শনিবার, ২১শে জুন ২০২৫, ৭ই আষাঢ় ১৪৩২


পাকিস্তানের সাথে সিন্ধু পানি চুক্তি পুনর্বহাল না করার ঘোষণা ভারতের


প্রকাশিত:
২১ জুন ২০২৫ ১৮:০৬

আপডেট:
২১ জুন ২০২৫ ২২:১৫

ছবি সংগৃহীত

ভারত পাকিস্তানের সাথে ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানি চুক্তি কখনই আর পুনর্বহাল করবে না এবং পাকিস্তানে প্রবাহিত পানিকে অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য সরিয়ে নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শনিবার (২১ জুন) টাইমস অব ইন্ডিয়াকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই ঘোষণা দেন।

গত মাসে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত এই চুক্তি স্থগিত করে। এই চুক্তির অধীনে পাকিস্তানের ৮০% কৃষিজমির পানি সরবরাহ হয়, যা ভারত থেকে উৎপন্ন তিনটি নদীর মাধ্যমে প্রবাহিত হয়।

পাকিস্তান এই হামলার সাথে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করলেও, গত মাসে দুই পারমাণবিক-সজ্জিত প্রতিবেশীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও এই পানি চুক্তি নিষ্ক্রিয়ই থেকে গেছে।

অমিত শাহ স্পষ্ট করে বলেন, ‘না, এই চুক্তি কখনই পুনর্বহাল করা হবে না। আমরা রাজস্থানে একটি খাল নির্মাণ করে পাকিস্তানে যাওয়া পানি সেখানে নিয়ে যাব। পাকিস্তান যে পানি অবৈধভাবে পেয়ে আসছিল, তা বন্ধ করা হবে।’

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সবচেয়ে শক্তিশালী মন্ত্রী অমিত শাহের এই মন্তব্যে পাকিস্তানের আশা কমে গেছে যে নিকট ভবিষ্যতে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

গত মাসে ব্রিটিশ সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছিল, ভারত পাকিস্তানের কৃষিজমিতে পানি সরবরাহকারী একটি প্রধান নদী থেকে আরও বেশি পানি প্রত্যাহার করার পরিকল্পনা করছে, যা প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থার-ই অংশ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

মে মাসের শুরুর দিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ভারতের একতরফাভাবে সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করার নিন্দা জানিয়ে এটিকে ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন ও পানি-আগ্রাসনের কাজ’ বলে বর্ণনা করেন এবং সতর্ক করেন যে পাকিস্তান ২৪ এপ্রিলের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী যথাযথ জবাব দেবে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভার সবচেয়ে ক্ষমতাধর মন্ত্রী অমিত শাহের এই সাম্প্রতিক মন্তব্য দিল্লির ইচ্ছাকে প্রকাশ করে, যেখানে ইসলামাবাদের আশা ছিল যে নিকট ভবিষ্যতে এই চুক্তি নিয়ে আলোচনা হতে পারে।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখন পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি। তবে তারা আগেই বলেছে, এই চুক্তিতে একপক্ষের একতরফা সরে যাওয়ার কোনো বিধান নেই এবং পাকিস্তানে প্রবাহিত নদীর পানি বন্ধ করাকে ‘যুদ্ধের কাজ’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

পানি নিয়ে এমন উত্তপ্ত পরিস্থিতি এড়াতে ইসলামাবাদ আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ভারতের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার কথাও ভাবছে।

তবে, অমিত শাহের এমন বক্তব্যর পর বিষয়টি স্পষ্ট যে পানি নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে কোন সুরাহা না হলে যেকোন সময়ে আবার যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।

সূত্র: রয়টার্স, টাইমস অব ইন্ডিয়া, ডন নিউজ।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top