যৌতুক না পেয়ে গরম তেল ঢেলে স্ত্রীকে খুন, স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
 প্রকাশিত: 
 ১৩ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:২৩
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৭
                                দুই বছর আগে রাজধানীর কদমতলী থানাধীন খালপার এলাকায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর শরীরে গরম সয়াবিন তেল ঢেলে হত্যার দায়ে স্বামী মো. মিজান সরদারকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড করা হয়।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সকালে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এদিন রায় ঘোষণার আগে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মীম আক্তার রুপার সঙ্গে প্রায় ১০ বছর আগে মো. মিজান সরদারের বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুটি সন্তান রয়েছে। তারা রাজধানীর কদমতলী থানার খালপাড়ের ইসলাম টাওয়ার নামে একটি বহুতল ভবনের ৭ম তলায় বসবাস করতেন। যৌতুকের দাবিতে ভুক্তভোগী মীম আক্তারকে প্রায়ই নির্যাতন করতেন মিজান সরদার। এর আগে মিজান তার শ্বশুরের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি এবং ৭ লাখ টাকা মূল্যের একটি দোকান যৌতুক হিসেবে আদায় করেন।
২০২৩ সালের ৬ মে রাত ১০টার দিকে আসামি মিজান সরদার আবার ভুক্তভোগী রুপার কাছে যৌতুকের টাকা দাবি করলে, তিনি প্রত্যাখ্যান করেন। এই কারণে মিজান তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেন। এরপর রাত প্রায় ৩টার দিকে যখন ভুক্তভোগী এবং তার সন্তানরা ঘুমাচ্ছিল। এসময় মিজান সরদার একটি ফ্রাইং প্যানে গরম সয়াবিন তেল তৈরি করে তার স্ত্রীর ওপর ঢেলে দেন। এতে গুরুতর দগ্ধ হয়ে ভুক্তভোগীর চিৎকার শোনে বাসার কেয়ারটেকার এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করেন। এবং তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যান। সেখানে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় ৯ মে ভুক্তভোগী রুপার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২৫ মে ভুক্তভোগী ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
মৃত্যুর আগে, ভুক্তভোগী ১৪ মে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দি দেন। একই আদালতে আসামি মিজান সরদার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।
তদন্ত শেষে পুলিশের উপ-পরিদর্শক সরোজিৎ কুমার ঘোষ একই বছরের ৩১ জুলাই নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ এর ১১ (ক) এবং ৪ (২) (খ) ধারার অধীনে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেন।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: