোয়াও প্রত্যাশা করেছে দুই যমজ বোন। অভিনন্দন দুই যমজ পরীক্ষার্থীকে। সাথে তাদের পরিবার পরিজনদেরও।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top