চার লেন সড়কের কাজের মান নিয়ে ওবায়দুল কাদেরের ক্ষোভ
 প্রকাশিত: 
 ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ২১:৫১
 আপডেট:
 ৪ নভেম্বর ২০২৫ ০৫:১৯
                                চার লেন সড়ক তৈরিতে কাজের মান ভালো না হওয়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সাউথ এশিয়া সাবরিজিওনাল ইকোনমিক কো-অপারেশন (সাসেক) চুক্তি সই অনুষ্ঠানে তিনি এ ক্ষোভ জানান। ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ওয়ার্ক প্যাকেজ-৩ এর চুক্তি সই উপলক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দুই বছর পরে সংস্কার করতে হচ্ছে, তাহলে এই চার লেন সড়ক করে লাভ কী? এজন্য আবার আলাদা প্রকল্প নিতে হচ্ছে। নবীনগর-চন্দ্রা চার লেন সড়ক এক বছর না যেতেই ছেঁড়া কাঁথার মতো জোড়াতালি অবস্থা। এই চার লেন দিয়ে কী হবে?
সড়কের কাজের মান নিয়ে ক্ষোভ জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের কাজের মতো কাজ করতে হবে। কোয়ালিটির বিষয়ে প্রথমে নজর দিতে হবে। আমাদের রাস্তাগুলোকে রক্ষা করতে হবে। ২৮টি লোড কন্ট্রোল স্টেশন হওয়ার কথা। কিন্তু এটা কবে হবে কেউ জানে না। আমরা রাস্তাগুলোকে রক্ষা করতে পারছি না। কিছুদিন পরেই রাস্তা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। রাস্তা রক্ষা করতে যা যা দরকার তা করতে হবে। ২৮টি এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন স্থাপন করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা-সিলেট চার লেন সড়কে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে। এর মধ্যে এডিবি ঋণ দিচ্ছে ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা। এডিবি ও সরকার মিলে কাজটা করছি। ভালো ঠিকাদার এই কাজ পেয়েছে, সময়মতো শেষ করবে বলে আশা করি।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী এলে তাকে প্রথমে বলি, আপনার প্রধান কাজ সড়ক রক্ষা করতে হবে। এক্সেল লোড কন্ট্রোল মেশিন স্থাপন করতে হবে। নবীনগর-চন্দ্রার কী অবস্থা? একেবারে বেহাল অবস্থা। আমি যা দেখেছি তাই বলছি। এসব নিয়ে দরকার হয় সেমিনার করেন। আমরা যদি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে চাই তবে স্মার্ট রাস্তা দরকার। নতুন সড়ক দরকার নেই, বিদ্যমান সড়ক স্মার্ট করতে হবে। কোয়ালিটি বজায় রেখে সড়কের চলমান প্রকল্পগুলো শেষ করব। এই মুহূর্তে সড়কের নতুন প্রকল্প দরকার নেই।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের গুরুত্ব তুলে ধরে ওবায়দুল কাদের বলেন, অনেক চেষ্টার সবুজ ফসল ঢাকা-সিলেট ছয় লেন। এজন্য এডিবিকে বারবার ঋণ দিতে অনুরোধ করেছিলাম। সিলেট আমাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কানেকটিভিটি। কিন্তু আমরা শুরু করতে পারিনি। মাঝে এমন একটি বাধা এসেছিল। এই সড়ক প্রথমে চার লেন করা উচিত ছিল। জানি না কেন এটা দুই লেন হলো। প্রথমে এটা আমাদের ভুল ছিল। সাইফুর রহমান সাহেব (সাবেক অর্থমন্ত্রী) কী হিসেবে এটা করেছিলেন জানি না। সিলেটের মানুষ আজ সব থেকে বেশি খুশি হবে কারণ ছয় লেনের কাজ হচ্ছে।
সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প ডিএস-৫ এর আওতায় সরাইল ইন্টারসেকশন থেকে বুধন্তী বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত কাজের চুক্তি সই হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক এবং জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ‘সাসেক ঢাকা-সিলেট করিডোর সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্পের উব্লিউপি-০৩ প্যাকেজের লট নং ডিএস-০৬ এর নির্মাণকাজ যৌথ উদ্যোগে চীন ও বাংলাদেশের তিনটি কোম্পানি বাস্তবায়ন করবে। এর মধ্যে চীনের কোম্পানি চেসিইটিস ও এসএলজিসি এবং বাংলাদেশের পিডিএল। এতে খরচ ধরা হয়েছে এক হাজার ৮৫ কোটি ৩৪ লাখ ৭৬ হাজার ৮৩০ টাকা।
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রিন্সিপাল রওশন আরা মান্নান, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী, বাংলাদেশে নিযুক্ত এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন জিনটিং, প্রকল্পের পরিচালক এ কে মোহাম্মদ ফজুলল করিম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক উপস্থিত ছিলেন।

                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: