সোমবার, ১৮ই আগস্ট ২০২৫, ৩রা ভাদ্র ১৪৩২


উপজেলা হাসপাতালে সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম সরবরাহের নির্দেশ


প্রকাশিত:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ২১:২৮

আপডেট:
১৮ আগস্ট ২০২৫ ২৩:২৩

ছবি সংগৃহীত

সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৮ আগস্ট) জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরন্নবী।

এর আগে রোববার (১৭ আগস্ট) সাপের কামড়ের অ্যান্টিভেনম দেশের সব উপজেলা পর্যায়ের সরকারি হাসপাতালে সরবরাহের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট মীর এ কে এম নুরুন্নবী। বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে এ রিট করা হয়।

পত্রিকায় প্রকাশিত একটি পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়, সারাদেশে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ১ জুলাই পর্যন্ত সাপের কামড়ে ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এই পাঁচ মাসে সাপের দংশনের শিকার হয়েছেন ৬১০ জন।

রাজধানীর মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদফতরে রাসেলস ভাইপার নিয়ে জনসচেতনতা বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। এসব তথ্য উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন।

তিনি জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত সাপের দংশনের শিকার হয়ে মোট ৪১৬ জন রোগী ভর্তি হন। এদের মধ্যে বিষধর সাপের কামড় ৯১টি। ১৮টি রাসেলস ভাইপারের (চন্দ্রবোড়া) কামড়। এদের মধ্যে মোট ১১ জন রোগী মারা যান, যার মধ্যে চন্দ্রবোড়ার দংশনের কারণে মারা যান পাঁচজন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সাম্প্রতিক সময়ে রাসেলস ভাইপার নিয়ে সারাদেশে বিভিন্ন তত্ত্ব, তথ্য, গুজব, কিছুটা ভয় ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। বাংলাদেশে সর্পদংশন নীতিগতভাবে একটি স্বীকৃত গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত।

২০২২ সালে পরিচালিত জাতীয় জরিপ অনুযায়ী, বাংলাদেশে চার লাখের বেশি মানুষ সাপের দংশনের শিকার হন। যার মধ্যে দুঃখজনকভাবে প্রায় সাড়ে সাত হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। সাপ বিষয়ে অপর্যাপ্ত তথ্য থাকা সত্ত্বেও প্রধান বিষধর সাপের মধ্যে গোখরা, ক্রেইট (কালাচ্), চন্দ্রবোড়া বা রাসেলস ভাইপার ও সবুজ সাপ অন্যতম। কিছু কিছু সামুদ্রিক সাপের দংশনের তথ্যও আছে।

চন্দ্রবোড়া ভাইপারিড গ্রুপের একটি বিষাক্ত সাপ। বাংলাদেশে চন্দ্রবোড়ার অস্তিত্ব এবং এর দংশনে মৃত্যুর ইতিহাস ১৯২০ সালেই স্বীকৃত আছে। ২০১৩ সালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চন্দ্রবোড়া অথবা উলুবোড়া সাপের দংশনের প্রথম রিপোর্ট হিসেবে লিপিবদ্ধ আছে। প্রাথমিকভাবে রাজশাহী ও বরেন্দ্র অঞ্চলে এর প্রভাব বেশি দেখা গেলেও পরে ধীরে ধীরে চন্দ্রবোড়ার বিস্তৃতি ২৭টি জেলায় ছড়িয়েছে।

ডা. রোবেদ আমিন জানান, বিষধর সর্পদংশনের স্বীকৃত চিকিৎসা হচ্ছে অ্যান্টিভেনম। দেশের প্রধান বিষধর সাপের বিষ সংগ্রহ করে তা ঘোড়ার শরীরে প্রয়োগ করা, ঘোড়ার রক্তের সিরাম থেকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয়। বাংলাদেশে বর্তমানে অ্যান্টিভেনম তৈরি করা হয় না। ভারতে তৈরি (৪টি প্রধান বিষধর সাপের বিরুদ্ধে প্রস্তুত) অ্যান্টিভেনম সংগ্রহ করে অসংক্রামক ব্যধি কর্মসূচি বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে সরবারহ করা হয়ে থাকে।

অ্যান্টিভেনম ক্রয়, বিতরণ, সংরক্ষণ, ব্যবহার, ব্যবহার পরবর্তী প্রভাব (নজরদারি) দেখার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কমসূচি না থাকা সত্ত্বেও অ্যান্টিভেনম প্রয়োগের সুফল লক্ষণীয়।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:


রিসোর্সফুল পল্টন সিটি (১১ তলা) ৫১-৫১/এ, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০।
মোবাইল: ০১৭১১-৯৫০৫৬২, ০১৯১২-১৬৩৮২২
ইমেইল : [email protected], [email protected]
সম্পাদক: মো. জেহাদ হোসেন চৌধুরী

রংধনু মিডিয়া লিমিটেড এর একটি প্রতিষ্ঠান।

Developed with by
Top