ফারদিন হত্যায় এখনও কোনো ক্লু পায়নি ডিবি : হারুন
 প্রকাশিত: 
 ১২ নভেম্বর ২০২২ ২১:৪১
 আপডেট:
 ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৬:১১
 
                                বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র ফারদিন নূর পরশ (২৪) ঢাকার কোনো এক জায়গায় খুন হতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তবে এখন পর্যন্ত এ ঘটনার কোনো ক্লু পায়নি ডিবি।
আজ শনিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
ডিবি প্রধান বলেন, ফারদিনের মোবাইলের ডাটা এনালাইসিস ও বিভিন্ন জায়গায় সে যার সঙ্গে কথা বলেছে সবকিছু মিলিয়ে আমার কাছে মনে হচ্ছে ঢাকা শহরের কোনো এক জায়গায় খুন হতে পারেন। মোবাইলের লোকেশনে আমরা নারায়ণগঞ্জও পেয়েছি। সবকিছু মিলিয়ে তদন্তে এখনও হত্যার বিষয়ে কোনো ক্লু পাইনি।
মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নিহতের বাবা প্রথমে একটি জিডি করেছিলেন পরে তিনি মামলা করেন। মামলায় এক নম্বর আসামি বুশরাকে গ্রেপ্তার করেছি। পাশাপাশি মামলার এফআইআরে তার নাম আসায় আমরা মনে করছি না যে সে-ই দায়ী। সে রিমান্ডে এসেছে, তার সঙ্গে আমরা কথা বলছি।
তিনি আরও বলেন, ঢাকা শহরে ফারদিন যেখানে যেখানে গিয়েছিলেন আমরা বিভিন্ন টেকনিক্যাল মাধ্যম ব্যবহার করে খুঁজে বের করেছি। তবে কোনো নিশ্চিত তথ্য বের করতে পারিনি বলে এখনই কিছু বলছি না। তবে আমাদের কাজ চলছে এবং আমরা মনে করি, ডিবির টিম রাত-দিন কাজ করে যাচ্ছে।
মাদকের বিষয়ে খুন হয়েছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, আমরা এই কথা এখনই বলছি না যে সে মাদকের কারণে খুন হয়েছে। অথবা এক নম্বর আসামি যাকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি সেই খুন করেছে, এটাও আমার বলছি না। পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন বিষয় বিচার-বিশ্লেষণ করছি।
ডেমরার চরপাড়া বস্তিতে ডিবির অভিযান চলছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন অর রশীদ বলেন, তদন্তের স্বার্থে শুধু চরপাড়া বস্তি কেন আমরা নারায়ণগঞ্জ গিয়েছি। ডেমরা ও খিলগাঁওসহ সব জায়গায় ডিবির টিম কাজ করছে।
তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর ৭ নভেম্বর বিকেলে নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ-পুলিশ। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে।
৪ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হওয়ার আগে রামপুরায় বুশরাকে বাসায় নামিয়ে দেন ফারদিন। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।
নারায়ণগঞ্জ সদর জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) শেখ ফরহাদ বলেছিলেন, ময়নাতদন্তে আমরা দেখতে পেয়েছি, তার মাথায় এবং বুকে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। তবে সেই আঘাত কোনো ধারালো অস্ত্রের নয়। আঘাতের চিহ্ন দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি হত্যাকাণ্ড। পুলিশের চাহিদা ও অধিকতর তথ্যের জন্য তথ্য-উপাত্ত ও আলামত মহাখালী ভিসিআরে পাঠানো হয়েছে। সেখান থেকে প্রতিবেদন পেলে পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যাবে তাকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনায় বুধবার (৯ নভেম্বর) দিবাগত রাতে ফারদিনের বাবা নূর উদ্দিন রানা তার বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরাকে এজাহারনামীয় আসামি ও আরও কয়েকজনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করেন। মামলার অভিযোগে তিনি বলেন, বুশরার ইন্ধনে পরশকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া পরশ নিখোঁজ হওয়ার দিন বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত বুশরার সঙ্গে ছিল।
এরপর বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর রামপুরা এলাকার একটি বাসা থেকে আমাতুল্লাহ বুশরাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই দিনই তাকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রামপুরা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গোলাম মাওলা। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেট্রোপলিট ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসানের আদালত তার পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

 
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                     
                                                    
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: