২৩ বছর পর রায়, গর্ভবতী স্ত্রীকে হত্যায় স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
 প্রকাশিত: 
 ৩০ জুন ২০২৫ ১২:৪৭
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১১:১০
                                বরগুনায় এক গর্ভবতী নারীকে হত্যার দায়ে তার স্বামীর মৃত্যদণ্ডের সাজা দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে আসামিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩০ জুন) বরগুনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ও জেলা জজ বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এ রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত মো. কামাল হোসেন (৪৫) বরগুনার বামনা উপজেলার উত্তর কাকচিড়া গ্রামের আব্দুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন আদালতে বিশেষ পাবলিক প্রসিকিউটর রনজুয়ারা সিপু।
আদালত সূতে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালে পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার মোসলেম উদ্দিনের মেয়ে জাহানারা বেগমের সঙ্গে কামালের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবন ভোলোই চলছিল। তাদের ঘরকে আলোকিত করে জন্ম নেয় একটি মেয়ে সন্তান। ২০০৩ সালে ফের গর্ভবতী হন জাহানারা।
ওই বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর সকালে কামাল ও তার পরিবারের লোকজন জাহানারাকে বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুক এনে দিতে বলেন। এতে অপারগতা প্রকাশ করেন এ গর্ভবতী। ওই সময় কামাল উত্তেজিত হয়ে জাহানারা বেগমের তলপেটে লাথি মারে ও পিটিয়ে জখম করে। মুমূর্ষু অবস্থায় জাহানারাকে বামনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় জাহানারার বাবা বাদী হয়ে ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলার বাদী মোসলেম উদ্দিনে বলেন, ‘জামাতা কামাল ২০০৩ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে ফোন দিয়ে আমাকে জানায় জাহানারা খুব অসুস্থ। যে কোনো সময় জাহানারা মারা যেতে পারে। আমি পরদিন তাদের বাড়ি গিয়ে দেখি মেয়ের লাশ বাড়ির উঠানে। আমার মেয়ের শরীরে অনেকগুলো আঘাতের চিহ্ন চিল। বামনা থানায় মামলা করতে গেলে তারা একটি অপমৃত্যু মামলা করে। পরে আমি তথ্য নিয়ে ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে মামলা করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘মামলার পর ট্রাইব্যুনাল ম্যাজিস্ট্রেট মো. হুমায়ূন কবির তদন্তের নির্দেশ দেন। ২০০৪ সালের ২৭ জানুয়ারি কামালের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।’
আইনজীবী রনজুয়ারা সিপু বলেন, ‘বাদী ৯ জনকে আসামি করে মামলা দেয়। তদন্তে আটজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। রায় দিতে দেরি হওয়ার জন্য এটিকে দায়ী করেন বিচারক। ৯ জনের স্বাক্ষ্য অনেক আগে সমাপ্ত হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষ সচেতন হলে ২৩ বছর অতিবাহিত হতো না। বাদী এ রায়ে সন্তুষ্ট হয়েছেন। আসামির আইনজীবী তোফাজ্জেল হোসেনও মারা গেছেন।’
ডিএম /সীমা

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: