মঙ্গলবার, ৮ই জুলাই ২০২৫, ২৪শে আষাঢ় ১৪৩২


মালয়েশিয়ায় ‘জঙ্গি সন্দেহে’ গ্রেপ্তার ৩৫ প্রবাসীর বিরুদ্ধে ঢাকায় মামলা


প্রকাশিত:
৮ জুলাই ২০২৫ ১৪:১৬

আপডেট:
৮ জুলাই ২০২৫ ১৯:৩০

ছবি সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া ৩৫ প্রবাসীর বিরুদ্ধে ঢাকার বিমানবন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক মো. আব্দুল বাতেন বাদী হয়ে গত ৫ জুলাই (শনিবার) এ মামলা করেন।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) আদালতে বিমানবন্দরে থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক বখতিয়ার খালেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, গত রোববার (৬ জুলাই) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুর রহমান মামলার এজাহার গ্রহণ করে আগামী ১১ আগস্ট প্রতিবেদন দাখিলের জন্য দিন ধার্য করেছেন।

গত শুক্রবার জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়া থেকে ফেরত পাঠানো তিনজনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। তিনজন হলেন- নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম এবং জাহেদ আহমেদ। ওই দিনই দেশে আসার পর তাদের হেফাজতে নেন পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের (এটিইউ) সদস্যরা। এরপর ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে আটক আবেদন করা হয়। পরে আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

কারাগারে আটক থাকা তিনজনকে বিমানবন্দর থানার এই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের পরিদর্শক কে. এম. তারিকুল ইসলাম। আজ এ বিষয়ে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।

মামলার আসামিরা হলেন- মো. নজরুল ইসলাম সোহাগ, মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম, জাহেদ আহমেদ, পারভেজ মাহমুদ পাবেল, শরীফ উদ্দিন, রহমান মোহাম্মদ হাবিবুর, সালেহ আহমেদ, মো. আব্দুস সহিদ মিয়া, মো. মতিন, ফয়সাল আলম, রায়হান আহমেদ, মো. রাজ, মো. মনসুরুল হক, ইমন মহিদুজ্জামান, আকরাম মো. ওয়াসিম, শেখ সালাম, মোহাম্মদ রাজ মাহমুদ মন্ডল, আশরাফুল ইসলাম, মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দিন, মাহফুজ, রবিউল হাসান, মোহাম্মদ সোহেল রানা, মো. আফসার ভূইয়া, হোসাইন সাহেদ, মো. আশিকুর বিশ্বাস, মো. শাওন শেখ, ইয়াসিন আলী, মোহাম্মদ পারভেজ মোশারফ, মহিউদ্দিন, সাব্বির হোসাইন, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মো. রফিকুল ইসলাম, মো. শাকিল মিয়া, আসাদুজ্জামান হোসাইন এবং মো. সোহাগ রানা

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে আন্তর্জাতিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষিত সন্ত্রাসী সংগঠনের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। তারা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করা সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। তারা মালয়েশিয়ার আইপি ঠিকানা ব্যবহার করে বাংলাদেশি কতিপয় নাগরিকদের পরিচালিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সদস্য সংগ্রহ এবং প্রচার-প্ররোচণা চালিয়ে আসছিল। আসামিরা মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সে দেশের জননিরাপত্তা, জনসাধারণের আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে। পরে গত ২৮ এপ্রিল থেকে ২১ জুন পর্যন্ত মালয়েশিয়ান পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করে। আসামিরা সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হয়ে আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী স্বেচ্ছায় দেওয়া অনুদানের মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ করেন। পরে সংগৃহীত অর্থ ই-ওয়ালেট এবং আন্তর্জাতিক অর্থ স্থানান্তর পরিষেবার মাধ্যমে অন্যান্য দেশে অর্থ প্রেরণ করে। সংগঠনটির সদস্য হিসেবে বছরে ৫০০ রিঙ্গিত চাঁদা প্রদান করতো।

অভিযোগে আরো বলা হয়েছে, গ্রেপ্তার আসামিদের মালয়েশিয়ান পুলিশ পর্যায়ক্রমে নিজ দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে। গোয়েন্দা তথ্য বলছে, আসামিরা পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশে এসে সন্ত্রাসবাদে জড়িত হয়ে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করে দেশের অখণ্ডতা, সংহতি, স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, জননিরাপত্তা, জনসাধারণের কোন অংশে আতঙ্ক সৃষ্টি উদ্দেশ্যে কার্যক্রম পরিচালনা করে যেকোনো সময় বিভিন্ন স্থানে জঙ্গি হামলার সম্ভাবনা রয়েছে।

গত ২৭ জুন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতুক সেরি সাইফুদ্দিন নাসুতিওন ইসমাইল উগ্র জঙ্গি আন্দোলনের সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে মালয়েশিয়ায় ৩৬ বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তারের তথ্য দেন। মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পুলিশের পরিকল্পনা অনুযায়ী সেলাঙ্গর ও জোহর অঞ্চলে গত ২৪ এপ্রিল থেকে তিন ধাপে এ অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তার ৩৬ বাংলাদেশির মধ্যে পাঁচজনকে মালয়েশিয়ার দণ্ডবিধির ৬এ অনুচ্ছেদের আওতায় অভিযুক্ত করা হয়েছে। সন্ত্রাসবাদ–সংশ্লিষ্ট অপরাধের জন্য এ আইন প্রযোজ্য। গ্রেপ্তার পাঁচজনকে শাহ আলম ও জোহর বাহরুর দায়রা আদালতে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

এদিকে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চলমান আইনি প্রক্রিয়া নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ।

ডিএস /সীমা



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top