আকাশপথের পরিবর্তে বিশেষ বুলেটপ্রুফ ট্রেনে চীন যাচ্ছেন কিম
প্রকাশিত:
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১৮:০৮
আপডেট:
১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০:৪৬

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন সাঁজোয়া বিশেষ ট্রেনে চড়ে বেইজিংয়ের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সেখানে তিনি চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনসহ বিভিন্ন দেশের নেতাদের সঙ্গে বহুপাক্ষিক কূটনৈতিক সমাবেশে অংশ নেবেন।
সোমবার (১ সেপটেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে কোরিয়ান হেরাল্ড।
দক্ষিণ কোরিয়ার সূত্র জানিয়েছে, সোমবার দুপুরে পিয়ংইয়ং থেকে যাত্রা শুরু করেন কিম। অলিভ-সবুজ রঙের ও হলুদ ডোরা কাটা ভারী সাঁজোয়া এ ট্রেনটি মঙ্গলবার চীন সীমান্ত অতিক্রম করে সাইনো–নর্থ কোরিয়া ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ পেরিয়ে দানডংয়ের পথে বেইজিং পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
কিমের এই সফর বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে কারণ এতে তিনি ২৬ দেশের নেতার সঙ্গে একই মঞ্চে থাকবেন। এর মধ্যে রাশিয়া, ইরান ও মিয়ানমারের মতো নিষেধাজ্ঞাগ্রস্ত রাষ্ট্রও রয়েছে, তবে পশ্চিমা দেশের কোনো নেতা থাকছেন না। বুধবার তিনি শি ও পুতিনের সঙ্গে তিয়ানআনমেন স্কয়ারের রোস্ত্রামে দাঁড়িয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করবেন।
নিরাপত্তার কারণে কিম আকাশপথের পরিবর্তে প্রায় ২০ ঘণ্টার ট্রেনযাত্রাকেই বেছে নিয়েছেন। তার ব্যক্তিগত ট্রেনটির নাম ‘তেয়াং-হো’, কোরিয়ান ভাষায় যার অর্থ ‘সূর্য’এটি উত্তর কোরিয়ার প্রতিষ্ঠাতা কিম ইল-সাংকে প্রতীকীভাবে স্মরণ করে রাখা হয়েছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দাদের মতে, ট্রেনটি বুলেটপ্রুফ কাচ, শক্তিশালী বর্ম, রাডার ফাঁকি দেওয়ার বিশেষ জাল এবং এমনকি অনবোর্ড মর্টার দিয়ে সজ্জিত। এ কারণে এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ৫০ কিলোমিটারে সীমাবদ্ধ।
কিমের ‘সাঁজোয়া ট্রেন কূটনীতি’
২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর কিম জং-উন এ পর্যন্ত বিদেশ সফর করেছেন আটবার (২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত), বর্তমান সফর বাদে। এর মধ্যে পাঁচবার তিনি এই বিশেষ ট্রেন ব্যবহার করেছেন। ২০১৮ সালের মার্চ ও ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে বেইজিং সফর, ২০১৯ সালের হ্যানয় সম্মেলনে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক এবং একই বছরের এপ্রিলে রাশিয়ার ভ্লাদিভস্তকে পুতিনের সঙ্গে প্রথম বৈঠক—সবক্ষেত্রেই তিনি ট্রেনেই গিয়েছিলেন। সর্বশেষ ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে আবারও ট্রেনে করে রাশিয়ার আমুর অঞ্চলে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন কিম।
তবে তিনবার তিনি আকাশপথে গিয়েছিলেন। ২০১৮ সালে দালিয়ান ও বেইজিং সফরে ‘চাম্মে-১’ নামের একটি সোভিয়েত আমলের ইল-৬২এম জেট ব্যবহার করেন তিনি। একই বছরের জুনে সিঙ্গাপুরে ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের জন্য কিম চীনের একটি বিশেষ বিমানে যাত্রা করেছিলেন।
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: