শনিবার, ৮ই নভেম্বর ২০২৫, ২৪শে কার্তিক ১৪৩২


মার্কিন শুল্কের প্রভাবে ভয়াবহ ধসের মুখে ভারতের চিংড়ি শিল্প


প্রকাশিত:
৮ নভেম্বর ২০২৫ ১৮:৫৭

আপডেট:
৮ নভেম্বর ২০২৫ ২০:৪৭

ফাইল ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের অত্যাধিক শুল্কের কারণে ধসের মুখে পড়েছে ভারতের চিংড়ি রপ্তানি শিল্প। এছাড়া প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় ভারতীয় চিংড়ির দাম বেশি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন দেশটির চিংড়ি চাষীরা।

তাদের একজন পশ্চিমবঙ্গের নন্দিগ্রামের বুদ্ধদেব প্রধান। এই চাষী মাত্র এক সপ্তাহ আগে তার উৎপাদিত চিংড়ি বিক্রি করেছেন। এরমধ্যে আবার উৎপাদন শুরু করেছেন তিনি। একই জায়গায় বছরে দুইবার চিংড়ি চাষ করলে রোগবালাইসহ অন্যান্য ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তিনি এ ঝুঁকি নিয়েছেন। কারণ প্রথম দফার চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতি যেন পুষিয়ে নেওয়া যায় তাই দ্বিতীয়বার চাষ করছেন বুদ্ধদেব

তিনি বলেন, “চিংড়ির দরপতন আমাকে উদ্বিগ্ন করে করে তুলেছে। চেষ্টা করছি যে ৩ লাখ রুপি বিনিয়োগ করেছি সেটি তুলে আনতে পারি কি না।”

ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ চিংড়ি উৎপাদনকারী দেশ। তাদের আগে রয়েছে শুধুমাত্র ইকুয়েডর। গত অর্থবছরের শেষে মার্চে বিশ্বব্যাপী ৫ বিলিয়ন ডলারের হিমায়িত চিংড়ি রপ্তানি করেছিল ভারত। যার ৪৮ শতাংশই ছিল যুক্তরাষ্ট্রে।

সর্বশেষ অর্থবছরের তথ্য অনুযায়ী ভারত ১ দশমিক ১ ট্রিলিয়ন টন চিংড়ি রপ্তানি করেছিল। যারমধ্যে বেশিরভাগ ছিল ভান্নামি বা সাদাপায়ের চিংড়ি। এটি বছরে দুইবার উৎপাদন করা যায়যার প্রথমটি ফেব্রুয়ারি থেকে জুন। দ্বিতীয়টি জুলাই থেকে অক্টোবর। কিন্তু রোগবালাইয়ের ভয়ে চাষীরা সাধারণত দ্বিতীয় চক্রে চাষ করেন না।

চিংড়ি চাষ হয়ে থাকে পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ু, গোয়া, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক এবং কেরেলায়। এই খাতে প্রায় ১ কোটি মানুষ কাজ করেন।

গত মে মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথম ভারতীয় চিংড়ির ওপর শুল্ক ঘোষণা করেন। ওই সময় দেশটিতে চিংড়ির দাম প্রতি কেজি ৩০০ রুপি থেকে কমে ২৩০ রুপিতে চলে আসে। যদিও এক কেজি চিংড়ি উৎপাদনে খরচ হয় ২৭৫ রুপি।

বর্তমানে ভারতীয় চিংড়ির ওপর যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক রয়েছে ৫৮ শতাংশ। চাষিদের শঙ্কা এমনটা চলতে থাকলে ভারত যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হারাবে।

চিংড়ির দাম কমায় অনেকে চাষি বীজ কেনা বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে করে অনেক হ্যাচারি ইতিমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সর্বভারতীয় চিংড়ি হ্যাচারি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি কুমার ইয়েল্লানেকি

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক এক্ষেত্রে প্রভাব রেখেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “নিঃসন্দেহে, যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক হ্যাচারির ওপর বড় প্রভাব রাখা শুরু করেছে। এতে করে অনেক হ্যাচারি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে।”

এসব হ্যাচারি বছরে ৮ হাজার কোটি বীজ পোনা উৎপন্ন করে। কিন্তু চাহিদা না থাকায় গত তিন-চার মাসে ৮০০ কোটি বীজ ফেলে দিতে হয়েছেচিংড়ির একেকটি বীজ মাত্র তিন থেকে চারদিন বাঁচে।

যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হয় তাহলে হ্যাচারি মালিকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে সতর্কতা দিয়েছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্র এখন মূলত ইকুয়েডর থেকে চিংড়ি কিনছে। মার্কিনিদের জন্য ইকুয়েডর থেকে চিংড়ি নেওয়া সহজ এবং সাশ্রয়ী।

সূত্র: আলজাজিরা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top