চানখারপুলে ছয় হত্যা : তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য শেষ, জেরা ২৩ নভেম্বর
প্রকাশিত:
১৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৫:০৭
আপডেট:
১৯ নভেম্বর ২০২৫ ১৬:৪৮
জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনের বিরুদ্ধে মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলামের তদন্ত শেষ হয়েছে। জেরার জন্য আগামী রোববার (২৩ নভেম্বর) দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বুধবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের বিচারিক প্যানেল এ দিন ধার্য করেন।
এদিন বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে ২৬ নম্বর সাক্ষী হিসেবে টানা তৃতীয় দিনের মতো সাক্ষ্য দেন তদন্ত কর্মকর্তা অ্যাডিশনাল এসপি মনিরুল। জবানবন্দিতে গত বছরের ৫ আগস্ট চানখারপুলে ছয়জনকে হত্যার পেছনে নিজের করা তদন্তের আদ্যোপান্ত উপস্থাপন করেন তিনি। জব্দ করা সব তথ্যপ্রমাণ নিয়েও বর্ণনা দেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ ও সহিদুল ইসলাম।
এর আগে, ১৩ নভেম্বর দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত জবানবন্দি দেন মনিরুল। সেদিনও তদন্তকালে কখন-কোথায় কী জব্দ করেছিলেন, সেসব বলেন। ১২ নভেম্বর আংশিক সাক্ষ্য দেন এই তদন্ত কর্মকর্তা। সবমিলিয়ে ১৭ কার্যদিবসে এ মামলায় তদন্ত কর্মকর্তাসহ মোট সাক্ষ্য দিয়েছেন ২৬ জন। জেরা শেষ হলেই শুরু হবে যুক্তিতর্ক।
এর আগে, ১২ নভেম্বর ২৫ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন কামরুল হাসান। তিনি জব্দতালিকার সাক্ষী। গত ৯ নভেম্বর সাক্ষ্য দেন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা। জবানবন্দি শেষে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ফজলে নূর তাপসের দুটি ফোনালাপ বাজিয়ে শোনানো হয় ট্রাইব্যুনালে। একই দিন ২৩ নম্বর সাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন মাসুদ রানা।
প্রসিকিউশন জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান চলাকালে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ছাত্র-জনতার ওপর যে মারণাস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, এর ফলে ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় ছয়জন নিহত হন। এছাড়া তদন্তকালে তদন্ত সংস্থা যে প্রতিবেদন দিয়েছিল, এতে দেখা গেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রায় ৫০-এর বেশি সদস্য নিয়োজিত ছিলেন। তাদের বেশিরভাগই গুলিবর্ষণ করেছিলেন। এর মধ্যে এ মামলায় মাত্র তিনজনকে আসামি করা হয়েছে। কারণ তারা লেথাল ওয়েপন ব্যবহার করেছেন।
এ মামলার গ্রেপ্তার চার আসামি হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম।
পলাতক আসামিরা হলেন- সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমান, ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।
গত ১৪ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন ট্রাইব্যুনাল।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনার পাশাপাশি শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক নিহত হন।

আপনার মূল্যবান মতামত দিন: